আইপিএলে টিকে থাকতে গেলে আজ জয় ছাড়া রাস্তা ছিল না মুম্বই ইন্ডিয়ান্স দলের। টানা ছয় ম্যাচ হারের মুখে দাঁড়িয়েছিল তারা। অতীতে পাঁচবারের চ্যাম্পিয়নদের সামনে এরকম খারাপ সময় এসেছিল বটে! কিন্তু এবার যেন সবচেয়ে বেশি খারাপ সময় যাচ্ছে মুম্বই ইন্ডিয়ান্স দলের। লখনউর বিশাল রান তাড়া করতে নেমে শুরুটা ভাল হয়নি মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের।
অধিনায়ক রোহিত শর্মা (৬) আবেশ খানের বলে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন। ঈশান কিষান বোল্ড হলেন ১৩ করে। তাকে ১৫ কোটি টাকায় কিনে কি লাভ বোঝা যাচ্ছে না। ব্রেভিস ১৩ বলে ৩১ করে আউট হলেন। তিলক বর্মা (২৬) বোল্ড হলেন হোল্ডারের বলে। এরপর যতক্ষণ সূর্যকুমার এবং পোলার্ড ছিলেন, আশা ছিল মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের।
সূর্যের ফর্ম এবং পোলার্ডের শক্তি মুম্বইকে জয়ের রাস্তায় ফেরাতে পারে কিনা দেখার ছিল। সূর্যকুমার আউট হয়ে গেলেন ৩৭ করে। রবি বিষ্ণইর বলে ক্যাচ দিলেন ডিপ মিড উইকেটে। কিন্তু চামিরাকে পরপর দুটো ছক্কা মেরে খেলা মুম্বইয়ের দিকে নিয়ে এলেন পোলার্ড। উল্টোদিকে ফ্যাবিয়ান সুযোগ পেলেই বড় শট মারলেন। শেষ তিনটি ওভারে প্রয়োজন ছিল ৫২ রানের। আবেশ খান তুলে নিলেন আল্যেনকে। শেষ দুটি ওভারে মুম্বইয়ের প্রয়োজন ছিল ৪৩ রান। জেসন হোল্ডার দিলেন ১৭ রান। শেষ ওভারে প্রয়োজন ছিল ২৬ রান। প্রথম বলেই রান আউট’ হলেন জয়দেব উনাদকাট (১৪)। মুরুগান অশ্বিন এসেই ছক্কা মারলেন। কিন্তু পরের বলেই রান আউট’ হলেন।
চমিরা মাথা ঠান্ডা রেখে শেষ ওভার বল করলেন। শেষ পর্যন্ত পোলার্ড (২৫) আউট হলেন ক্যাচ দিয়ে। হারের ডবল হ্যাটট্রিক করে ফেলল মুম্বই ইন্ডিয়ান্স। অঙ্কের বিচারে এখনই বলা যাবে না তারা আইপিএল জয়ের বাইরে চলে গেল। কিন্তু এই জায়গা থেকে ঘুরে দাঁড়ানো অসম্ভব পাঁচবারের চ্যাম্পিয়নদের সেটা দিনের আলোর মত পরিষ্কার।
গত বছর আইপিএলে পঞ্জাব কিংসের হয়ে ৬৭০ রান করে অরেঞ্জ ক্যাপ পেয়েছিলেন তিনি। আধুনিক প্রজন্মের ব্যাটসম্যানদের মধ্যে কে এল রাহুল অন্যতম সেরা, তাতে সন্দেহ নেই। রাজস্থানের বিরুদ্ধে বোল্টের প্রথম বলেই বোল্ড হয়েছিলেন। সেদিন মাঠে উপস্থিত ছিলেন বান্ধবী আঠিয়া শেঠি এবং হবু শ্বশুর সুনীল শেঠি। সেদিনের ব্যর্থতার জবাব আজ মুম্বই ইন্ডিয়ান্স দলের বিরুদ্ধে তিনি দেবেন আন্দাজ করা গিয়েছিল। এমনিতে তাকে ১৭ কোটি টাকা দিয়ে কেনেনি লখনউ সুপার জায়ান্টস সেটা প্রমাণ করলেন আজ। ওপেন করতে নেমে শুরু থেকেই ইনিংস তৈরি করলেন। কুইন্টন ডি কক, মনিশ পান্ডে,স্তইনিস আউট হয়ে গেলেও রাহুলকে আটকানোর রাস্তা কিছুতেই খুঁজে পাচ্ছিল না বুমরাহ, ফ্যাবিয়ান এলেন, মুরুগান অশ্বিনরা।
উইকেটর চারিদিকে শট খেললেন। টাইমিং করলেন দেখার মত। ফাস্ট বোলার, স্পিনারদের যেন পাত্তাই দিলেন না লখনউ অধিনায়ক। বুঝিয়ে দিলেন তিনি যেদিন খেলবেন, সেদিন বিপক্ষের শুধু তাকিয়ে দেখা ছাড়া কিছু করার থাকবে না। তার অধিনায়ক হিসেবে হয়তো কোয়ালিটি নেই। ব্যাটসম্যান হিসেবে অবশ্য বেঙ্গালুরুর এই তারকা যে টিম ইন্ডিয়ার অন্যতম সেরা সম্পদ সেটা বুঝিয়ে দিলেন।