বর্ষায় চলুন ধুঁয়াধর, বাড়তি পাওনা মার্বেল রক

নদী, পাহাড়, জল, জঙ্গল। আর তার বাইরে?

এর বাইরে কিছু দেখার থাকলে যেতে হবে মধ্যপ্রদেশ। এখানে বান্ধবগড়, কানহা, পেঞ্চের জঙ্গল যেমন আছে, তেমনই আছে অমরকণ্টকের মতো ধর্মীয় স্থান। এ রাজ্যেই বিশ্ব বিখ্যাত খাজুরাহো মন্দির। আর এসবের বাইরেও যা আছে, তাতে একবার অন্তত এখানে না এলে, একটা বড় ফাঁক থেকে যাবে।

জব্বলপুর।মধ্যপ্রদেশের অন্যতম জনবহুল শিল্প শহর।অনেকে বলেন, জব্বল আরবি শব্দ, এর অর্থ পাথর। আবার অনেকে বলেন, রামায়ণে আছে ভৃগুপুত্র ঋষি জাবালি নাকি এই স্থানে এসে নর্মদার তীরে তপস্যা করেন। সেই জাবালির নাম থেকে এই স্থানের নাম হয়েছিল জব্বলপুর। মধ্যপ্রদেশ ঘুরতে হলে জব্বলপুর বাদ দেওয়া সম্ভব নয়। আর এখানে এলে ধুঁয়াধর জলপ্রপাত ও মার্বেল রক দেখতেই হবে।

ভূগোলে পড়া ধুঁয়াধর চাক্ষুষ করার আনন্দটা বলে বোঝানো সম্ভব নয়। পাথুরে জমিতে প্রবল বেগে আছড়ে পড়ছে নর্মদা। বর্ষায় সেই রূপ হয়ে ওঠে অনবদ্য। যৌবনবতী নদীর জলপ্রপাত হয়ে ঝরে পড়ার সৌন্দর্য যেন বলার নয়। সে শুধু অনুভব যোগ্য। ঝরে পড়া নদীর অভিমান যেন পাথরে ধাক্কা খেয়ে বাষ্প হয়ে উঠছে। ঢেকে দিচ্ছে চারপাশ। ৩০ মিটার উঁচু থেকে পড়া জলপ্রপাতের বেগে চারপাশ ধোঁয়ায় ঢাকে বলেই এর নাম ধুঁয়াধর।শুধু জলপ্রপাত নয়, অসাধারণ সুন্দর এর চারপাশের ভূ-প্রকৃতি।

এখানে আছে রোপওয়ে। সেই রোপওয়ে নদীর ওপর দিয়ে নিয়ে যায় ধুঁয়াধারের কাছে। সেই রূপ দেখে মুগ্ধ হবেন না, এমন মানুষ আছেন বলে মনে হয় না।

মার্বেল রক

ধুঁয়াধার যদি ভালোলাগার এক নাম হয়, তাহলে আর এক নাম অবশ্যই মার্বেল রক। ধুঁয়াধারের অদূরে ভেদাঘাটে রয়েছে বিশ্বের পর্যটকদের কাছে অন্যতম জায়গা মার্বেল রক। অশোক সিনেমা থেকে  হৃত্বিকের মহেঞ্জোদরো, অসংখ্য হিন্দি ছবির শুটিং হয়েছে মার্বেল রক-এ। কোথাও দুধ সাদা পাথর, কোথাও তার রং গোলাপি, কোথাও আবার গায়ে লেগেছে হলুদের ছোঁয়া। মার্বেল পাথরের সেই পাহাড়ের মধ্যে দিয়ে বয়ে গিয়েছে নদী।বর্ষায় এলে অবশ্য নৌ বিহারের সম্ভাবনা কম। নিরাপত্তার জন্য বর্ষায় নৌ বিহার বন্ধ থাকে। তবে মার্বেল রকের অপূর্ব সৌন্দর্য সবচেয়ে ভাল উপভোগ করা যায় পূর্ণিমা রাতে। শোনা যায় জ্যোত্স্না যখন সাদা মার্বেল পাথরে চুঁইয়ে পড়ে, তখন পাথরে পাথরে আলো প্রতিফলিত হয়ে এক অপার্থিব সৌন্দর্যের সৃষ্টি করে। যদিও জ্যোত্স্না রাতে নৌ বিহারের সুযোগ বড় একটা থাকে না।

থাকার জায়গা-জব্বলপুর বড় শহর। এখানে বিভিন্ন মানের হোটেল আছে। ভেদাঘাটে মার্বেল রকের কাছে সরকারি ও বেসরকারি থাকার জায়গাও পেয়ে যাবেন।

কীভাবে যাবেন- হাওড়া, শিয়ালদা ও সাঁতরাগাছি থেকে ট্রেনে জব্বলপুর যাওয়া যায়। শক্তিপুঞ্জ এক্সপ্রেস, হামসফর এক্সপ্রেস ছাড়াও কয়েকটি ট্রেন আছে। আকাশপথেও যেতে পারেন জব্বলপুর। এখানে রয়েছে এয়ারপোর্টও। সড়কপথেও জব্বলপুর যাওয়া যেতে পারে।

 

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

fifteen − fifteen =