ফেলে দেওয়া নোংরা, আবর্জনা থেকে বায়োগ্যাস তৈরি করে রান্না!

বর্জ্র পদার্থ থেকে বায়োগ্যাস (Biogas) তৈরি করে রান্নার কাজে ব্যবহার করছে মালদা টাউন রেল স্টেশন কর্তৃপক্ষ। সলিড ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট প্রক্রিয়ার মাধ্যমেই গত দুই মাস ধরেই মালদা ডিভিশনের এই বায়োগ্যাস (Biogas) তৈরি করার পরীক্ষামূলক কাজ শুরু করা হয়েছিল। আর তাতেই সাফল্য পেতে এখন সলিড ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট প্রক্রিয়ার মাধ্যমেই বায়োগ্যাস তৈরি করে রান্নার কাজে লাগাচ্ছে রেলের মালদা টাউন স্টেশন কর্তৃপক্ষ।

রেলের মালদা ডিভিশন সূত্রে জানা গিয়েছে, গত জানুয়ারি মাস থেকে রেলের মালদা ডিভিশনের পক্ষ থেকে পরীক্ষামূলকভাবে এই উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছিল। ইতিমধ্যে তা অনেকটাই সাফল্য লাভ করেছে। ফেলে দেওয়া নোংরা, আবর্জনা থেকে বায়োগ্যাস তৈরি করে তার মাধ্যমে রান্না চলছে মালদা টাউন স্টেশনের রিডিং রুমের কিচেনে। নিয়মিত এই কিচেনে প্রায় ৪০০ জন রেলকর্মীর রান্না হয়। রান্নার জন্য প্রতিমাসে গড়ে ৪০টি করে গ্যাস সিলিন্ডার প্রয়োজন হত।

রেলের মালদা ডিভিশনের এক কর্তা জানিয়েছেন, বায়োগ্যাসের মাধ্যমে রান্না চালু করার পর থেকেই গ্যাস সিলিন্ডারের সংখ্যা কমতে শুরু করেছে। বর্তমানে প্রতি মাসে ১০ থেকে ১২ টি গ্যাসের সিলিন্ডার বেঁচে যাচ্ছে এই কিচেনে। শুধু তাই নয়, সলিড ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমের মাধ্যমে মালদা টাউন রেল স্টেশন চত্বরে জমা হওয়া প্লাস্টিক জাতীয় আবর্জনা থেকেও আয় বেড়েছে রেলের। প্লাস্টিক জাতীয় পদার্থ ও প্লাস্টিকের বোতলের ডাস্ট তৈরি করে বিক্রি করা হচ্ছে রেলের পক্ষ থেকে।

রেলের মালদা ডিভিশন সূত্রে জানা গিয়েছে, রেলস্টেশন চত্বরে ফেলে দেওয়া বিভিন্ন পচনশীল দ্রব্য নিয়ে এসে ফেলা হচ্ছে সলিড ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম তৈরির জায়গায়। সেখানে নির্দিষ্ট জায়গায় জমা করা হচ্ছে সমস্ত পচনশীল দ্রব্য। সেখান থেকেই তৈরি করা হচ্ছে বায়োগ্যাস। সেই গ্যাস জমা হচ্ছে একটি নির্দিষ্ট ট্যাঙ্কিতে। সেখানে সর্বাধিক ৫০০ কেজি বায়োগ্যাস জমা হতে পারে। সেই গ্যাস নির্দিষ্ট সিস্টেমের মাধ্যমেই  পৌঁছে যাচ্ছে কিচেনে। সেখান থেকেই হচ্ছে রেলের কর্মীদের রান্না। বায়োগ্যাস তৈরি হয়ে যাওয়ার পর পড়ে থাকা অবশিষ্ট পচনশীল দ্রব্যগুলি দিয়ে তৈরি হচ্ছে জৈব সার। সেগুলি রেলের পার্কে এবং কোয়াটারে বিভিন্ন ফুলের বাগানগুলিতে ব্যবহার করা হচ্ছে গাছের বৃদ্ধির জন্য।

পূর্ব রেলের মালদা ডিভিশনের সিনিয়র ডিভিশনাল মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার এস.কে. তিওয়ারি জানিয়েছেন,  গত জানুয়ারি মাসের শেষের দিকে  মালদা টাউন স্টেশনে সলিড ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম শুরু হয়েছে। এখন পর্যন্ত ২১২ কেজি প্লাস্টিক বেল্ড ও ২০০ কেজি প্লাস্টিক বোতলের গুঁড়ো রেলের পক্ষ থেকে বিক্রি করা হয়েছে। রেলের এই প্রকল্প সফল ভাবে চললে আগামীতে আরো এই গ্যাস ব্যবহারের উপযোগী করে তোলা হবে বলে মনে করা হচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

two × 4 =