হাওড়া : ছিল রুমাল হয়ে গেল বিড়াল। হাওড়ার পিলখানায় পুরসভার ১৬নম্বর ওয়ার্ডে জি টি রোডের ওপরে ব্রীজ অ্যান্ড রূফ কারখানার গেটের সামনে একটি অত্যাধুনিক ভ্যাট তৈরির পরিকল্পনা নেয় পুরসভা। সেই ভ্যাটে গাড়ি ঢুকিয়ে আবর্জনা তুলে আনার ব্যাবস্থাও করা হয়। সেই ভ্যাটটি দখল করেই শাসকদলের কার্যালয় বানিয়ে ফেলা হয়েছে বলে অভিযোগ স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্বের। আবারও ভ্যাট চুরির অভিযোগ হাওড়ায়। ভ্যাট দখল করে, আলো, পাখা লাগিয়ে রূপ দেওয়া হয়েছে দলীয় কার্যালয়ের। সাংবাদিকদের দেখেই চেয়ার গুটিয়ে আসতে আসতে অফিস ছেড়ে বেরিয়ে যান কর্মীরা। হাওড়া পুরসভার মূখ্য প্রশাসক সুজয় চক্রবর্তী জানান, ভবিষ্যতে হাওড়া শহরকে ভ্যাটমুক্ত করার পরিকল্পনা থাকলেও ভ্যাট দখল মুক্ত করবে পুরসভা।
অভিযোগ রয়েছে এর আগেও পৌর নিগমের একটি ভ্যাটকে নিজের বাসস্থান করে ফেলেছিল একটি পরিবার। সেই ভ্যাটকে খালি করে আবার ভ্যাট হিসাবে ফিরিয়ে দিতে বিস্তর কাঠখড় পোড়াতে হয় পৌর নিগমকে। এরপরই পৌর নিগম সিদ্ধান্ত নিয়ে আবর্জনা ও ময়লা ফেলার জন্য কেনে ১০টি গাড়ি। যে গাড়িগুলো সরাসরি আবর্জনা তুলে নিয়ে ফেলবে বেলগাছিয়া ভাগাড়ে। শুক্রবার, পৌর নিগমের মুখ্য প্রশাসক সুজয় চক্রবর্তী জানান, তাদের উদেশ্য ভ্যাটমুক্ত হাওড়া শহর। যদিও এখুনি তা করা সম্ভব না হলেও সেটাই তাদের মূল উদেশ্য। আপাতত পৌর নিগমের জঞ্জাল সাফাইয়ের কাজে গতি আনতে ১০টি বিশেষ গাড়ি কেনার বরাত তারা দিয়েছেন।
আগামী মাসের মধ্যেই গাড়িগুলো পৌর নিগমের জঞ্জাল বিভাগের হাতে দিয়ে দেওয়া হবে। পাশাপাশি তিনি আরো বলেন, পৌর নিগমের নির্দিষ্ট ভ্যাট থেকে এই গাড়িগুলো জঞ্জাল ও আবর্জনা সংগ্রহ করে সরাসরি চলে যাবে বেলগাছিয়ার ভাগাড়ে। সেখানেই তারা জঞ্জাল ও আবর্জনা খালি করবে। মাঝপথে কোথাও আবর্জনা ও ময়লা ফেলার প্রয়োজন হবে না বলে জানান তিনি। এই ১০টি গাড়ি প্রাথমিকভাবে ভ্যাটের জায়গাতে রাখা হবে। ওই গাড়িতেই সাধারণ মানুষ জঞ্জাল ফেলবেন। এরপর ওই আবর্জনা নিয়ে সরাসরি বেলগাছিয়া ভাগাড়ে ফেলে আসবে এই গাড়িগুলো। গাড়ির চেহারা বড় হওয়ার কারণে বেশি করে আবর্জনা এতে ধরবে বলে বলেন মুখ্য প্রশাসক। এতে এলাকা পরিষ্কার থাকবে। আগে বড় লরি জঞ্জাল তুলতে গেলে সরু রাস্তার দরুন ট্রাফিক জ্যাম হতো। তবে এই গাড়ি ভ্যাটের জায়গাতে থাকার জন্য একদিকে জঞ্জাল কর্মীদের ও সাধারণ মানুষের সুবিধা হবে বলেও জানান তিনি। আপাতত কালিবাবুর বাজার ও কদমতলা বাজারের সামনে মোট ৫টি ছোট গাড়ি রাখা থাকে। এই ১০টি গাড়ি চলে এলে জঞ্জাল বিভাগের কাজে আরো সুবিধা হবে বলে দাবি পুর প্রশাসকের।
পাশাপাশি ভ্যাট চুরির বিষয় তিনি জানেন না বলে জানান। তবে, এই ধরণের ঘটনা ঘটলে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে তিনি জানান। যদিও বিজেপি নেতা উমেশ রাই সরাসরি চুরির অভিযোগ আনেন শাসকদলের বিরুদ্ধে। তিনি বলেন, জায়গাটি ১৬ নম্বর ও ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের সীমান্তে অবস্থিত। ওখানে পৌর নিগমের ভ্যাট ছিল। সেই ভ্যাটকে তুলে দিয়ে সেখানে একটি নতুন নির্মাণ করছিল নগর নিগম। ওই জায়গাটি পিডাব্লুডির জায়গা। হাওড়া পৌর বোর্ডের মেয়াদ শেষ হয়ে গেলে নির্মাণ কাজও থমকে যায়। সেই জায়গাতেই শাসকদলের লোকেরা দখল করে তাদের দলীয় অফিস তৈরি করে নিয়েছে। পাশাপাশি তিনি জানান রাত্রে ওই স্থানে অনেক অসামাজিক কার্যকলাপ চলে। পুলিশ প্রশাসন সব জেনেও না জানার ভান করে থাকে।
প্রসঙ্গত, কিছুদিন পূর্বে হাওড়ার বেলিলিয়াস রোডে পৌর নিগমের ভ্যাটকে ঘর বানিয়ে থাকার অভিযোগ উঠেছিল। ফের নগর নিগমের ভ্যাটকে রাজনৈতিক দলের অফিস বানানো নিয়ে নতুন করে বিতর্ক তৈরি হলো।