জঙ্গলে শুকনো পাতায় আগুন না লাগানোর প্রচার পুলিশ ও বন দপ্তরের

নিজস্ব প্রতিবেদন, আউশগ্রাম: পূর্ব বর্ধমান জেলার আউশগ্রামে অধিকাংশ এলাকায় বিশালাকার জঙ্গলে পাতা ঝরার মরশুমে প্রতিবছরেই শুকনো পাতায় কেউ বা কারা আগুন লাগিয়ে দেন বলে অভিযোগ। আগুন যাতে না লাগানো হয় তার জন্য শুক্রবার গ্রামে গ্রামে প্রচার করল ছোড়া ফাঁড়ির পুলিশ। তার সঙ্গে ছিল বন দপ্তরও। প্রসঙ্গত, অজয় দেবগন ও কাজলের এখানে শুটিং করার কথা রয়েছে।
জানা গিয়েছে, আউশগ্রামে আদুরিয়ার জঙ্গলে পাতা ঝরার মরশুমে আগুন লাগলে তা এতটাই ভয়াবহ আকার ধারণ করে যে দেরাদুনে ফরেস্ট সার্ভে অব ইন্ডিয়ার স্যাটেলাইটে ধরা পড়ে। প্রতি বছর নিয়ম করে আউশগ্রামের জঙ্গলের শুকনো পাতায় প্রথমে আচমকা কোনও ভাবে আগুন লাগে, তারপর তা দাবানলের মতো জঙ্গলে ছড়িয়ে পড়ে বলে দাবি। রাস্তা লাগোয়া জঙ্গলেই মূলত আগুন লাগে বেশিরভাগ সময়। তারপর ধীরে ধীরে তা ছড়িয়ে পড়ে বিশালাকার ধারণ করে।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অনেকের দাবি, কেউ বা কারা অসৎ উদ্দেশ্যে জঙ্গলের শুকনো পাতায় আগুন ধরিয়ে দেন। তাই এবার আগেভাগেই ছোড়া ফাঁড়ির আইসি ত্রিদিব রাজ গ্রামে গ্রামে ঘুরে প্রচার চালান। কারণ আদুরিয়া জঙ্গলে এখন ৪ মার্চ পর্যন্ত বেশ কয়েকটি চলচিত্রের শুটিং চলবে। বলিউড, টলিউডের নামী সুপারস্টাররা আসা যাওয়া করছেন। অজয় দেবগন ও কাজলের এখানে শুটিং করার কথা রয়েছে। তাই তার আগে জঙ্গলে যেন আগুন না লাগানো হয়, তার জন্য আগেভাগে সতর্ক করল পুলিশ। আগুন লাগানোর বিষয়ে জানতে পারলেই তার বিরুদ্ধে কড়া আইনি ব্যবস্থা নেবে পুলিশ। এমনটাই পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
তাছাড়া আগুন লাগলে ময়ূরের যেমন ক্ষতি হবে, ঠিক তেমনই জঙ্গলে বসবাস করা অন্যান্য জীবজন্তুরও ক্ষয়ক্ষতি হবে। পাশাপাশি আদুরিয়া জঙ্গলে ইন্ডিয়ান উলফ বা হেঁরোল, খরগোশ, অজগর, বনমুরগি, বনবিড়াল, প্রভৃতি প্রাণীরও বেশি সংখ্যায় দেখা মিলছে। হেঁড়লের সংখ্যাও আগের থেকে বেড়েছে। পাশাপাশি এখন আউশগ্রামের বিভিন্ন জঙ্গল এলাকায় প্যাঙ্গোলিন, সজারু প্রভৃতির সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। সুতরাং জঙ্গল সুরক্ষিত রাখাটা অত্যন্ত জরুরি বলেই মনে করছেন পর্যটকদের একাংশ। সেখানে আগুন আগলে জীবজন্তুর ক্ষতির আশঙ্কা করছেন অনেকেই।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

9 − 4 =