রং মিস্ত্রি থেকে গাড়ি, ভিলা, রিসর্ট! প্রসন্নর উত্থান কীভাবে উত্তর খুঁজছে সিবিআই

কলকাতা: শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলার তদন্তে প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় ঘনিষ্ঠ অর্পিতার দুটি ফ্ল্যাট থেকে মিলেছে প্রায় ৫০ কোটি নগদ।সেই টাকা কোথা থেকে এল তার উত্তর মেলেনি।অন্য দিকে, নিয়োগ দুর্নীতির টাকা কোথায় যেত? কাদের মাধ্যমে লেনদেন হত? তা জানতে মরিয়া ইডি ও সিবিআই। এবার সিবিআই-এর হাতে এল পার্থ ঘনিষ্ঠ এক মিডলম্যান প্রসন্নকুমার রায়। শুক্রবার  সন্ধেয় তাকে নিউটাউন থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। ধৃতের বিপুল সম্পত্তির খোঁজ মিলেছে।

জানা গিয়েছে, প্রসন্ন রায়ের গাড়ি ভাড়ায় খাটানোর একটি সংস্থা রয়েছে। সেই অফিসেই লেনদেন সংক্রান্ত রফা হত বলে জানতে পেরেছেন গোয়েন্দারা। প্রসন্নর যোগাযোগ কতদূর পর্যন্ত ছিল, তা জানতে উৎসুক তদন্তকারীরা। শনিবার তাঁকে আদালতে পেশ করা হয়। তদন্তকারী সংস্থা সূত্রে খবর, প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ বলেই পরিচত ছিলেন এই প্রসন্ন। শুধু তাই নয়, তিনি সম্পর্কে পার্থর ভাগ্নি-জামাই বলেও জানা গিয়েছে সিবিআই সূত্রে।

জানা যাচ্ছে, এক সময় রং মিস্ত্রির কাজ করতেন প্রসন্ন। পরে রঙের ঠিকাদারির ব্যবসা শুরু করেন। তারপর নাকি আচমকা উত্থান! বর্তমানে গাড়ি ভাড়া দেওয়ার অফিস রয়েছে তাঁর। একজন রঙের ঠিকাদারের এত বিপুল সম্পত্তি কী ভাবে? তা নিয়ে রয়েছে ধোঁয়াশা।

তদন্তে নেমে সিবিআই জানতে পেরেছেন প্রসন্নর কার রেন্টাল সংস্থার অফিসের মাধ্যমেই হত টাকার লেনদেন। মূলত উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগণা থেকে যে সব নিয়োগ হয়েছে, সেই সব চাকরি প্রার্থীদের থেকে টাকা নেওয়ার কাজ চলত সেখান থেকেই। জানা যাচ্ছে, রাত ১০ টা বা ১১ টার পর কালো কাঁচ তোলা গাড়ি আসত ওই অফিসের সামনে। তাতে করেই নাকি আসত টাকা। সল্টলেক জিডি ২৫৩-র সেই অফিসে নেই কোনও সিসিটিভি। কী এমন গোপন কাজ চলত? চাকরি প্রার্থীদের কাছ থেকে টাকা আনার জন্য কয়েকজন এজেন্ট ছিল বলেও জানা গিয়েছে। তাঁদের মধ্যেই অন্যতম প্রদীপ সিং। প্রদীপকে গ্রেপ্তার করার পরই প্রসন্নর নাম সামনে আসে।

সল্টলেক ও নিউ টাউন এলাকায় একাধিক সম্পত্তি রয়েছে প্রসন্নর। নিউটাউনের বলাকা আবাসনে দু’টি ফ্ল্যাট, কলকাতার লেদার কমপ্লেক্স থানা এলাকায় একটি অভিজাত ভিলা রয়েছে প্রসন্নর। ভিলার সামনে বাগান একেবারে চোখ ধাঁধানো। রাজারহাটের ধারসাইতে তাঁর বাগান বাড়ির হদিশ মিলেছে বলেও সূত্রের খবর। এ ছাড়া একাধিক জমির খোঁজ পেয়েছেন তদন্তকারী আধিকারিকরা।

দিঘা, জঙ্গলমহল, উত্তরবঙ্গে রয়েছে প্রসন্নর রিসর্ট। বেশ কয়েকটি চা বাগানেরও মালিক তিনি। নিয়োগ দুর্নীতির টাকার সঙ্গে এই বিপুল সম্পত্তির যোগ থাকার বিষয়টা উড়িয়ে দিচ্ছেন না তাঁরা।তাই তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে এসএসসি দুর্নীতির অনেক প্রশ্নের উত্তরই মিলবে বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

fourteen + thirteen =