উত্তরকাশির সিল্কিয়ারা সুড়ঙ্গে আটকে থাকা ৪১ জন শ্রমিক কবে বাইরে বের হতে পারবেন তা অনির্দিষ্টকালের জন্য অনিশ্চিত হয়ে গেল। আশা আর আশঙ্কার দোলাচলে উত্তরকাশির সিল্কিয়ারা সুড়ঙ্গে নবজীবন ফিরে পাওয়ার আশায় প্রতিটা মুহূর্ত কাটছে ৪১ জন শ্রমিকের । জীবনের স্বাভাবিক ছন্দে ফিরে আসতে বাধা মাত্র ১০ মিটার। যা অতিক্রম করা এই মুহূর্তে ঘন অন্ধকারে একটা মাত্র সূর্যকিরণ পাওয়ার শামিল।
আন্তর্জাতিক মানের অগার মেশিন দিয়েও আর খননকার্য চালানো সম্ভব নয় জানিয়ে দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। ১০ মিটার পাথর কাটতে এবার তাই ভরসা হাতে চালানো ড্রিল মেশিন । টানা ১৩ দিন কাজ করার পর অগর মেশিন যেখানে ব্যর্থ সেখানে হাত দিয়ে কিভাবে আর কতদিনে সম্ভব হবে উদ্ধারকার্য সেই প্রশ্নই উঠে আসছে বারবার। হাতে চালানো উন্নত মানের ড্রিল মেশিনটি শনিবার সন্ধ্যায় এসে পৌঁছাবে এয়ারপোর্টে সেখান থেকে শ্রমিকরা তা রবিবার দুপুরে নিয়ে আসবে সিল্কিয়ারা টানেলে। অর্থাৎ রবিবার সন্ধ্যের আগে নতুন করে খনন কার্য চালানো সম্ভব নয়। এই মুহূর্তে ট্যানেলের ভেতর খননকার্য চালাতে গিয়ে ভেঙে যাওয়া মেশিনটিকে কেটে বের করা হচ্ছে। জানা গিয়েছে, ৯০০ মিলিমিটার পাইপের ভেতর দিয়ে এক্সপার্টরা গিয়ে হাতে করে খননকার্য শুরু করবেন, তারপর ভাঙা পাথরের টুকরো ওই পাইপের মধ্য দিয়েই বাইরে বের করে আনবে। এইভাবে ১০ মিটার পাথর কেটে পরিষ্কার করার পর একে একে বের করে আনা হবে ৪১ জন শ্রমিককে ওই পাইপের মধ্য দিয়ে। এর থেকেই পরিষ্কার, আদতেই শ্রমিকরা কবে দিনের আলো দেখতে পারবে তার কোনও নির্দিষ্ট সময়সীমা নেই। এর পরই উঠে আসছে, নবযুগ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানির দ্বায়িত্বজ্ঞানহিনতার প্রসঙ্গ, যার খেসারত দিচ্ছে ৪১ জন অসহায় শ্রমিক। নিয়ম অনুযায়ী আগেই যদি শ্রমিকদের সুরক্ষার জন্য “এসকেপ রুট” তৈরি করা হতো তাহলে আজ, পেটের দায়ে ভিনরাজ্যে কাজ করতে আসা শ্রমিকদের জীবন মৃত্যুর দোলাচলে আটকা পড়তে হতো না। সরকারের তরফে দেওয়া আশ্বাস আর ভরসাও এই মুহূর্তে শ্রমিকদের পরিবারকে সাহস জোগাতে পারছে না। ইতিমধ্যেই সিল্কিয়ারা টানেলের কাছে এসে উপস্থিত হয়েছেন বিহার থেকে আসা শ্রমিকদের পরিবারের লোকজন। শ্রমিকদের সুস্বাস্থ্য কামনায় শুরু করেছেন পুজোঅর্চনা।
সিল্কিয়ারা টানেল উদ্ধার অভিযান সম্পর্কে, আন্তর্জাতিক টানেলিং বিশেষজ্ঞ, আর্নল্ড ডিক্স বলেছেন, ‘এখানে একাধিক উপায় রয়েছে। এটি শুধুমাত্র একটি উপায় নয়… এই মুহূর্তে, সবকিছু ঠিক আছে । তবে আর অগার মেশিনে কাজ করা হবে না । আগার (মেশিন) ভেঙে গিয়েছে।’