আশা জাগিয়েও শেষ পর্যন্ত হল না ‘লক্ষ্য’পূরণ

মিউনিখ: আশা জাগিয়েও জার্মানিতে তেরঙ্গা তুলে ধরতে পারলেন না উত্তরাখন্ডের বাঙালি ২০ বছরের লক্ষ্য সেন ফাইনালে থাইল্যান্ডের কুনলাভুট ভিতিদস্রানের কাছে স্ট্রেট গেমে হার লক্ষ্য সেনের। খেলার ফল ১৮-২১, ১৫-২১। টুর্নামেন্টের শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক খেলায় সব প্রতিপক্ষকে মাত দিয়েছিলেন বাঙালি শাটলার। যার মধ্যে ছিলেন বিশ্বের এক নম্বর ও অলিম্পিক চ্যাম্পিয়ন ভিক্টর অ্যাক্সেলসেন। ফাইনালে লক্ষ্য সেনের বিরুদ্ধে তাঁর স্ট্র্যাটেজিকেই হাতিয়ার করলেন থাইল্যান্ডের কুনলাভুট। প্রথম থেকেই আক্রমণের রাস্তায় হেঁটে লক্ষ্যর লক্ষ্যপূরণে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দেন থাই শাটলার। প্রথম গেম হারের পর  দ্বিতীয় গেমে একটা সময় বেশ কিছুটা পিছিয়ে পড়েছিলেন লক্ষ্য। তবে কামব্যাক। লড়াই ছাড়তে নারাজ ছিলেন বাঙালি শাটলার। তবে এই সময় ধাক্কা দিয়ে গেল পায়ের চোট। লড়াই করেও তাই হার মানতে হল লক্ষ্য সেনকে। জার্মান ওপেন অধরা। কিন্তু সামনে উজ্জ্বল লম্বা কেরিয়ার। এই চোট তাঁকে কতটা ভোগায় সেটাই এখন দেখার। কারণ সামনেই অল ইংল্যান্ড ব্যাডমিন্টন চ্যাম্পিয়নশিপ।

গত কয়েক বছর থেকেই ভারতীয় ব্যাডমিন্টনে নিজের নাম প্রতিষ্ঠা করেছেন লক্ষ্য সেন। চলতি বছরের শুরুতেই ইন্ডিয়ান ওপেন চ্যাম্পিয়ন হয়ে লক্ষ্য বুঝিয়ে দিয়েছিলেন এই বছরটা তাঁর। ওয়ান্ডার কিডের তকমা ঝেড়ে সিনিয়র ব্যাডমিন্টনের মঞ্চে নিজের উপস্থিত জানান দেন লক্ষ্য। ঘরের মাঠে প্রথম খেতাব জিতে উচ্ছ্বাসে মেতে ওঠেননি। বরং নিজেকে ডুবিয়ে রেখেছিলেন অনুশীলনে। তারই ফলটা পেলেন জার্মান ওপেনে। সোনা না পেলেও রুপো নিয়ে ফিরলেন লক্ষ্য। সেমিফাইনালে সব থেকে কঠিন লড়াইটা খেলতে নেমেছিলেন লক্ষ্য। সামনে ছিলেন বিশ্বের এক নম্বর তারকা ও অলিম্পিক চ্যাম্পিয়ন ভিক্টর অ্যাক্সেলসেন। তিন গেমের লড়াইয়ে তাঁকে হারিয়ে লক্ষ্য বুঝিয়ে দেন ভারতীয় ব্যাডমিন্টনের ব্যাটনটা হাতে নিতে তৈরি তিনি। শ্রীকান্থ, প্রণয়, সিন্ধুরা যেখানে ব্যর্থ সেই মঞ্চেই সাফল্যের নাম বঙ্গসন্তান লক্ষ্য সেন।

লক্ষ্য ফাইনালে নেমেছিলেন থাইল্যান্ডের কুনলাভুট ভিতিদস্রানের বিরুদ্ধে। গত বছর জার্মান ওপেনেই থাই খেলোয়াড়ের সঙ্গে দেখা হয়েছিল লক্ষ্য সেনের। সেই ম্যাচটা জিতেছিলেন লক্ষ্য। তার আগে ২০১৯ সালে ওরল্যান্স মাস্টার্সে লক্ষ্যকে হারিয়েছিলেন কুনলাভুট। ফাইনাল জিতলে বিশ্ব র‍্যাঙ্কিংয়ে প্রথম দশে আসার সুযোগ ছিল লক্ষ্য সেনের সামনে। ‍১২ থেকে সোজা ৮ নম্বরে উঠে আসার। তবে এখানেই থেমে থাকাটা লক্ষ্য সেনের লক্ষ্য নয়। শীর্ষ স্থানটা তাঁর লক্ষ্য। সঙ্গে অলিম্পিকের সোনার পদকটা যেন লক্ষ্য সেনের অপেক্ষায়। গত মরসুম থেকেই দুরন্ত ফর্মে রয়েছেন তিনি। শুধু তাই নয়, নিজেকে যেন প্রতি টুর্নামেন্টেই পরিণত করে তুলছেন। তারই ঝলক দেখা গিয়েছিল বিশ্ব মিটে। সেমিফাইনালে কিদাম্বি শ্রীকান্তের কাছে হেরে ব্রোঞ্জে থেমেছিলেন। তারপর আবার কেরিয়ারের প্রথম খেতাব হিসেবে ইন্ডিয়ান ওপেনে জিতে চমকে দিয়েছিলেন। জার্মান ওপেনেও রানার্স আপ হয়ে সেই ছন্দেই ধরে রাখলেন লক্ষ্য।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

eighteen − 3 =