বক্সিং ডে টেস্টে প্রথম দিন দাপট কাগিসো রাবাডা এবং বৃষ্টির। ম্যাচের আগের দিন ভারতের ঐচ্ছিক অনুশীলন ছিল। যদিও বৃষ্টিতে তা বাতিল করা হয়। ম্যাচেও যে বৃষ্টির আঁচ পড়বে সম্ভাবনা ছিলই। ভারতীয় সময় অনুযায়ী দুপুর ১.৩০টায় ম্যাচ শুরুর কথা থাকলেও আধঘণ্টা দেরিতে শুরু হয়। আর বৃষ্টির জন্যই প্রথম দিন খেলা হল মাত্র ৫৯ ওভার। বক্সিং ডে টেস্ট নিয়ে প্রস্তুতি, উত্তেজনা, উন্মাদনা কম ছিল না ভারতীয় ক্রিকেট প্রেমীদের। প্রথম ইনিংসে সেই সব প্রত্যাশা বদলে গিয়েছে হতাশায়। ভারতের প্রাপ্তি নতুন ভূমিকার লোকেশ রাহুল।
দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে পেস বাউন্স বেশি। সেঞ্চুরিয়ন অন্যান্য ভেনুর তুলনায় এ বিষয়ে আরও কঠিন। বল নড়লে ভারতীয় ব্যাটারদের প্রবল সমস্যা হয়, এ বিষয়টি নতুন নয়। তবে প্রোটিয়া ফিল্ডাররা যে হারে ক্যাচ ফেলেন, তার সুযোগ নিতে পারল না ভারত। মেঘলা আবহাওয়া, লাল বল। টস জিতে ফিল্ডিং নেওয়াই শ্রেয়। তার চেয়েও সেরা বোধ টস হারা। সিদ্ধান্তটা নিজের হাতে থাকে না। রোহিত শর্মার ক্ষেত্রে তাই হল।
টস জিতে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন প্রোটিয়া অধিনায়ক তেম্বা বাভুমা। বিশ্বকাপ ফাইনালের হতাশা থেকে বেরনোর দারুণ সুযোগ ছিল রোহিত, বিরাটদের সামনে। যদিও ধৈর্য দেখাতে পারলেন না রোহিত। হয়তো ভুলে গিয়েছিলেন টেস্ট খেলতে নেমেছেন। ইনিংসের পঞ্চম ওভারে তাঁকে হিসেব কষেই আউট করলেন কাগিসো রাবাডা। লং লেগে ফিল্ডার রেখে শর্ট পিচ ডেলিভারি দেন রাবাডা। রোহিতও লোভ সংবরণ করতে পারেননি। প্রিয় পুল শটে ছয় মারার চেষ্টায় লং লেগে অভিষেককারী নান্দ্রে বার্গারের হাতে ক্যাচ। মাত্র ৫ রান করেই প্যাভিলিয়নে ক্যাপ্টেন রোহিত।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফর থেকে নতুন প্রজন্মে নজর দিয়েছিল ভারতীয় টিম ম্যানেজমেন্ট। ওয়েস্ট ইন্ডিজে রোহিতের সঙ্গে ওপেন করেছিলেন যশস্বী জয়সওয়াল, তিনে শুভমন গিল। যশস্বী ফেরেন মাত্র ১৭ রানে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বোলিং আক্রমণ আর রাবাডাদের সামলানো যে এক নয়, পরিষ্কার। দেশের মাটিতে শুভমন গিলের টেস্ট রেকর্ড নজর কাড়ার মতোই। বিদেশের মাটিতে টেস্টে তাঁর পারফরম্যান্স নিয়ে প্রশ্ন উঠতেই পারে। নতুন ব্যাটিং পজিশন তিন নম্বরে এখানেও সুবিধা করতে পারলেন না। শুভমনের অবদান ২ রান।
ভারতীয় ইনিংসে কিছুটা ভরসা দেয় বিরাট কোহলি-শ্রেয়স আইয়ার জুটি। তবে এই জুটিও দীর্ঘস্থায়ী হয়নি। বিরাট (৩৮), শ্রেয়স (৩১) দু-জন সেট হলেও বড় ইনিংস এল না। নতুন ভূমিকায় এখনও অবধি সফল লোকেশ রাহুল। ভারতীয় দলের ওপেনার এখন মিডল অর্ডার ব্যাটার। টেস্টে কিপিংও করবেন। ব্যাটিংয়ে নজর কাড়লেন রাহুল। উল্টোদিকে বারবার সঙ্গী বদল হল। টেস্ট কেরিয়ারের ১৪তম হাফ সেঞ্চুরি এবং দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে দ্বিতীয়। বৃষ্টি ও মন্দ আলোয় ৫৯ ওভারে খেলা বন্ধ হয়। সে সময় ভারতের স্কোর ৮ উইকেটে ২০৮।
কিছুক্ষণ অপেক্ষা করেই দিনের খেলার সমাপ্তি ঘোষণা করেন আম্পায়াররা। দিনের শেষে ৭০ রানে অপরাজিত লোকেশ রাহুল। প্রথম ইনিংসে অন্তত ২৫০ অবধি পৌঁছতে পারলেও ভারত স্বস্তিতে থাকবে। এর জন্য ভরসা লোকেশ রাহুলই। বাকি দায়িত্ব নিতে হবে বোলারদের।