নিউ টাউনের রেস্তোরাঁয় গুণ্ডামির পর থেকেই রাহুর দশা চলছে অভিনেতা তথা তৃণমূলি সাংসদ সোহম চট্টোপাধ্যায়ের। এবার আরও বড় অভিযোগে বিদ্ধ হতে চলেছেন সোহম। সৌজন্যে রাজ্য বিজেপি। সোহমের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক সব অভিযোগ তুলে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হতে চলেছে তারা। মঙ্গলবার এক সাংবাদিক বৈঠকে এমনটাই জানান বিজেপি নেতা শঙ্কুদেব পণ্ডা।
মঙ্গলবার এক সাংবাদিক বৈঠকে শঙ্কুদেব দাবি করেন, নিউ টাউনের যে রেস্তোরাঁয় গুন্ডামি করে সংবাদ শিরোনামে এসেছেন সোহম, সেখানে তিনি শ্যুটিং করছিলেন কোনও পয়সা না দিয়েই। রেস্তোরাঁ মালিক সোহমের বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করলেও চণ্ডীপুরের তৃণমূল বিধায়কের বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ করেনি তারা। উলটে বিষয়টি নিয়ে সমঝোতা করে নেওয়ার জন্য রেস্তোরাঁ মালিকের ওপর চাপ তৈরি করছে পুলিশ।
চড়-কাণ্ডের পর আরও এক বড় অভিযোগ উঠল তৃণমূল বিধায়ক তথা অভিনেতা সোহম চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার তাঁর পার্সোনাল সেক্রেটারি তথা আপ্তসহায়কের সঙ্গে টেলিফোনিক কথোপকথনের অডিয়ো ক্লিপ ফাঁস করলেন শঙ্কুদেব পণ্ডা। মঙ্গলবার সাংবাদিক বৈঠকে ওই অডিয়ো শোনান শঙ্কু। তবে এই অডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি একদিন। শঙ্কুদেবের দাবি, চণ্ডীপুরে বিজেপি কর্মীদের মারধরের নির্দেশ দেওয়া হয় ওই অডিয়ো ক্লিপে। তাঁর দাবি, এটা শুধুই ট্রেলার শোনানো হল। এমন আরও অনেক ক্লিপ সামনে আসতে পারে বলে ইঙ্গিত এদিন দিতে দেখা যায় শঙ্কুদেবকে। মঙ্গলবার সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে শঙ্কু বলেন, ‘এটা ট্রেলার শোনাচ্ছি, ফিল্ম আমাদের কাছে আছি। ঠিক সময়ে আদালতে জমা দেব।’ একইসঙ্গে তাঁর দাবি, বিজেপি কর্মীদের সরাসরি আক্রমণ করার জন্য লোকজন তৈরি রেখেছিলেন সোহম। এ বিষয়ে আপ্তসহায়কের সঙ্গে সোহমের কথাও হয়েছিল বলে মঙ্গলবারের সাংবাদিক বৈঠক থেকে দাবি করতে দেখা যায় শঙ্কুদেবকে।
তব মঙ্গলবার যে অডিয়ো সামনে আনেন শঙ্কু তাতে দুই ব্যক্তির কথোপকথন শোনা যাচ্ছে। শঙ্কুদেবের দাবি, সোহম ‘ফোনে নির্দেশ দিচ্ছেন, শুধু অ্যারেস্ট করালেই হবে না, বেল পাওয়ার পরও মারধর করতে হবে।’ আপ্তসহায়ক সাবধান করা সত্ত্বেও সোহম থামেননি বলেও অভিযোগ শঙ্কুদেবের। একইসঙ্গে তাঁর দাবি, কিছুদিন আগেই সোহমের বিধানসভা এলাকা চণ্ডীপুরে এক যুবককে অপহরণ করা হয়েছিল। সেই ঘটনাতেও সোহমের নাম ছিল বলে অভিযোগ শঙ্কুর।
এর থেকেও গুরুতর অভিযোগ তোলা হয়েছে শঙ্কুদেবের বিরুদ্ধে। বলেন, লোকসভা নির্বাচনে চণ্ডীপুরের ত্রিসীমানায় দেখা যায়নি সোহমকে। তার কারণ, মালয়েশিয়ার এক চুল ব্যবসায়ীর ছেলেকে অপহরণের ঘটনায় নাম জড়িয়েছে তাঁর। ওই যুবককে উদ্ধার করতে কলকাতায় এসেছিলেন মালয়েশিয়া পুলিশের আধিকারিকরা। এরপর কলকাতা পুলিশ ও ভবানী ভবনের আধিকারিকরা যৌথ অভিযান চালিয়ে দিঘার হোটেল থেকে ব্যবসায়ীর ছেলেকে উদ্ধার করেন। ওই ঘটনায় ১৬ জন তৃণমূল কর্মীকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। অপহরণের ঘটনায় নাম জড়িয়েছিল সোহমের। তবে সোহমের বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপই করা হয়নি পুলিশের তরফ থেকে। সঙ্গে শঙ্কু এও জানান, ওই ঘটনার জেরেই চণ্ডীপুরে ঢুকতে পারছেন না সোহম। যে কারণে ভোট প্রচারের সময়ও চণ্ডীপুরে দেখা যায়নি সোহমকে।