একজনই অতিথি শিক্ষক অসুস্থ, বন্ধ জুনিয়র হাইস্কুলের দরজা!

নিজস্ব প্রতিবেদন, বাঁকুড়া: ২০১৮ সালে ঘটা করে চালু করা হয়েছিল বাঁকুড়ার তালডাংরা ব্লকের সাতমৌলি চাঁদাবিলা জুনিয়র হাইস্কুল। যথেষ্ট সংখ্যক ক্লাসরুম তৈরি থেকে শুরু করে অন্যান্য পরিকাঠামোও গড়ে তোলা হয়। কিন্তু শিক্ষকের অভাবে ধুঁকতে ধুঁকতে মাস কয়েক আগে বন্ধই হয়ে যায় স্কুলের দরজা। অগত্যা গত কয়েক মাস ধরে স্কুলের ৩২ জন পড়ুয়ার একমাত্র ভরসা টিউশন।
বাঁকুড়ার তালডাংরা ব্লকের সাতমৌলি ও চাঁদাবিলা দু’টি বর্ধিষ্ণু গ্রামের শিশুদের পড়াশোনার জন্য দু’টি গ্রামেই পৃথক দু’টি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এছাড়াও পার্শ্ববর্তী পুন্যাশা ও উপরশোল গ্রামেও রয়েছে প্রাথমিক বিদ্যালয়। কিন্তু ২০১৮ সালের আগে পর্যন্ত পঞ্চম শ্রেণি বা তার উঁচু ক্লাসের পাঠ নিতে ওই চার গ্রামের পড়ুয়াদের ছুটতে হত চার কিলোমিটার দূরের সাবড়াকোন হাইস্কুলে। পরিস্থিতির কথা চিন্তা করে সাতমৌলি গ্রামে ২০১৮ সালে সাতমৌলি চাঁদাবিলা জুনিয়র হাইস্কুল নামের একটি বিদ্যালয় চালু করে রাজ্য সরকার।
যদিও স্কুলের পরিকাঠামো তৈরি হয়ে গেলেও কোনও স্থায়ী শিক্ষক নিয়োগ না হওয়ায় প্রাথমিক ভাবে দু’জন অতিথি শিক্ষক দিয়ে পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পঠনপাঠন শুরু করা হয়। দুই গ্রাম মিলিয়ে প্রায় ৪০ জন পড়ুয়া পড়াশোনাও শুরু করে ওই স্কুলে। পরবর্তীতে দুই অতিথি শিক্ষক অবসর নেওয়ায় আরও একজন অতিথি শিক্ষক নিয়োগ করে স্কুল শিক্ষা দপ্তর। ওই অতিথি শিক্ষকের কাঁধেই এতদিন চারটি ক্লাসের পঠন পাঠন থেকে শুরু করে মিড ডে মিল দেখাশোনার দায়িত্ব ছিল।
স্থানীয় গ্রামবাসীদের দাবি, মাস ছয় আগে ওই অতিথি শিক্ষক পথদুর্ঘটনায় আহত হলে তিনি স্কুলে যাতায়াত বন্ধ করেন। আর তার ফলে বন্ধ হয়ে যায় স্কুলের দরজা। স্কুলের পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত থাকা ৩২ জন পড়ুয়ার কাছে এখন ভরসা শুধুমাত্র প্রাইভেট টিউশন। গ্রামবাসীদের দাবি, অবিলম্বে স্কুলে স্থায়ী শিক্ষক নিয়োগ করে ফের পঠনপাঠন স্বাভাবিক ভাবে চালু না করলে, ওই পড়ুয়াদের পঠনপাঠনে বড়সড় ক্ষতি হয়ে যাবে। স্কুল শিক্ষা দপ্তর অবশ্য শিক্ষকের অভাবে ৬ মাস ধরে স্কুল বন্ধ থাকার কথা মানতে চায়নি। জেলা স্কুল পরিদর্শকের দাবি, ৩ মাস স্কুল বন্ধ রয়েছে। দ্রুততার সঙ্গে ফের ওই স্কুলে একজন অতিথি শিক্ষক নিয়োগ করে স্কুল চালুর তোড়জোড় চলছে। পরবর্তীতে আরও দু’জন অতিথি শিক্ষক নিয়োগের ব্যবস্থা করা হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

two + 16 =