আইএসএফ কর্মীদের পাশে জমি ও জীবিকা বাঁচাও কমিটি, নয়া সমীকরণের ইঙ্গিত পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে

শনিবারের ঘটনার পর থেকে আপাতত সংবাদ শিরোনামে আইএসএফ। আর আইএসএফের সঙ্গে জমি ও জীবিকা বাঁচাও কমিটির সদস্যদের ওঠাবসা নিয়ে নতুন রাজনৈতিক সমীকরণের গন্ধ পাচ্ছেন বঙ্গ রাজনৈতিক মহল। এরফলে পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে সামনে আসছে নতুন এক সমীকরণও। কারণ, সূত্রে খবর, বর্তমানে মাছিভাঙা গ্রামে আত্মগোপন করে রয়েছেন বহু আইএসএফ কর্মী। তাঁদের অভিযোগ, তৃণমূলের অত্যাচারেই তাঁরা বর্তমানে বাড়ি ছাড়া। একইসঙ্গে এ অভিযোগও উঠছে, এই আরাবুল বাহিনীকে মদত দিচ্ছে খোদ পুলিশ-প্রশাসন। এদিন সকালে যে বোমা-বন্দুক উদ্ধার হয়েছে তা সবই আরাবুলের বলে দাবি তাঁদের। এই শিবিরেই আত্মগোপনকারী এক আইএসএফ কর্মী জানান, ‘এখানে এসেছি আত্মগোপন করার জন্য। ওরা এলাকায় তাণ্ডব চালাচ্ছে। পুলিশ অত্যাচার করছে। বাইরের লোকজন এসেও তাণ্ডব চালাচ্ছে।’ এদিকে এই আইএসএফ কর্মীদের আশ্রয় দিচ্ছে জমি ও জীবিকা বাঁচাও কমিটি। যদিও খাতায়-কলমে ‘ভাইজানের’ দলের সঙ্গে জোট নেই বলে জানাচ্ছেন জমি ও জীবিকা বাঁচাও কমিটির নেতারা। তবে তলায় তলায় তৃণমূল বিরোধী শক্তি হিসাবে একজোট হওয়ার চেষ্টা করছে ভাঙড়ের ছোট ছোট রাজনৈতিক শক্তিগুলি। আর তাতেই অস্বস্তি বাড়ছে শাসক শিবিরের। এদিনের সামগ্রিক চিত্র দেখে এমনটাই মত রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশের।

এই প্রসঙ্গে রবিবার সকালে  আরাবুলের বাড়ির কাছের জমি থেকে উদ্ধার হওয়া বোমা-অস্ত্র আইএসএফ কর্মীদের বলে দাবি করেন আরাবুলের ছেলে হাকিবুল ইসলাম স্বয়ং। তবে তৃণমূলের দাবি মানতে নারাজ আইএসএফ কর্মীরা। বরং তাঁরা স্পষ্ট ভাবে জানান, ‘সবাই জানে বোমা মানেই আরাবুল। আমাদের হাতে বোমা-মেশিন কোনওদিনই দেখবেন না।’ এর পাশাপাশি এক সময় আরাবুল শিবিরে থাকা এবং বর্তমানে আইএসএফে চলে যাওযা এক কর্মী জানান, ‘প্রাণের দায়ে এখনে এসে আছি। গেলেই তো পুলিশ দিয়ে মার খাওয়াবে। আগে আরাবুল গোষ্ঠীর ছিলাম। এখন ভাইজানের দলে আছি। গরিব মানুষ ঘর পায় না, সুবিধা পায় না। সে কারণেই আমরা তৃণমূল ছেড়েছি। আরাবুলের সঙ্গে লড়াই করতে গেলে জমি কমিটিকে পাশে দরকার। তাই আমরা এখন জমি কমিটির আশ্রয়ে রয়েছি।” যদিও তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষের দাবি, “এটা তো দাদাগিরির জায়গা নয়। মানুষের আশীর্বাদ না পেয়ে গাজোয়ারি করে দখল করতে যাওয়া ওগুলো চলবে না। মানুষের প্রতিরোধ হবে। তার পাশাপাশি পুলিশ প্রশাসন ব্যবস্থা নেবে।’ এদিকে জমি ও জীবিকা বাঁচাও কমিটির নেতা মহম্মদ নিজামউদ্দিন মোল্লাও জানান, ‘আরাবুলের হার্মাদ বাহিনী গোটা এলাকার মানুষের অধিকার কেড়ে নিচ্ছে। সাধারণ মানুষের উপর আক্রমণ শানাচ্ছে। আগে আইএসএফ এখানে ছিল না। জমি কমিটি ২০১৭ সাল থেকে এখানে ছিল। তৃণমূলের বিরুদ্ধে লড়াই করে আসছে। পঞ্চায়েত ভোটেও আমাদের লড়াইয়ের প্রভাব দেখা যাবে।’

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

19 − nine =