মালদ্বীপ, ১৪ জানুয়ারি: ভোট ময়দানে বড় ধাক্কা খেলেন মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট মুইজ্জু। ভারতের সমালোচনা করার পর এবার মালদ্বীপের গুরুত্বপূর্ণ স্থানীয় নির্বাচনে পরাজিত হল প্রেসিডেন্ট মহম্মদ মুইজ্জুর পিপল্স ন্যাশনাল কংগ্রেস (পিএনসি)।
শনিবার রাজধানী মালের স্থানীয় নির্বাচনে তাঁর দলের প্রার্থীকে হারিয়ে দিয়েছেন ভারতঘেঁষা বিরোধী দলের নেতা। জয়ী ভারতপন্থী নেতা অ্যাডাম আজিম মালের মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন। মেয়র হিসাবে বিপুল ভোটে জয় পেয়েছেন অ্যাডাম। অ্যাডামের বিপরীতে মেয়র ভোটে পিএনসির তরফে প্রার্থী আইশাঠের চেয়ে অ্যাডাম পাঁচ হাজার ভোট বেশি পেয়েছেন। এতদিন এই পদে ছিলেন মুইজ্জু। কিন্তু প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে লড়ার জন্য ইস্তফা দিতে হয়েছিল তাঁকে। তিনি মালদ্বীপ ডেমোক্রেটিক পার্টির (এমডিপি) নেতা।
মালদ্বীপে ভারতঘেঁষা দল হিসেবে পরিচিত এমডিপি। তারাই সেদেশের বিরোধী দল। ওই দলের প্রধান মালদ্বীপের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম সোলি। তাঁকে হারিয়েই সম্প্রতি প্রেসিডেন্টের কুর্সিতে বসেছেন মুইজ্জু। এবার রাজধানী মালের স্থানীয় নির্বাচনে শেষ হাসি তাদেরই। ওয়াকিবহাল মহলের মতে, ভারতের বিরোধিতাই মুইজ্জু ও তাঁর দলকে চাপের ফেলে দিয়েছে। অন্যদিকে এই জয়ে নতুন করে অক্সিজেন পেয়েছে মালদ্বীপের বিরোধী দল। এখনও সরকারে অন্যতম সংখ্যাগরিষ্ঠ তারা।
মালদ্বীপের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট সোলির ভারতের সঙ্গে সুসম্পর্ক ছিল। কিন্তু মুইজ্জু ‘চিনপন্থী’ নেতা। ফলে তিনি সে পথে হাঁটছেন না। ক্ষমতায় আসার আগেও তিনি দেশে ভারত-বিরোধী প্রচার করেছিলেন। সেদেশের দায়িত্ব পাওয়ার পরই মালদ্বীপ থেকে ভারতীয় সেনা সরানোর নির্দেশ দেন তিনি। প্রেসিডেন্ট হিসাবে তিনি প্রথমেই ভারতের সেনাকে মালদ্বীপ থেকে সরে যেতে বলেন।
পাঁচদিনের চিন সফর সেরে শনিবারই দেশে ফেরার পরই তাঁকে বলতে শোনা যায়, ‘আমরা ছোট হলেও, কাউকে চমকানোর ছাড়পত্র দিয়ে দিইনি আমরা। আমাদের ধমকে চমকে দাবিয়ে রাখার লাইসেন্স পেতে দেব না কাউকে।’ কারও নাম না করে তাঁর উদ্দেশে যে ভারতই তা একপ্রকার সষ্ট। দুই দেশের সম্পর্কে এর প্রভাব পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। এর মধ্যেই নির্বাচনের হার তাঁকে অস্বস্তিতে ফেলবে বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।
প্রসঙ্গত, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সম্প্রতি লাক্ষাদ্বীপ সফরে যাওয়া থেকেই বিতর্কের সূত্রপাত। মালদ্বীপের তিনজন মন্ত্রী ভারতের প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে সমাজমাধ্যমে অবমাননাকর মন্তব্য করেন। যা নিয়ে ভারতীয়দের মধ্যে শোরগোল পড়ে যায়। প্রতিবাদে অনেকে মালদ্বীপ বয়কট করেছেন।