নিজস্ব প্রতিবেদন, বাঁকুড়া: ছেলের বিকল কিডনির বদলে নিজের কিডনি দিয়ে পরিত্রাতা মা।
বাঁকুড়া জেলার ছাতনা ব্লকের প্রত্যন্ত গ্রাম শুশুনিয়ার বাসিন্দা পিন্টু কর্মকার এবং উমা কর্মকার। ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে অন্ধকার নেমে আসে বাঁকুড়ার মোবাইল মেকানিক পিণ্টু কর্মকারের জীবনে। ধরা পড়ে কিডনির সমস্যা। বর্তমানে পিন্টুর দুটো কিডনিই নষ্ট হয়ে গিয়েছে। ডায়ালিসিস নয়, এবার করতেই হবে কিডনি প্রতিস্থাপন। ছেলেকে বাঁচাতে এবং যন্ত্রণা থেকে রক্ষা করতে বটবৃক্ষের মতো এগিয়ে এসেছেন মা নিজেই। কলকাতার পিজি হাসপাতালে ফেব্রুয়ারি মাসের ৪-৬ তারিখের মধ্যে নিজের ডান দিকের কিডনি ছেলের দেহে দান করবেন ঊমা কর্মকার।
পিণ্টুর মোবাইল সারাইয়ের দক্ষতা গ্রামের সকলের জানা। বাড়িতে রয়েছেন মা উমা কর্মকার। একলা মা ছেলের সংসার। সংগ্রামে ভরা পিণ্টু এবং তাঁর মা ঊমা কর্মকারের জীবন। ২০১১ সালে পিন্টুর বাবা জন্ডিসে মারা যান। বাবা মারা যাওয়ার পর গ্রিল তৈরির কাজ করে সংসার চালান পিণ্টু। তারপর ২০১৮ সালে গ্রামেই ছোট্ট একটি মোবাইল সারানোর দোকান খোলেন তিনি। ২০২০ সালে কিডনির রোগ ধরা পড়ার পর বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজ থেকে চিকিৎসা শুরু হয়। বর্তমানে কলকাতার পিজি হাসপাতালে বিনামূল্যে পিণ্টু কর্মকারের কিডনি প্রতিস্থাপিত হবে। যদিও অপারেশন ছাড়া যাওয়া-আসা, থাকা – খাওয়া এবং চিকিৎসা ও ওষুধের আনুমানিক খরচ ৫-৬ লক্ষ টাকা। মা ছেলের সংসারে দারিদ্র্যের ছাপ স্পষ্ট।
ছেলেকে বাঁচানোর এই লড়াইতে ঊমা কর্মকারের পাশে দাঁড়িয়েছেন গ্রামবাসী থেকে শুরু করে বন্ধুবান্ধবরা। তবে এখনও প্রয়োজন ৪-৫ লক্ষ টাকার। সেই কারণেই ছেলে পিণ্টু কর্মকার এবং মা ঊমা কর্মকার দু’জনেই সাহায্যের আর্জি জানিয়েছেন।