ডিজিটাল অর্থনীতি নিয়ে মোদি সরকারকে আক্রমণে মমতা

মোদি সরকারের ডিজিটাল অর্থনীতির কড়া সমালোচনা শোনা গেল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের গলায়। সারা দেশে ক্যাশলেস অর্থনীতি চালু করতে চাইছে কেন্দ্রের মোদি সরকার। বুধবার দু-দিনের বিশ্ব বঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনের সমাপ্তি মঞ্চ থেকে কেন্দ্রের এই নীতির তীব্র সমালোচনা করেন তিনি। এর ফলে কর্মসংস্থান নষ্ট হচ্ছে বলে দাবি করেন মুখ্যমন্ত্রী। একই সঙ্গে উপস্থিত দেশ-বিদেশের শিল্পপতি ও বাণিজ্যিক প্রতিনিধিদের  সামনে ক্ষুদ্র শিল্পের সপক্ষেও সওয়াল করেন।

১৯ লক্ষ স্বনির্ভর গোষ্ঠী-সহ ক্ষুদ্র এবং মাঝারি শিল্পের উন্নয়নে রাজ্য সরকার উল্লেখযোগ্য ভূমিকা নেওয়ায় অনেক মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে বলেও তিনি জানিয়েছেন। জাতীয় স্তরে কর্মসংস্থানের হার ৪২ শতাংশ কমে গেলেও রাজ্যে তা ৪০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে বলে মুখ্যমন্ত্রী জানান। পাশাপাশি শিল্প ক্ষেত্রে ব্যবসায়ীদের উপরে যেভাবে কর চাপানো হচ্ছে এবং এজেন্সিগুলিকে ব্যবহার করা হচ্ছে কেন্দ্রীয় সরকারের নাম না করে তিনি তার সমালোচনা করেন। এইবারের সম্মেলনে শিল্প ক্ষেত্রের উন্নতিতে বেশ কিছু নতুন নীতি নেওয়া ছাড়া  বিদেশের প্রায় ৪০০ জন আন্তর্জাতিক স্তরের প্রতিনিধি ছাড়াও রাষ্ট্রদূত ও হাই কমিশনাররা অংশ নিয়েছেন বলে মুখ্যমন্ত্রী পরে তাঁর এক্স হ্যান্ডলে জানিয়েছেন।

বুধবার ছিল সপ্তম বিশ্ব বাংলা বাণিজ্য সম্মেলনের শেষ দিন। এদিন বিকেলে সমাপ্তি ভাষণে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমি তো ক্রেডিট কার্ড বা ডেবিট কার্ড ব্যবহার করি না। কই, তাতে তো আমার কোনও সমস্যা হয় না। মনে রাখতে হবে ক্যাশলেস অর্থনীতি কিন্তু কর্মসংস্থান সৃষ্টি করে না।’

একই সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘হ্যাঁ আমরা ডিজিটাইজেশন চাই, কিন্তু কর্মসংস্থান নষ্ট করে নয়।’ অর্থাৎ ক্যাশলেস অর্থনীতির নামে ক্ষুদ্র শিল্পকে ধ্বংসের চেষ্টা যে তিনি বা তাঁর দল সমর্থন করেন না, সেটাই স্পষ্ট করতে চেয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। দিয়েছেন ব্যাখ্যাও।

মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘এখানে অনেকে চা-এর দোকান দেখে বলে এতে কি হয়, এটা তো একটা ছোট্ট চা-এর দোকান। কিন্তু আমি যখন বিদেশে যাই সেখানে দেখি প্রচুর রোড সাইড দোকান আছে। আজকের যুব সমাজ তাঁরা বড় বড় শপিং মলে যেতে পছন্দ করে। কিন্তু ছোটো ছোটো দোকানগুলোতেও অনেক ব্যবসা হয়। আমি ছোটো ব্যবসায়ীদের বলব নিজেদের কখনও ছোটো ভাববেন না। আপনার হয়তো মনে হতে পারে আপনার মাত্র ৫ কোটি টাকার ব্যবসা, আরে কে বলতে পারে আপনার ব্যবসাই একদিন ৫০ কোটির হবে না।’ মনে করিয়ে দিয়েছেন, ‘স্মল ইজ অলওয়েজ বিউটিফুল। অনেক সময় আমরা অনেক বড় বড় জিনিস দেখি, কিন্তু তারা অনেক বেশি কর্মসংস্থান সৃষ্টি করে না, যা ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করতে পারে।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

two × five =