বেঙ্গালুরু: ঘূর্ণি পিচে শ্রেয়স আইয়ারের ৯২ রানের ইনিংস আর বুমরাহ-সামি জুটির দাপটে বেঙ্গালুরুতে গোলাপি বল টেস্টের প্রথম দিনের শেষে চালকের আসনে ভারত। প্রথম দিনই শেষ হয়ে গেল ভারতের প্রথম ইনিংস। টিম ইন্ডিয়ার টপ অর্ডার সেই অর্থে রান তুলতে না পারলেও, আশার আলো বাঁচিয়ে রেখেছিলেন ছয় নম্বরে নামা শ্রেয়স আইয়ার। একের পর এক উইকেট হারাতে থাকা ভারতকে ম্যাচে ধরে রেখেছিলেন শ্রেয়স। তবে কেরিয়ারের তৃতীয় টেস্ট খেলতে নেমে সেঞ্চুরিটা হাতছাড়া হয়ে গেল শ্রেয়সের। ৯২ রানের ইনিংস তিনি সাজিয়েছিলেন ১০টি চার ও ৪টি ছয় দিয়ে।
এম চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে হাউসফুল গ্যালারির সামনে দিন-রাতের টেস্ট খেলতে নেমেছিল রোহিত শর্মার ভারত। টসে জিতে শুরুতে ব্যাটিং বেছে নিয়েছিলেন ভারত অধিনায়ক। আজ বেঙ্গালুরুতে দিমুখ করুণারত্নের শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে মাঠে নেমেই রেকর্ড গড়েছেন হিটম্যান। নবম ভারতীয় ক্রিকেটার হিসেবে কেরিয়ারের ৪০০তম আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলে ফেললেন রোহিত। তবে এ দিন ব্যাট হাতে রোহিতের প্রাপ্তি মাত্র ১৫ রান। শুরুতেই রোহিতের সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝিতে রান আউট হন ভারতীয় ওপেনার মায়াঙ্ক আগরওয়াল। যদিও পরে দেখা যায় সেই বলটি নো বল ছিল। মাত্র ৪ রানের মাথায় মাঠ ছেড়ে বেরিয়ে যান মায়াঙ্ক। এরপর রোহিত আউট হলে আসেন হনুমা বিহারি। দশ ওভারের মধ্যে ভারতের স্কোর গিয়ে দাঁড়ায় ২৯-২। চার নম্বরে ক্রিজে আসেন কোহলি। ২৯-২ থেকে কোহলি-বিহারি জুটি দলকে এগিয়ে নিয়ে যেতে থাকেন। প্রবীণ জয়বিক্রমা এই জুটিকে জমাট হতে দেননি। ৩১ রানের মাথায় বিহারি ফেরেন সাজঘরে। এর পর পন্থের সঙ্গে জুটি বাঁধার চেষ্টা করেন কোহলি। কিন্তু তাতেও সফল হতে পারেননি ভিকে। বেঙ্গালুরু কোহলির কাছে সেকেন্ড হোম। কিন্তু সেই ঘরের মাঠেও ফের বড় রান করতে ব্যর্থ হলেন বিরাট। ২৩ রানের মাথায় ডি সিলভার বলে এলবিডব্লিউ হয়ে মাঠ ছাড়েন কোহলি।
এরপর ঋষভ পন্থের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ ৪০ রানের পার্টনারশিপ গড়েন শ্রেয়স। নিজের আক্রমণাত্মক ভঙ্গিতে ব্যাট করতে থাকেন পন্থ। কিন্তু বড় রানের ইনিংস গড়তে পারলেন না ভারতের তরুণ উইকেটকিপার-ব্যাটার। ৩৯ রান করে মাঠ ছাড়েন পন্থ। এর পর শ্রেয়স লড়াই চালিয়ে যান। প্রথম টেস্টে ব্যাটে-বলে বাজিমাত করা জাডেজা আজ ব্যাট হাতে কোনও জাদু দেখাতে পারেননি। ৪ রানের মাথায় লাসিথ এম্বুলডেনিয়াকে উইকেট দিয়ে বসেন জাডেজা। এরপর অশ্বিন-অক্ষর-সামি-বুমরার সঙ্গে ছোট ছোট হলেও গুরুত্বপূর্ণ পার্টনারশিপ গড়েন শ্রেয়স। তবে শেষ অবধি সেঞ্চুরিটা হাতছাড়া করেই ড্রেসিংরুমে ফিরে যান শ্রেয়স। তবে তাঁর ৯২ রানের দুর্ধর্ষ ইনিংসে ভর করেই শেষ মেশ ২৫২ রানে গিয়ে থামে টিম ইন্ডিয়া।
প্রথম দিনের তৃতীয় সেশনের শুরু থেকেই শুরু হয় শ্রীলঙ্কার প্রথম ইনিংস। তবে শুরুতেই ধাক্কা খান করুণারত্নেরা। বুমরা-অশ্বিনদের দাপটে ব্যাটিং বিপর্যয় নেমে আসে লঙ্কান শিবিরে। কিছুটা লড়াই করে যান অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউস। ৪৩ রান করে বুমরার শিকার হন তিনি। দিনের শেষে শ্রীলঙ্কার স্কোর ৬ উইকেটে ৮৬। এ দিনের ম্যাচে ৭ ওভার বল করে ৩টি মেডেনসহ ১৫ রান দিয়ে ৩টি উইকেট নিয়েছেন জশপ্রীত বুমরা। ২টি উইকেট পেয়েছেন মহম্মদ সামি ও একটি উইকেট পেয়েছেন অক্ষর প্যাটেল।
সংক্ষিপ্ত স্কোর: ভারত ২৫২ (শ্রেয়স ৯২, ঋষভ ৩৯; এম্বুলডেনিয়া ৩-৯৪, জয়বিক্রমা ৩-৮১) শ্রীলঙ্কা ৮৬-৬ (ম্যাথিউস ৪৩, বুমরা ৩-১৫)