পিছিয়ে পড়েও কলিঙ্গ কাপ চ্যাম্পিয়ন ইস্টবেঙ্গল

কয়েক বছর আগের ইস্টবেঙ্গলকে সমর্থকরাও হয়তো ভুলে যেতে চাইবেন। নতুন মরসুমের ইস্টবেঙ্গলে বি-টার অর্থ যেন বিশ্বাস। সেই বিশ্বাসে ঘুরে দাঁড়ানো যায়। মরসুমের শুরু থেকেই দুর্দান্ত পারফর্ম করছে ইস্টবেঙ্গল। ট্রফি না এলে সব সাফল্যই বৃথা। কলিঙ্গ সুপার কাপেও অনবদ্য ছন্দে লাল-হলুদ ব্রিগেড। দীর্ঘ ১২ বছর জাতীয় স্তরের কোনও ট্রফি ছিল না ইস্টবেঙ্গলে। কলিঙ্গ সুপার কাপে সেই প্রত্যাশা পূরণ হল। পিছিয়ে পড়েও দুর্দান্ত প্রত্যাবর্তন। নির্ধারিত সময়েই ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়নকে হারিয়ে ট্রফি জেতার সুযোগ এসেছিল ইস্টবেঙ্গলের সামনে। কয়েক সেকেন্ডের ভুলে ম্যাচ গড়ায় এক্সট্রা টাইমে।

ম্যাচের ফয়সালা অনেক আগেই হতে পারত। তবে ফাইনালে দুই স্প্যানিশ কোচের মস্তিষ্কের লড়াইয়ে ম্যাচ যে রোমাঞ্চকর হবে এটাই তো স্বাভাবিক। শুরুতেই যে বিশ্বাসের কথা বলা হয়েছিল। সেই বিশ্বাসই দেখাল কার্লেস কুয়াদ্রাতের ইস্টবেঙ্গল। শুরু থেকে দুর্দান্ত খেলেও ম্যাচের ৩৯ মিনিটে গোল খায় লাল-হলুদ। তবুও বিশ্বাস ছিল, খেলা ঘুরবে। বিরতিতে জোড়া পরিবর্তন করেন কার্লেস কুয়াদ্রাত। সদ্য জাতীয় দলের হয়ে এএফসি এশিয়ান কাপে খেলে আসা নাওরেম মহেশ এবং লালচুননুঙ্গাকে নামান। এরপরই খেলার চিত্র বদলে যায়।

দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই মহেশ-নন্দকুমার জুটিতে সমতা ফেরায় ইস্টবেঙ্গল। নাওরেম মহেশেরে উইথ দ্য বল দারুণ দৌড়। সঠিক সময়ে বল পাস করেন নন্দকুমারকে। কোনও ভুল করেননি ‘বড় ম্যাচের’ প্লেয়ার নন্দকুমার। তার ১১ মিনিটের মধ্যেই পেনাল্টি থেকে ইস্টবেঙ্গলকে এগিয়ে দেন সাউল ক্রেসপো। মোর্তাদা ফল জোড়া হলুদ কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন। ১০ জনের ওডিশাও চাপ তৈরি করছিল ইস্টবেঙ্গলের ওপর। ৭ মিনিট অ্যাডেড টাইম দেওয়া হয়। আর তারই শেষ মুহূর্তে ভুল করে বসেন ইস্টবেঙ্গলের তরুণ গোলরক্ষক প্রভসুখন গিল। কয়েক সেকেন্ড কাটিয়ে দিতে পারলে নির্ধারিত সময়েই চ্যাম্পিয়ন হত ইস্টবেঙ্গল। পেনাল্টি থেকে সমতা ফেরায় ওডিশা। ম্যাচ গড়ায় এক্সট্রা টাইমে।

অতিরিক্ত সময়ে সৌভিক চক্রবর্তীর একটা শট পোস্টে লাগে। যদিও তারপরই দ্বিতীয় হলুদ কার্ড তথা রেড কার্ড দেখে মাঠ ছাড়তে হয় সৌভিককে। দু-দলই দশজনে পরিণত হয়। ইস্টবেঙ্গলের মাহেন্দ্রক্ষণ ১১১ মিনিট। ওডিশা গোলকিপার মোয়া রালতে পাস দেন তাদের সাইড ব্যাক নরেন্দর গেহলেটকে। বল ধরে রাখতে পারেননি নরেন্দর। সুযোগ মিস করেননি ক্লেটন। জয়সূচক গোলটি করেন ক্যাপ্টেন ক্লেটন। আনন্দে জার্সি খুলে ফেলেন। সতীর্থরা তার ওপর। শেষ অবধি ৩-২ ব্যবধানে জিতে চ্য়াম্পিয়ন ইস্টবেঙ্গল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

six − three =