কলকাতা: শুক্রবার রাতেই এক মহাজাগতিক দৃশ্যের সাক্ষী হতে চলেছি আমরা। ঝাঁকে ঝাঁকে ছুটে আসবে ধূমকেতুর টুকরো। বায়ুমণ্ডলের সঙ্গে ঘষাঘষি লেগে রাতেই জ্বলে উঠবে দপ করে। আগুলে ফুলকি আতসবাজির মতো আকাশজুড়ে ছড়িয়ে পড়বে। সেই অসাধারাণ দৃশ্যই এবার দেখার সুযোগ মিলবে।
২৭০০ বছর ধরে পৃথিবীর আকাশে আলোর রোশনাই ছড়িয়ে দিয়ে যায় লিরিড। এ বছরেও শুক্রবার রাত থেকেই দিল্লি, কলকাতা সহ দেশের কয়েকটি শহর থেকে রাতের আকাশে দেখা যাবে লিরিড উল্কাবৃষ্টি (Meteor Shower)। জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা বলছেন, পৃথিবীর খুব কাছাকাছি চলে এসেছে লিরিড। শুক্রবার রাত সাড়ে ৮টার পর থেকে আকাশজুড়ে আলোর মালার মতো ভেসে বেড়াবে উল্কার আগুনে ফুলকি। প্রতি ঘণ্টায় ১০ থেকে ১৫টি উল্কা ঝরে পড়তে দেখা যাবে। তবে রাতে আকাশ মেঘাচ্ছন্ন থাকলে উল্কাবৃষ্টি তেমন ভালভাবে বোঝা নাও যেতে পারে। ভোররাতের দিকে সবচেয়ে ভাল দেখা যাবে।
বিড়লা তারামণ্ডলের জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা বলছেন, ধূমকেতু থ্যাচার থেকে লিরিড উল্কা তৈরি হয়েছে। প্রতি বছরই এই উল্কার ভগ্নাংশ পৃথিবীর দিকে ভেসে আসে। এবার উল্কাবৃষ্টি চলবে ২৯ তারিখ পর্যন্ত।
উল্কা হল মহাকাশে ভেসে বেড়ানো নানারকম পাথরখণ্ড যারা পৃথিবীর অভিকর্ষজ বলের টানে ছুটে আসে। পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের ধাক্কাধাক্কি হলে বায়ুর কণার সঙ্গে ওইসব মহাজাগতিক পাথর খণ্ডের ঘষা লেগে আগুন জ্বলে ওঠে। তাই মনে হয় আলোর ফুলকি ছড়াচ্ছে। একেই বলে উল্কাবৃষ্টি এইসব মহাজাগতিক পাথর খণ্ডেরা এমনি ভেসে বেড়ায় না, হয় কোনও গ্রহ বা নক্ষত্র থেকে খসে পড়ে, না হলে ধূমকেতুর অংশ বিচ্ছিন্ন হয়ে মহাকাশে ভাসতে থাকে।
প্রতি ৪৫ বছরে একবার সূর্যের চারপাশে পাক খায় থ্য়াচার। একবার প্রদক্ষিণ করতে সময় নেয় ৪১৫ বছর। আর সূর্যকে প্রদক্ষিণের সময়েই প্রচণ্ড উত্তাপে ধূমকেতুর মাথার খানিকটা অংশ ছিটকে বেরিয়ে আসে তার শরীর থেকে। এই ছিন্নভিন্ন অংশগুলোই পরে উল্কা হয়ে পৃথিবীর টানে ছুটে যায়।