ভোটের মুখে এসএসসি নিয়োগ সংক্রান্ত মামলায় বড়সড় সিদ্ধান্ত কলকাতা হাইকোর্টের। ২০১৬ সালের বিতর্কিত প্যানেল খারিজ করল আদালত। এর ফলে চাকরি হারালেন ২৫ হাজার ৭৫৩ জন। চাকরিহারাদের আগামী ৪ সপ্তাহের মধ্যে বেতন ফেরাতে হবে। ১২ শতাংশ হারে সুদও দিতে হবে তাঁদের। আবার জেলাশাসক পরবর্তী ২ সপ্তাহের মধ্যে ওই টাকা আদালতে জমা দেবে। নতুনরা চাকরি পাবেন। হাইকোর্ট জানিয়ে দিল ১৫ দিনের মধ্যে সেই প্রক্রিয়া শুরু হবে।
মামলাকারীদের আইনজীবী বলেন, ‘২০১৬ সালের পুরো প্যানেল বাতিল করা হয়েছে। সবার মাইনে ফেরত দিতে হবে। ডিএম-কে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ডিআই সেটা ডিএম-কে দেবে চার সপ্তাহের মধ্যে। ২০১৬ সালের চারটে নিয়োগ প্রক্রিয়া- গ্রুপ সি, গ্রুপ ডি, নবম- দশম, একাদশ-দ্বাদশ- সকলেরই প্যানেল বাতিল করা হয়েছে। সবাইকে বেতন ফেরত দিতে হবে। ৬ সপ্তাহের মধ্যে বেতন ফিরত দিতে হবে। বেতন ফেরত হয়েছে কিনা, সেটা দেখার দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট ডিআই-কে দেওয়া হয়েছে।’
শূন্যপদ ছিল ২৪ হাজারের কিছু বেশি। এই নিয়োগে দেখা যায়, ২৫ হাজারেও বেশি চাকরি পেয়েছেন। ২৪ হাজার ৭৫৩ জনের মধ্যে হয়তো নিয়োগপত্র নেননি। সেক্ষেত্রে সংখ্যা ২২ হাজারের কিছু বেশি। এদিনের শুনানিতে বিচারপতি দেবাংশু বসাক দুটি কথা উল্লেখ করেছেন। বিচারপতি জানিয়েছেন, তাঁদের আর কোনও উপায় ছিল না, তাই এই গোটা প্যানেল বাতিল করা হয়েছে। রাজ্য সরকার কোথাও জানত, এই প্যানেলে কোথাও কোনও দুর্নীতি হয়েছে, তার জন্যই সুপার নিউমেরিক পোস্টের আবেদন তারা করেছিল।
এসএসসির নিয়োগ প্রক্রিয়ার অনেক ওএমআর শিট বা উত্তরপত্র স্কুল সার্ভিস কমিশনের ওয়েবসাইটে ইতিমধ্যে আপলোড করা হয়েছে। যেগুলি এখনও আপলোড করা হয়নি, সেগুলি দ্রুত আপলোড করার নির্দেশ দিয়েছে আদালত। উত্তরপত্র যাতে জনগণ যাতে দেখতে পান, সেই ব্যবস্থাও করতে হবে কমিশনকে। একইসঙ্গে আদালত জানিয়েছে, এই মামলার তদন্ত চালিয়ে যাবে সিবিআই। অতিরিক্ত শূন্যপদ তৈরির জন্য চাইলে সন্দেহভাজনদের হেপাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদও করতে পারবে কেন্দ্রীয় সংস্থা।
সকলের চাকরি বাতিল করা হলেও এক জনের চাকরি থাকছে। সোমা দাস নামের এক চাকরিপ্রাপক ক্যান্সারে আক্রান্ত। মানবিক কারণে তাঁর চাকরি বাতিল করেনি হাইকোর্টের বিশেষ বেঞ্চ।