অবশেষে আইসিসি ট্রফি জয় দক্ষিণ আফ্রিকার

রাগবির পর ক্রিকেট। চোকার্স তকমা ঘুচল? বলা যেতেই পারে। অবশেষে আইসিসি ট্রফি জয়। সেই ১৯৯৮ সালে আইসিসি নকআউট ট্রফি জিতেছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। যা পরবর্তীতে আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি হিসেবে পরিচিত হয়। এরপর থেকেই শুধু অপেক্ষা। ছেলেদের ক্রিকেট হোক বা মেয়েদের। যুব দল হোক বা সিনিয়র। ফরম্যাট যাই হোক। বারবার ট্রফির খুব কাছ থেকে ফিরেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। এ বার ঠোঁট আর কাপের দূরত্ব ঘুচল। টেস্ট ক্রিকেটে নতুন চ্যাম্পিয়ন দক্ষিণ আফ্রিকা। ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে খেতাব জিতল তারা। প্রকৃত অর্থেই বলা যায়, দিস টাইম ফর আফ্রিকা।

সিনিয়র ক্রিকেটের কথাই ধরা যাক। ওয়ান ডে ক্রিকেটে সেমিফাইনাল অবধি পৌঁছেও ট্রফি হাতছাড়া হয়েছে। তাও এক বার নয়, চার বার। এমনকি গত ওয়ান ডে বিশ্বকাপে ভারতের মাটিতেও সেমিফাইনালে হার। টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে ২০২৪ সালে প্রথম বার ফাইনালে উঠেছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। কিন্তু ফাইনালে রুদ্ধশ্বাস জয় ছিনিয়ে নেয় ভারত। আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে প্রথম বার ফাইনালে জায়গা করে নিয়েছিল। ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে দীর্ঘ ২৭ বছরের ব্যবধানে আইসিসি ট্রফি। দক্ষিণ আফ্রিকা ক্রিকেটই শুধু নয়, তাদের ক্রীড়াক্ষেত্রের জন্যই বিরাট প্রাপ্তি।

আইকনিক লর্ডস ক্রিকেট গ্রাউন্ডে বারবার ধাক্কা খেয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা। অনেকে মুহূর্তেই মনে হয়েছে, এ বারও না…। টস জিতে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন প্রোটিয়া ক্যাপ্টেন তেম্বা বাভুমা। কাগিসো রাবাডার দুর্দান্ত বোলিংয়ে অস্ট্রেলিয়কে প্রথম ইনিংসে ২১২ রানে অলআউট করে প্রোটিয়ারা। কিন্তু ব্যাটিংয়ে সেই অ্যাডভান্টেজ নেওয়া যায়নি। প্যাট কামিন্সের দুর্দান্ত বোলিংয়ে খাবি খায় প্রোটিয়া ব্যাটিং। তাদের প্রথম ইনিংস শেষ মাত্র ১৩৮ রানেই। দ্বিতীয় ইনিংসে অস্ট্রেলিয়া ব্যাটিং খাবি খেলেও লোয়ার অর্ডারে মিচেল স্টার্কের হাফসেঞ্চুরি তাদের ভালো পরিস্থিতিতে রাখে। প্রোটিয়াদের ২৮২ রানের টার্গেট দেয় অস্ট্রেলিয়া।

লর্ডসের মাঠে চতুর্থ ইনিংসে এর আগে ২৮২ কিংবা এর বেশি রান তাড়া করে মাত্র দু-বার জয়ের রেকর্ড ছিল। ফলে এই টার্গেট একেবারেই সহজ ছিল না। ওপেনার রায়ান রিকলটন এবং তিনে নামা মুল্ডারকে ৭০ রানের মধ্যেই ফেরায় অজিরা। তবে আরেক ওপেনার এইডেন মার্কব়্য়াম এবং ক্যাপ্টেন তেম্বা বাভুমা অনবদ্য জুটি গড়েন। চতুর্থ দিনের শুরুতে বাভুমার উইকেট হারালেও ভরসা দেন মার্কব়্যাম। উল্টোদিক থেকে আরও একটা উইকেট নেন অজিরা। জয়ের দোরগোড়ায় পৌঁছে আউট হন মার্কব়্যাম। শেষ অবধি ৫ উইকেটে স্বস্তির জয়। মার্কব়্যামের সেঞ্চুরি এবং বাভুমার হাফসেঞ্চুরি পার্থক্য গড়ে দেয়। বলা যায় তিন প্রজন্ম পর অবশেষে আইসিসি ট্রফির স্বাদ। হ্যান্সি ক্রোনিয়ে, গ্রেম স্মিথ, এবি ডিভিলিয়ার্সরা যা পারেননি, সেটাই করে দেখাল দক্ষিণ আফ্রিকার তরুণ দল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

1 + one =