জগদ্দলে যুবতীর রহস্যমৃত্যু, খুনের অভিযোগ পরিবারের

ব্যারাকপুর: উত্তর ২৪ পরগনার জগদ্দলে যুবতীর রহস্যমৃত্যু। রেললাইন থেকে উদ্ধার হল বছর ছাব্বিশের রিয়া মুখোপাধ্যায়ের মৃতদেহ। এই মৃত্যুকে কেন্দ্র করেই তৈরি হয়েছে রহস্য। উঠেছে একাধিক প্রশ্ন, যার সদুত্তর মেলেনি। মৃতের পরিবার এই ঘটনায় খুনের অভিযোগ তুলেছে। তাঁদের স¨েহের তির মৃতের প্রাক্তন প্রেমিকের দিকে।
ভাটপাড়া পুরসভার ২৭ নম্বর ওয়ার্ডের শ্যামনগর গুড়দহ মাতৃপল্লির বাসি¨া ছিলেন রিয়া। টেলিকলিংয়ের কাজ করতেন। মঙ্গলবার রাতে নৈহাটি জিআরপি শ্যামনগর স্টেশন সংলগ্ন ২৫ ও ২৬ নম্বর রেলগেটের মধ্যবর্তী রেললাইনের ধার থেকে রিয়ার মৃতদেহ উদ্ধার করে। তাঁর হাতে ছিল মোবাইল ও কানে হেডফোন গোঁজা ছিল। জানা গিয়েছে, মৃতার প্রেমিকই রিয়ার বাড়ির লোককে মৃতদেহ পড়ে থাকার খবরটি দেয়। এতেই সন্দেহ দানা বেঁধেছে। প্রশ্ন উঠেছে, ট্রেনের ধাক্কায় মৃত্যু হলে মোবাইল ফোন হাত থেকে ছিটকে পড়াটাই স্বাভাবিক। তাহলে মোবাইল ফোন মৃতের হাতে কীভাবে রয়ে গেলে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রিয়ার সঙ্গে গুড়দহ শালবাগান এলাকার বাসিন্দা অসীম হাওলদার ওরফে বটুর একসময় প্রেমের সম্পর্ক ছিল। পরে বটুর অন্যত্র বিয়ে ঠিক হয়ে গেলেও রিয়ার সঙ্গে মেলামেশা করত। মৃতার মা নূপুর মুখোপাধ্যায়ের দাবি, তাঁর মেয়েকে মেরে রেললাইনের ধারে ফেলা হয়েছে। ঘটনায় অভিযুক্ত অসীম হাওলাদার। মৃতার দিদি কৃষ্ণার অভিযোগ, অসীমের অন্য জায়গায় বিয়ে ঠিক হয়ে যাওয়ার পরও বোনের সঙ্গে মেলামেশা করতো। বোনকে মেরে রেললাইনে ফেলে দিয়েছে বটু। অভিযুক্তের ফাঁসির দাবি করেছেন মৃতার পরিবার ও প্রতিবেশীরা। রাতেই জগদ্দল থানা ও নৈহাটি জি আর পি থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন মৃতার পরিবার। তবে জনরোষের হাত থেকে বটুকে বাঁচাতে ঘটনাস্থল থেকে অসীম ওরফে বটুকে উদ্ধার করে নিয়ে আসে জগদ্দল থানার পুলিশ। কিন্তু ঘটনাস্থল যেহেতু রেললাইনের ধার, তাই বটুকে জগদ্দল থানার পুলিশ নৈহাটি জি আর পি থানার পুলিশের হাতে ওকে তুলে দেওয়া হবে বলে জানা গিয়েছে।
তবে ধৃতের ভাই অভিজিৎ হাওলাদারের দাবি, দাদার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ মিথ্যা। দাদার সঙ্গে মেয়েটির কোনও যোগাযোগ ছিল না। স্থানীয় কাউন্সিলর সোমনাথ তালুকদার বলেন, অল্প বয়সী একটি মেয়ের মৃতদেহ রেললাইনের ধার থেকে মিলেছে। অসীম নামে এক যুবকের সঙ্গে ওঁর সম্পর্ক ছিল। ওই ছেলেটি মৃতার দেহ শনাক্ত করে। এতেই রহস্য দানা বেঁধেছে। তবে দু’জনেই তাঁর ওয়ার্ডের বাসিন্দা। সোমনাথবাবুর দাবি, প্রশাসন নিরপেক্ষ তদন্ত করে ঘটনার রহস্য উদঘাটন করুক।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

four × 4 =