জাতীয় শিশু সুরক্ষা কমিশনের চেয়ারপার্সন প্রিয়ঙ্ক কানুনগোকে মারধরের অভিযোগের ঘটনায় চেয়ারপার্সনকে হেনস্থাকাণ্ডে তদন্ত শুরু করল লালবাজার। এই ঘটনায় রুজু হয় মামলাও। এরপরই ছুটিতে পাঠানো হয় তিলজলা থানার অফিসার-ইন-চার্জ বিশ্বক মুখোপাধ্যায়কে। জামিন অযোগ্য ধারায় রুজু হওয়ায় ওই মামলার তদন্তভার গ্রহণ করেছে কলকাতা পুলিশের গুণ্ডা দমন শাখা, এমনটাই খবর লালবাজার সূত্রে। একইসঙ্গে এও জানানো হয়েছে, এই মামলায় ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩২৩ অর্থাৎ মারধর, ৩৫৩ অর্থাৎ সরকারি কাজে বাধা দেওয়া, ৩৪১ অর্থাৎ অবৈধভাবে আটকে রাখা, ৫০৬ অর্থাৎ হুমকি ও ৩৪ অর্থাৎ সম্মিলিতভাবে অপরাধ সংগঠিত করার ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, তিলজলায় শিশু খুনের ঘটনায় শুক্রবার থানায় যান জাতীয় শিশু সুরক্ষা কমিশনের চেয়ারপার্সন প্রিয়ঙ্ক কানুনগো। তাঁর সঙ্গে ছিলেন কমিশনের সদস্য সম্পাদক রুপালি বন্দ্যোপাধ্যায় সিং। বেশ কিছুক্ষণ পর থানা থেকে বেরিয়ে এসে তাঁকে হেনস্থা করা হয় বলে অভিযোগও করেন জাতীয় শিশু সুরক্ষা কমিশনের চেয়ারপার্সন। একইসঙ্গে প্রিয়াঙ্ক কানুনগো এও জানান, শুক্রবার তিনি ও কমিশের আর এক সদস্য সেক্রেটারি রুপালি বন্দ্যোপাধ্যায় যখন মৃত শিশুর পরিবারের সঙ্গে কথা বলছিলেন, তা গোপন ক্যামেরায় রেকর্ড করা হয়। তিনি বাধা দিলে তাঁকে ৭-৮ জন লোক মিলে ঘিরে ফেলে বলে অভিযোগ। এরপর ওসি নিজেও তাঁকে মারধর করেন বলে দাবি প্রিয়াঙ্ক কানুনগোর। তাঁর দাবি, পুলিশের গাফিলতির কথা সামনে আসছিল বলেই তাঁদের এভাবে মারধর করা হয়েছে। প্রিয়াঙ্ক কানুনগো এই প্রসঙ্গে এও বলেন, এরাজ্যে কেউ অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানালে এভাবেই মারধর করা হয়। সঙ্গে জাতীয় শিশু সুরক্ষা কমিশনের চেয়ারপার্সন প্রিয়ঙ্ক কানুনগো এও জানান, নিহত শিশুর মা-বাবার সঙ্গে তাঁদের কথা বলতে দেওয়া হচ্ছিল না। এরপর শুক্রবার থানায় গিয়ে তাঁদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি।
এদিকে লালবাজার সূত্রে খবর, শুক্রবারে তিলজলার ঘটনার কথা লিখিতভাবে জানিয়েছেন চেয়ারপার্সন। তাঁর অভিযোগকে গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে। সেই কারণেই তদন্তভার গোয়েন্দা বিভাগের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। এই ঘটনার তদন্তে তিলজলা থানার সিসিটিভি ফুটেজও খতিয়ে দেখবেন তদন্তকারীরা। প্রয়োজনে তিল থানার অফিসার-ইন-চার্জকে বিশ্বক মুখোপাধ্যায়কে লালবাজারে তলব করা হতে পারে। তাঁর থেকে লিখিত জবাবও চাওয়া হতে পারে বলে খবর।
প্রসঙ্গত, গত রবিবার তিলজলাতে একটি ফ্ল্যাট থেকে নাবালিকার বস্তাবন্দি মৃতদেহ উদ্ধার হয়। সেই ঘটনায় রণক্ষেত্রের চেহারা নিয়েছিল তিলজলা ও পার্ক সার্কাস এলাকা।