নিজস্ব প্রতিবেদন, পুরুলিয়া: ‘আসছে মকর দু’দিন সবুর কর, তোরা বাঁকা পিঠার জোগাড় কর, আসছে মকর——।’
রাত পোহালেই মকর সংক্রান্তির বাওরির দিন। আর সেই পরব উপলক্ষে রাঢ় বাংলা পুরুলিয়া জেলাজুড়ে পালিত হবে টুসু পরব। পুরুলিয়া শহরের বাজার এলাকাগুলি শুক্রবার ছেয়ে গিয়েছে রঙ বেরঙের চৌঢোলে। এদিন চলল কেনাবেচা। পরবের জন্য শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি তুঙ্গে। জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মহিলারা চৌঢোল কিনতে ভিড় জমিয়েছিলেন এদিন শহর থেকে শুরু করে গ্রামের হাট বাজারগুলিতে। দাম ৫০ টাকা থেকে শুরু, সবচেয়ে বেশি ২০০০ টাকা দামের।
ব্যবসায়ীদের দাবি, বিক্রি গত বছরের তুলনায় কিছুটা কমেছে। প্রথামাফিক মকর পরবের আগের দিন অর্থাৎ রবিবার বাওরির দিন চৌঢোল কিনে বাড়িতে স্থাপন করা হয়। সারারাত জেগে টুসু গান গাইবেন বাড়ির মহিলারা সেই চৌঢলের সামনে বসে। সোমবার চৌঢোলে টুসুকে চাপিয়ে গান গাইতে গাইতে কংসাবতী নদী সহ শহরের বিভিন্ন জলাশয়ে দেওয়া হবে বিসর্জন। এক চৌঢোল শিল্পী কালিপদ যোগী জানান, সকাল থেকে বিক্রি ভালোই হচ্ছে। আরও এক চৌঢোল শিল্পী সন্তোষি যোগী জানান, প্রায় ১৫-২০ দিন আগে থেকে চৌঢোল তৈরি করা হয় বাড়িতে। বাঁশ, কাঠ, রঙিন কাগজ, আঠা, ফুল দিয়ে সাজিয়ে তোলা হয় চৌঢোলকে। এই সময় চৌঢোল বিক্রি করে হাতে একটু পয়সা দেখা যায়। তবে বিগত বছরের তুলনায় বিক্রিটা একটু কমেছে বলেই দাবি তাঁর।
পুরুলিয়া ১ নম্বর ব্লকের কোটলুই গ্রামের বাসিন্দা ভাগ্য প্রামাণিক বলেন, ‘মকর সংক্রান্তির আগের রাতে টুসুর গান গেয়ে সারারাত গ্রামবাংলার মেয়েরা জেগে থাকেন। এটা আমাদের কাছে সবচেয়ে বড় উৎসব। চলে খাওয়া দাওয়া। আর মকর সংক্রান্তির দিন সকালে দলে দলে টুসুকে চৌঢোলে চাপিয়ে গান গাইতে গাইতে কংসবতী নদীতে বিসর্জন দেওয়া হয়। সেইদিন নতুন জামাকাপড় পরার রেওয়াজ রয়েছে। উৎসবে মেতে ওঠে গ্রামবাংলার মানুষজন।’