লন্ডন: করোনা অতীত হয়ে গেলেও বলে থুতু লাগানোর নিষেধাজ্ঞা বলবৎ থাকবে। মেরিলেবোন ক্রিকেট ক্লাব বা এমসিসি, যাদের ক্রিকেটের ধারক-বাহক ধরা হয়, তারাই নিয়ে এল নতুন নিয়ম। বলে আর থুতু ব্য়বহার করতে পারবেন না ক্রিকেটাররা। বল পালিশ করার জন্য় যদি থুতু ব্য়বহার করেন কোনও ক্রিকেটার, তা অপরাধের পর্যায়ে পড়বে। তবে ঘাম লাগিয়ে বল পালিশ করা যাবে। ১ অক্টোবর থেকে এই নতুন নিয়ম বলবৎ হবে। এর থেকেও গুরুত্বপূর্ণ যে নিয়মে শিলমোহর পড়ল, তা হল, ‘মানকড় আউট’কে আর অনৈতিক বলা যাবে না। নন-স্ট্রাইক এন্ডে বোলার বল ডেলিভারি করার আগে যদি ব্য়াটার বেরিয়ে যান, বোলার অনেক সময় তাঁকে রান আউট করেন। এই আউট নিয়ে কম বিতর্ক নেই। অনেকেই মানকড় আউটকে অনৈতিক বলেন। এই রকম আউটের ফলে ক্রিকেটের স্পিরিট নষ্ট হয়। মানকড় আউট নিয়ে বিতর্কও কম হয়নি। আর সেই কারণেই এই আউটকে কার্যত বৈধতা দিয়ে দিল এমসিসি।
যুগ যুগ ধরে ক্রিকেটাররা বলের একটা দিক চকচকে রাখতে থুতু ও ঘাম ব্য়বহার করে আসছে। এতে পুরনো বলের একটা দিকের পালিশ ধরে রাখা যায়। তাতে পুরনো বলেও বোলাররা সুইং পান। ব্য়াটারদের আউট করতে সুবিধা হয়। করোনাকালীন পরিস্থিতিতে বলে থুতু এবং ঘাম ব্য়বহারে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছিল। করোনা পরিস্থিতি থেকে ধীরে ধীরে বেরিয়ে আসছে পৃথিবী। কিন্তু এমসিসি নিয়ম পাল্টাতে চাইছে না। তাদের গবেষণা বলছে, বলে থুতু লাগানোর ফলে সুইং করানোর ক্ষেত্রে তেমন কোনও বাড়তি সুবিধা মেলে না। স্বাস্থ্য়ের কথা মাথায় রেখেই থুতু ব্য়বহার পাকাপাকি ভাবে বন্ধ করে দেওয়া হল। এক বিবৃতিতে এমসিসি বলছে, ‘বলে থুতু ব্য়বহারের ক্ষেত্রে পাকাপাকি নিষেধাজ্ঞা জারি করা হচ্ছে। বল পালিশের জন্য় থুতু ব্য়বহার করা হলে তাকে বল ট্য়াম্পারিংয়ের মতো সিরিয়াস অভিযোগ বলেই ধরা হবে।’
মানকড় আউটকেও এমসিসি ছাড় দিয়ে দিল। এতদিন এমসিসির নিয়মাবলীর ৪১ নং ধারায় ছিল এই আউট। যা আসলে অনৈতিক আউট হিসেবে ধরা হত। কোনও বোলার এ ভাবে নন-স্ট্রাইক এন্ডে থাকা ব্য়াটারকে আউট করতেই পারেন। তবে তা অনৈতিক হিসেবেই ধরা হত। স্পিরিটের কথা ভেবে এই আউট সাধারণত বোলাররা করতেন না। প্রথম বার সতর্ক করে ছেড়ে দিতেন। দ্বিতীয় বার এমন হলে আউট করতেন। এ বার আর তার দরকার পড়বে না। ৪১ ধারা থেকে আইনের ৩৮ ধারায় তুলে আনা হল মানকড়কে। এ বার থেকে এই আউটকে ‘রান আউট’ বলে ধরা হবে।
এমসিসির ল’ম্য়ানেজার ফ্রেজার স্টুয়ার্ড বলছেন, ‘২০১৭ সালে একঝাঁক নিয়ম বদলের পর ক্রিকেট অনেক পাল্টে গিয়েছে। ২০১৯ সালে কিছু বদল আনা হয়েছিল। কিন্তু ২০২২ সালের ক্রিকেট আইনকে ঢেলে সাজানো হচ্ছে। আইন এবং খেলার মধ্য়ে যাতে সামঞ্জস্য় থাকে, সে কথা মাথায় রেখেই এই বদলগুলো করা হল।’