স্বপ্নের কেন্দ্রে রিঙ্কু, আশঙ্কার চোরাস্রোত কিন্তু বয়ে যাচ্ছে গঙ্গা দিয়ে!

বিউগল বেজে গিয়েছে। শুরু হয়ে গিয়েছে কাউন্ট ডাউনও। মাঠে বল গড়াবে ২২ মার্চ। তার আগে অঙ্ক কষা শুরু করে দিয়েছেন আইপিএলের ভক্তরা। কে মাতাবেন এ বারের আইপিএল? নামের অভাব নেই। বিশ্বের সেরা ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ ঘিরে শুরু হয়ে গিয়েছে চর্চা, আলোচনা, তর্ক। আইপিএলের অলিন্দে কোথায় দাঁড়িয়ে রয়েছে কলকাতা নাইট রাইডার্স? ২০১৪ সালে শেষবার আইপিএল জিতেছিল কেকেআর। সেই টিমের ক্যাপ্টেন গৌতম গম্ভীর ফিরেছেন টিমে। তাঁর ছোঁয়ায় হয়তো টিম খানিকটা হলেও বদলা যাবে। তাঁর ছকে বিপর্যস্ত হবে প্রতিপক্ষ।

শক্তি

১) আইপিএলের টিমগুলোর মধ্যে কেকেআরের ব্যাটিং গভীরতা বেশ ভালো। ক্যাপ্টেন শ্রেয়স আইয়ার রয়েছেন। এ বারের কেকেআরে অন্যতম বড় নাম রিঙ্কু সিং। সঙ্গে থাকবেন মণীশ পাণ্ডে, নীতীশ রানারা। যে কোনও বোলিংয়ের বিরুদ্ধে টিমকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারেন তাঁরা।

২) শ্রেয়স গত আইপিএলে চোটের জন্য খেলতে পারেননি। টিমের ঘোষিত ক্যাপ্টেনের চোট টিমের মনোবলে ধাক্কা দেয়। তাই হয়েছিল কার্যত। নীতীশকে দেওয়া হয়েছিল দায়িত্ব। কিন্তু টিমকে ফাইনালে তুলতে পারেননি। চোট সারিয়ে শ্রেয়স তৈরি জবাব দেওয়ার জন্য। আইপিএলই তাঁর মঞ্চ হতে পারে।

৩) কেকেআরের সবচেয়ে বড় শক্তি স্পিন বোলিং। সুনীল নারিন, বরুণ চক্রবর্তী, মুজিবউর রহমান, সূয়াশ শর্মাদের মতো স্পিনাররা রয়েছে। ইডেনে যে কারণে স্পিনিং ট্র্যাক বানানো হতে পারে। স্পিনাররা যদি ভরসা দিতে পারেন, কেকেআর কিন্তু ট্রফির স্বপ্ন দেখবে।

৪) গৌতম গম্ভীরকে মেন্টর হিসেবে পাওয়া টিমের মানসিকতা অনেকটাই বদলে দেবে, এমনই মনে করা হচ্ছে। কেকেআর এর আগে দু’বার চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। সেই দু’বার টিমের নেতা ছিলেন গম্ভীর। টিমের ড্রেসিংরুম যেমন চেনেন, তেমনই সমর্থকদের কাছে রয়েছে তাঁর গ্রহণযোগ্যতা।

৫) কেকেআরে রিঙ্কুর মতো ফিনিশার যেমন আছেন, তেমনই রয়েছে আন্দ্রে রাসেল। সেই তালিকায় থাকবেন শেরফান রাদারফোর্ডও। কেকেআর অবশ্য রিঙ্কুর ব্যাটিং বিস্ফোরণ দেখার জন্য মুখিয়ে রয়েছে।

দুর্বলতা

১) ওপেনিং নিয়ে সমস্যা থাকতে পারে এ বারের আইপিএলেও। গতবার ঘনঘন ওপেনার বদলাতে হয়েছিল। এ বার গুরবাজ আছেন, ভেঙ্কটেশ আইয়ার রয়েছেন। কিন্তু এঁদের উপরেই ভরসা রাখা হবে, নাকি নতুন কাউকে নিয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষা চলবে, তা বলা মুশকিল। গম্ভীর হয়তো সেট টিম চাইবেন। তা কিন্তু সাপে বর।

২) টিমে স্পিনারের ছড়াছড়ি হলেও পেস বোলিং নিয়ে কিন্তু প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে। মিচেল স্টার্কের মতো পেসারকে পাচ্ছে কেকেআর। কিন্তু তাঁর সঙ্গী কে হবেন? হর্ষিত রানা রয়েছেন। বয়স কম। গতবার অভিষেক হয়েছে কেকেআরে। কিন্তু বড় ম্যাচে টিমকে কতটা টানবেন, তা নিয়ে প্রশ্ন থাকছে।

অ্যাডভান্টেজ

১) কেকেআরের কাছে হোম গ্রাউন্ড ইডেন নিশ্চিত ভাবেই অ্যাডভান্টেজ। অতীতেও ইডেনে ভালো ক্রিকেটই খেলেছেন নাইটরা। গম্ভীর ঘরের মাঠে টিমের জয় দেখতে চাইছেন। প্রতিপক্ষ ইডেনের স্পিন সামলাতে হিমশিম খাবে, তা মোটামুটি বলেই দেওয়া যায়।

২) এ বারের কেকেআরে মুখ হতে পারেন তিনজন। যদি শ্রেয়স ফর্মে থাকেন, তিনি টপ অর্ডারে টিমকে টানবেন। চটজলদি উইকেট পড়লে টিমকে লড়াইয়ে ফেরানোর দায়িত্ব নেবেন রিঙ্কু। আর বল হাতে টিমকে জয় এনে দিতে পারেন প্রায় ২৫ কোটির ক্রিকেটার স্টার্ক।

আশঙ্কা

১) আশা যেমন থাকবে, তেমনই থাকবে আশঙ্কাও। এই দোলাচলের মুখ হতে পারেন রাসেল ও নারিন। রাসেল ফর্মে থাকলে একাই শেষ করে দেবেন বিপক্ষের বোলিং। কিন্তু গত কয়েক বছর ধরে সে ভাবে নিজেকে মেলে ধরতে পারছেন না। ঠিক একই কথা বলতে হবে নারিনের ক্ষেত্রেও।

২) চোট আঘাত টিমকে চাপে ফেলে দিতে পারে। কেকেআরের প্রথম একাদশ যথেষ্ট ভালো। যে টিমের বিরুদ্ধে বড় পরীক্ষা। কিন্তু স্টার্ক, শ্রেয়স, রাসেল, নারিনদের কেউ চোট পেয়ে গেলে কিন্তু তাঁদের বিকল্প হয়ে ওঠার মতো ক্রিকেটার হাতে নেই গম্ভীরের।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

two × 1 =