কলকাতা: টার্গেট ছিল অতনু দে।অথচ কিছুতেই একা তাকে বাগে পাচ্ছিল না সত্যেন্দ্র চৌধুরী। এদিকে ভাড়া গাড়ি, ভাড়াটে খুনিদের থাকা, খাওয়া দিতে গিয়ে পকেট হাল্কা হচ্ছিল। ভাড়াটে খুনিদেরও আর বেশিদিন একটা কাজের জন্য রাখা যাচ্ছিল না। তাই অতনুর সঙ্গে তার তুতো ভাই অভিষেক নস্করকে সরিয়ে ফেলার প্ল্যান করে বাগুইআটি জোড়া খুন কাণ্ডের মূলচক্রী সত্যেন্দ্র। পুলিশ সূত্রের দাবি তেমনই।
গত ২২ তারিখ রাতে বাগুইআটির জগৎপুরের বাসিন্দা অতনু দে ও তার পিসতুতো ভাই অভিষেক নস্করকে খুন করা হয়। তদন্তে উঠে আসে এই জঘন্য কাজটি করেছে সত্যেন্দ্র চৌধুরী ও তার ভাড়া করা খুনিরা। তবে কেন সে এমন কাজ করল, তারই উত্তর খুঁজছে পুলিশ ও সিআইডি। তার উত্তরে খুনের মোটিফ সম্পর্কে এখনও নিঃসন্দেহ হতে পারছেন না তদন্তকারীরা।
শুক্রবার হাওড়ায় পুলিশের জালে পড়ে সত্যেন্দ্র। তাকে বিধাননগর কমিশনারেট অফিসে এনে খানিক ক্ষণ জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। অতনুর পাশাপাশি অভিষেককে কেন খুন করা হল, সত্যেন্দ্রের থেকে তা জানতে চাওয়া হয়। সূত্রের খবর, সত্যেন্দ্র বলে, তার নিশানা ছিল অতনুই। কিন্তু যে দু’বার সে ডেকেছিল, অতনু কাউকে না কাউকে নিয়ে এসেছিল। ভাড়াটে খুনিদের হোটেল ভাড়া আর গাড়ির খরচ আর নাকি সত্যেন্দ্র টানতে পারছিল না। তাই ২২ তারিখেও যখন অতনু একা না এসে ওর ভাই অভিষেককে নিয়ে সত্যেন্দ্রের কাছে যায়, তখন সে অভিষেককেও শেষ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। এ ছাড়া, অতনু-খুনের কোনও সাক্ষী যাতে না থাকে, সে উদ্দেশ্যও ছিল বলে সত্যেন্দ্র পুলিশকে জানিয়েছে বলে খবর।
সত্যেন্দ্রকে জিজ্ঞাসাবাদ করে গোয়েন্দারা এ দিন জেনেছেন, ধৃতদের সঙ্গে ধাবাকর্মী অভিজিৎ বসুর পাঁচ-ছ’ বছর ধরেই যোগাযোগ। খুনের ঘটনায় দুই ছাত্রকে গলায় ফাঁস দেওয়া-সহ নানা ভূমিকা ছিল অভিজিতের। গোয়েন্দারা জানান, অতনু ও অভিষেককে খুনের পরে ভাড়া নেওয়া লাল গাড়িটি সংশ্লিষ্ট সংস্থাকে ফেরত দিয়ে টাকা মিটিয়ে দেয় সত্যেন্দ্র। তার পরে যে যার মতো গা ঢাকা দেয়।
কিন্তু ৫০ হাজার টাকা না-মেটাতে পারলেও তার চেয়ে অনেক বেশি টাকা দিয়ে খুনি ভাড়া কেন করল সত্যেন্দ্র? সূত্রের খবর, সত্যেন্দ্র পুলিশকে বলেছে, ওদেরও টাকা না দিয়ে সে পালাবে ভেবেছিল।