দুর্নীতি ইস্যুতে কোচবিহারের সভা থেকে বিরোধীদের আক্রমণ মমতার, বকেয়া আদায়ে দিলেন ‘ডেডলাইন’

শিক্ষক নিয়োগ থেকে রেশন দুর্নীতি কিংবা গোরু পাচার মামলায় জেলবন্দি তৃণমূলের একাধিক নেতা-মন্ত্রী। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার জালে পার্থ চট্টোপাধ্যায়, জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক, অনুব্রত মণ্ডলরা। দুর্নীতি ইস্যুকে হাতিয়ার করে সুর চড়িয়েছেন বিরোধীরা। কোচবিহারের রাসমেলার মাঠের সভা মঞ্চ থেকে দুর্নীতি ইস্যুতে বিরোধীদের জবাব দিলেন মমতা। দলের এক শতাংশ নেতা-কর্মী দুর্নীতিতে জড়িত তা মেনে নিয়ে তিনি বলেন, ‘চোর বললে জিভ খসে যাবে।’

মমতা বলেন, ‘আমাদের হাতের পাঁচটা আঙুলের কোনটা ছোট আবার কোনটা বড়। একশোভাগ লোকের মধ্যে একভাগ যদি খারাপ কাজ করে তার দায় দল কিংবা সরকার নেবে না। তাই বলে আমি রাস্তা দিয়ে যাচ্ছি বলছে চোর। এত বড় সাহস? ডাকাতের ডাকাত। ভারতবর্ষ, বাংলাকে লুট করেছে। গরিব মানুষকে লুট করেছে। আমি কারও থেকে এক পয়সার চা খাই না। সার্কিট হাউসে থাকলে আমার ভাড়াটা দিয়ে দিই। বেতন নিই না। লজ্জা করে না। মিথ্যা কথা বলার জন্য একদিন জিভ খসে পড়বে।’

পাশাপাশি, ১০০ দিনের কাজ, আবাস ও সড়ক যোজনার বকেয়া টাকা দেওয়ার ব্যাপারে কেন্দ্রীয় সরকারকে ফের একবার সময়সীমা বেঁধে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জানিয়ে দেন, যদি ১ ফেব্রুয়ারির মধ্যে কেন্দ্র বাংলাকে বকেয়া টাকা না-দেয়, তা হলে ২ ফেব্রুয়ারি থেকে তিনি নিজে ধর্নায় বসবেন। তবে মমতা কোথায় ধর্না দেবেন, কলকাতায় না কি দিল্লিতে, তা স্পষ্ট করে বলেননি।

রাজ্য সরকারের উত্তরবঙ্গের সচিবালয় উত্তরকন্যার সামনে সোমবার সরকারি পরিষেবা প্রদান কর্মসূচি ছিল মুখ্যমন্ত্রীর। সেখানেই তিনি বলেন, ‘১ তারিখ (ফেব্রুয়ারি) পর্যন্ত অপেক্ষা করব। সাত দিন টাইম দিয়েছি। আমাদের টাকা ফিরিয়ে দাও। মানুষ ঘর পাবেন না, নিজের পরিশ্রমের টাকা পাবেন না, আর তোমরা অট্টালিকায় থাকবে এটা হবে না। এটা আমি বরদাস্ত করব না। টাকা না-পেলে যা করার করব।’ মমতা আরও বলেন, ‘১০০ দিনের বকেয়া টাকা না-দিলে ২ তারিখ থেকে আমি নিজে ধর্নায় বসব।’

নাগরিকত্ব ইস্যুতে ফের বিজেপিকে তোপ

ভোটের মুখে সিএএ নিয়ে ফের সরব মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কোচবিহারের সরকারি অনুষ্ঠান থেকে বিজেপিকে একহাত নিলেন তিনি। বললেন, ‘ভোট আসতেই ফের ক্যা ক্যা করছে।’ তাঁর সাফ বার্তা, ‘সিএএ নিয়ে লাফালাফি করলে হবে না। সবাই নাগরিক। নাহলে কেউ ভোট দিতে পারতেন না।’

রবিবারই বিজেপি সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শান্তনু ঠাকুর দাবি করেন, আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে রাজ্যে লাগু হবে সিএএ। লোকসভা নির্বাচনের আগে মতুয়া ভোট টানতেই সিএএ-কে হাতিয়ার করার চেষ্টা করছে বিজেপি। সোমবার কোচবিহারের সরকারি অনুষ্ঠান থেকে এমনই দাবি করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন তিনি বলেন, ‘ভোট এগিয়ে আসতেই ক্যা ক্যা শুরু করেছে। সিএএ নিয়ে লাফালাফি করলে হবে না। এনআরসি হবে না।’ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন ফের বলেন, ‘সবাই নাগরিক। তাই সবাই ভোট দিতে পারেন। নাগরিক না হলে ভোটাধিকার থাকত না।’ রাজনীতি করতেই ভোটের আগে সিএএ ইস্যুতে তোলা হচ্ছে বলেই দাবি করলেন মমতা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

3 × three =