নিজস্ব প্রতিবেদন, কাটোয়া: প্রবল শীতে কাঁপছে গোটা বাংলা। পারদ যখন ৮-৯ ডিগ্রির আশপাশে ঘোরাঘুরি করছে, ঘন কুয়াশায় মোড়া চারদিক, তখন ভাগীরথীর কনকনে ঠান্ডা জলে সাঁতারু সায়নী দাস প্রশিক্ষণের জন্য নদের একপ্রান্ত থেকে আর এক প্রান্ত দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন। প্রতিদিন তিনি ৩ থেকে ৪ ঘণ্টা ভাগীরথীতে কাটছে তাঁর।
চলতি বছরেই নিউজিল্যান্ডের কুক স্ট্রেইট ও আয়ারল্যান্ডের নর্থ চ্যানেলে নামতে চলেছেন সায়নী দাস। তাই কনকনে ঠান্ডাতেও তাঁর ভ্রূক্ষেপ নেই, বরং আরও বেশি করে এই পরিবেশটাকেই মানিয়ে নিতে বেশ কয়েক ঘণ্টা অনুশীলন করে চলেছেন তিনি। তাঁকে সহযোগিতা করে চলেছেন বাবা রাধেশ্যাম দাস। সপ্তসিন্ধু জয়ের লক্ষ্যে কালনা শহরের বারুইপাড়ার বাসিন্দা সাঁতারু সায়নী দাস এর আগে ইংলিশ চ্যানেলের পাশাপাশি ক্যাটলিনা ও মার্কিন মুলুকের মলোকাই চ্যানেল জয় করে বিদেশের মাটিতে তেরঙা পতাকা উড়িয়েছিলেন।
সেই লক্ষ্যেই তিনি আবার আগামী ৩১ মার্চ থেকে ৫ এপ্রিলের মধ্যে নিউজিল্যান্ডের কুক স্ট্রেইটে নামতে চলেছেন। এই সফর শেষ হতে না হতেই আয়ারল্যান্ডের নর্থ বা আইরিশ চ্যানেলে নামবেন। সেখানে তিনি আবার জুলাই মাসে রওনা দেবেন। যা চ্যালেঞ্জের। কারণ দুই চ্যানেলেই রয়েছে বরফের মতো ঠান্ডা জল, ভয়ংকর স্রোত, প্রবল হাওয়া। তার ওপর কম সময়ের ব্যবধানে নিজেকে ফিট রাখাটাও বেশ কঠিন। তাই নিজেকে ফিট রাখতে ডায়েট থেকে অনুশীলন চার্টেও নিজেকে অনবরত শাসন করে চলেছেন ২৬ বছর বয়সের বঙ্গতনয়া।
অন্যদিকে ওই দুই দেশের আবহাওয়া ও জলের তাপমাত্রাকে মানিয়ে নিতে কালনার গঙ্গায় ঠান্ডা জলে নিয়মিত অনুশীলন সারছেন সায়নী। বরফের মতো এই ঠান্ডা জল যে তার প্রস্তুতির অনুকূল তা বলতেও ভোলেননি। সায়নী বলেন, ‘আজকের তাপমাত্রা প্রায় ৯ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড ছিল। যা আমার পক্ষে বেশ অনুকূল। কারণ এর থেকে অনেক বেশি কম তাপমাত্রা ওই দুই চ্যানেলে রয়েছে। এখন গঙ্গায় ৩-৪ ঘণ্টা অনুশীলন করছি। আগামী দিনে এই সময়টা আরও বাড়বে। সামনের ২ টি চ্যানেলে সফল হওয়াটাই আমার মূল লক্ষ্য।’
সায়নীর বাবা তথা কোচ রাধেশ্যাম দাস বলেন, ‘১৫ মার্চ আমরা নিউজিল্যান্ডের উদ্দেশ্যে রওনা দেব। নিউজিল্যান্ডের এই চ্যানেল জয় করতে পারলে সায়নীর আরও একটা চ্যানেল জয় অন্য মাত্রা দেবে। নর্থ চ্যানেল সবচেয়ে শীতলতম চ্যানেল। তাই এখনকার এই ঠান্ডা আবহওয়াটা সায়নীর অনুকূলে রয়েছে।’