মালদা জেলার বিভিন্ন এলাকায় ব্যাপকহারে আম গাছ কাটা নিয়ে অসন্তোষ ছড়িয়েছে পরিবেশবিদদের মধ্যে। রীতিমতো বনদপ্তরের অনুমতি পত্র নিয়েই নাকি জেলার বিভিন্ন ব্লকের চলছে আম গাছ কাটার কাজ। বিগত দিনে এত বিপুল পরিমাণ আমগাছ কাটা হয়নি বলেও দাবি করেছেন জেলার পরিবেশবিদরা। আচমকা মালদার ইংরেজবাজার, মানিকচক, রতুয়া, পুরাতন মালদা, গাজোল সহ একাধিক ব্লকে দেদার আম গাছ কাটার বিষয় নিয়েও এখন মালদার একটি পরিবেশবিদদের সংগঠন মুখ্যমন্ত্রীকে অভিযোগ জানানোর ভাবনা চিন্তা করছেন। কেন বনদপ্তর এভাবে দেদার আম গাছ কাটার অনুমতিপত্র দিচ্ছে, সে ব্যাপারে সোচ্চার হয়েছেন জেলার পরিবেশবিদদের একটি বড় অংশ।
যদিও এ প্রসঙ্গে মালদার বিভাগীয় বনাধিকারিক সিদ্ধার্ত বি. জানিয়েছেন, সবকিছু খতিয়ে দেখেই সংশ্লিষ্ট এলাকার রেঞ্জ অফিসাররা আম গাছ কাটার অনুমতি পত্র দিচ্ছেন। তবে বিকল্প গাছ লাগানোর কথা জমির মালিকদের বলা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, ইংরেজবাজার ব্লকের জহুরাতলা, আমজাম তলা, পুরাতন মালদা ব্লকের সাহাপুর, কাদেরপুর, মানিকচক ব্লকের নাজিরপুর সহ একাধিক এলাকায় দেদারভাবে চলছে আম গাছ কাটার কাজ। অথচ গতবছর মালদা জেলার প্রশাসনিক বৈঠক করতে এসে আম গাছকে পুনরুজ্জীবিত করার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। পাশাপাশি কোনওভাবেই যাতে আমগাছের নিধন না হয়, সে ব্যাপারেও কড়া হুঁশিয়ারি এবং সতর্কবার্তা দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু এতকিছুর পরেও কিভাবে বনদপ্তর জেলার আম গাছ কাটার আবেদনপত্র মঞ্জুর করছে সে বিষয়ে বিভিন্ন মহলে অভিযোগ উঠতে শুরু করেছে।
মানিকচকের তৃণমূল বিধায়ক সাবিত্রী মিত্র জানিয়েছেন, নাজিরপুরে অসংখ্য আম গাছ কাটার অভিযোগ কিছু মানুষ আমাকে জানিয়েছেন। যেগুলো গাছ কাটার উপযোগী না, সেগুলো কাটা হচ্ছে এমন অভিযোগ এলাকার পরিবেশবিদর আমাকে বলেছেন। এটা বরদাস্ত করা যাবে না । আমি বনদপ্তরের সঙ্গে কথা বলব। পুরো পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় সংশ্লিষ্ট দপ্তরের মন্ত্রীকে অভিযোগ জানাবো।
মালদা পরিবেশ রক্ষা কমিটির সম্পাদক মৃত্যুঞ্জয় দাস বলেন, আসলে বিভিন্ন আমবাগান সাফ করে সেই সব জমির ধরণ পরিবর্তন করা হচ্ছে। তারপর সেগুলি প্লট করে লক্ষ লক্ষ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এর পিছনে বনদপ্তর এবং ভূমি সংস্কার দপ্তরের একাংশের মদত রয়েছে। আমরা এব্যাপারে জেলা শাসকের কাছে অবিলম্বে ডেপুটেশন দিব। প্রয়োজনে এব্যাপারে বিক্ষোভ, আন্দোলন শুরু করা হবে।