কটক, ৫ জুন: ওড়িশার রাজনীতিতে ইন্দ্রপতন। জনগণের রায় মেনে নিয়ে ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দিলেন নবীন পট্টনায়েক। রীতি মেনে বুধবার রাজ্যপাল রঘুবর দাসের সঙ্গে দেখা করে ইস্তফাপত্র জমা দেন তিনি।
ওড়িশায় লোকসভা এবং বিধানসভা, দুই ভোটেই হেরে গিয়েছে তাঁর দল বিজু জনতা দল তথা বিজেডি। একসয় এনডিএ-তে বিজেপির বিজেপির শরিক ছিল বিজেডি। আর এবার তাদের কাছেই লোকসভার সবক’টি আসনে হেরেছে। বিধানসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারানোর ব্যাপারে মঙ্গলবারই স্পষ্ট হয়ে যেতেই বুধবার সকালে ওড়িশার রাজ্যপালের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে তাঁর পদত্যাগপত্র দেন ওড়িশার বিদায়ী মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়েক।
ওড়িশায় লোকসভায় ২১টি আসনের সবকটিই হাতছাড়া হয়েছে বিজেডির। সেখানে বিজেপি জিতেছে ২০টি আসনে আর কংগ্রেসের ঝুলিতে এসেছে একটি আসন। আবার ওড়িশার ১৪৭টি বিধানসভা আসনের ৭৮টিতে জয় ছিনিয়ে নিয়ে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছে বিজেপি। বিজেডি পেয়েছে ৫১টি আসন। কংগ্রেস ১৪টি। আর অন্যরা ৪টি। ফলে বিরোধীদের সঙ্গে জোট বেঁধেও ওড়িশায় সরকার গড়ার অবস্থায় নেই বিজেডি। ওড়িশায় বিজেপি সরকার গড়ার আগে পর্যন্ত রাজ্যপাল নবীনকে বলেছেন সরকার চালিয়ে নিয়ে যেতে। নবীন তাতে ইতিবাচক সাড়াও দিয়েছেন।
টানা পাঁচবার ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়েক এবার ইতিহাসের দোরগোড়ায় দাঁড়িয়েছিলেন। ক্ষমতায় এলে নবীন পট্টনায়েক দেশের সবচেয়ে বেশিদিন ক্ষমতায় থাকা মুখ্যমন্ত্রীদের তালিকায় থাকা পবন চামলিংকে সরিয়ে শীর্ষে উঠে আসতেন। পবন ২৪ বছর ১৬৫ দিন মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন। আর নবীন ওই পদে ছিলেন ২৪ বছর ৮৮ দিন। রেকর্ড ভাঙার দোরগোড়ায় দাঁড়িয়েও বিজেডি সুপ্রিমোকে শুকনো মুখেই ওড়িশার পদ ছাড়তে হল।
নবীনের ইস্তফার পরই ভুবনেশ্বরের কুর্সিতে এবার কে বসবেন তা নিয়ে জোর জল্পনা শুরু হয়ে গিয়েছে। বিজেপির অ¨রে যে সব নাম ঘোরাফেরা করছে, সেগুলো হল প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা আদিবাসী মুখ জুয়াল ওরাম, দলের জাতীয় সহ-সভাপতি বৈজয়ন্ত জয় পাণ্ডা এবং কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান, বিজেপির মুখপাত্র তথা সদ্য নির্বাচিত সাংসদ সম্বিত পাত্র। তবে অচেনা কোনও মুখকে বেছে নিতে পারে বিজেপি।