প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়ারা সরস্বতী পুজো করতে চাইলেও ‘না’ কর্তৃপক্ষের

প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ে সরস্বতী পুজো করতে চায় তৃণমূল ছাত্র পরিষদ।  ছাত্রছাত্রীরা জানান, পুজোর অনুমতি চেয়ে একাধিকবার চিঠি, ইমেল ইতিমধ্যেই পাঠানোও হয়েছে ডিন অফ স্টুডেন্টস অরুণকুমার মাইতিকে। কিন্তু প্রতিবারই ‘কনটেন্ট নট ভেরিফায়েড’ করে দিয়েছেন তিনি। অর্থাৎ পুজোর অনুমতি মিলছে না ডিন অফ স্টুডেন্স-এর তরফ থেকে। আর তাতেই  ক্ষোভে ফেটে পড়েন প্রেসিডেন্সির ছাত্রাছাত্রীরা। এরপরই প্রেসিডেন্সির তৃণমূল ছাত্র পরিষদ ইউনিটের ফেসবুক পেজে লেখা হয়, ‘শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সরস্বতী পুজো হবে, এর মধ্যে নেতিবাচক কোনো মতামত থাকতে পারে না। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশতভাবে প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ে বিদ্যার দেবী সরস্বতীর আরাধনা করা সম্ভব নয়, এমনই জানিয়েছেন আমাদের ডিন অফ স্টুডেন্টস। অর্থাৎ অথরিটি স্পষ্টভাবে যে ঘটনা তুলে ধরেছেন, তা হল প্রেসিডেন্সি সেক্যুলার ক্যাম্পাস।’ এরই পাশাপাশি তাঁদের এও অভিযোগ, কর্তৃপক্ষ ধর্মনিরপেক্ষতার অর্থ জানে না। কারণ, ধর্মনিরপেক্ষতার অর্থ হল, প্রত্যেক ধর্মের মানুষ নিজেদের মতো আচার- অনুষ্ঠান-উৎসব পালন করতে পারবে। এদিকে এও জানা যাচ্ছে, প্রেসডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয় ডিরোজিয়ান পন্থায় বিশ্বাসী। তাই এখানে কোনও ধর্মাচার করা সম্ভব নয়।

সরস্বতী পুজোর অনুমতি না মেসলায় বামপন্থী ছাত্র সংগঠনের দিকেই আঙুল তোলা হয় প্রেসিডেন্সির তৃণমূল ছাত্র পরিষদের তরফ থেকে। এই প্রসঙ্গে প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃণণূল ছাত্র পরিষদেরইউনিট সম্পাদক অরিত্র মণ্ডল জানান, ‘তারা কি সেক্যুলার ক্যাম্পাসের ধোঁয়াশার আড়ালে বাম সংঠনের চাপে নতিস্বীকার করেছেন? কারণ এরকম উদাহরণ ইতিহাসে আমরা দেখতে পেয়েছি যেখানে সুভাষ চক্রবর্তী মহাপীঠ তারাপীঠে পুজো দিতে গিয়েছিলেন বলে তাঁকে সিপিএম দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছিল। দীর্ঘ ২০৬ বছরের ইতিহাসে বাম একনায়কতন্ত্রের অত্যাচারকে আসলে অথরিটি ভয় পাচ্ছে। এরকম ভয় আমার বিশ্ববিদ্যালয়ের বহু ছাত্রছাত্রী অযথা পায়। তাদের প্রত্যেকের উদ্দেশ্যে বলছি ওদের দিন চলে গেছে, আর ফিরবে না, নিজেরা ঘুরে দাঁড়াও, সত্যের জন্য দাঁড়াও। অকারণে ওদের অযৌক্তিক মানসিকতাকে, কাজকে সমর্থন করা বন্ধ কর।’ এরই পাশাপাশি তৃণমূল ছাত্রপরিষদের তরফ থেকে এও জানানো হয়, ক্যাম্পাসে পুজোর অনুমতি না পেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের গেটেই পুজো করবেন তাঁরা।

এদিকে বামপন্থী ছাত্র সংগঠনের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করে প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্য়ালয়ের এসএফআই ইউনিটের সভাপতি আনন্দরূপা জানান, ‘এটা সম্পূর্ণ কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত। ডিরোজিও পন্থা মেনে চলে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে কোনও পুজো হয় না। সেই রীতি মেনেই এবার অনুমতি দেওয়া হয় না।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

eleven − five =