চারপাশ সবুজ। চাষজমি। বড়বড় গাছ। তারই মধ্যে ১১৫ ফুট উঁচু পাথরের মন্দির। মধ্যপ্রদেশের মোরেনা জেলার সিহোনিয়া শহরে অবস্থিত এই মন্দিরটির নাম হল কাকনমঠ মন্দির। সিহোনিয়া থেকে প্রায় দুই কিমি দূরে অবস্থিত সুপ্রাচীন এই মন্দিরের স্থাপত্য আজও বিস্ময়কর।মন্দির ঘিরে রয়েছে নানা প্রশ্ন।
না কোনও চুন, সুড়কি না কোনও বাঁধনের উপাদান। শুধু পাথরের ওপর পাথর বসিয়ে, বিশাল পাথর কেটে, কারুকাজ করে গড়ে তোলা হয়েছিল কাকনমঠ মন্দির। মন্দিরজুড়ে পাথরের ভাস্কর্য। নানা রকম মূর্তি খোদাই করা দেওয়াল জুড়ে। পাথরের সিঁড়ি উঠে গিয়েছে মূল মন্দিরে।সেখানেই রয়েছে শিবলিঙ্গ। এ মন্দিরের আরাধ্য মহাদেব। মন্দিরটির আশপাশে ছিল আরও বেশ কিছু মন্দির। তবে এখন সে সবই ভেঙেচুড়ে গিয়েছে। মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে রয়েছে এই কাকনমঠ মন্দিরটি।
সিহোনিয়া শহরটাই বিখ্যাত এই মন্দিরের জন্য। ইতিহাসের সাক্ষ্য বহনকারী এই মন্দিরটিও এখন ভাঙতে বসেছে। শোনা যায়, এই মন্দিরটি একাদশ শতকে কচওয়াহা রাজবংশের রাজা কীর্তি রাজ তৈরি করেছিলেন। মনে করা হয়, রানি কাকনবতী মহাদেবের একজন ভক্ত ছিলেন। যে কারণে এই মন্দিরটি রানির নামে নামাঙ্কিত হয়। পাশাপাশি, আবহাওয়াজনিত কারণেও এই মন্দিরের কিছু জায়গা আজ কার্যত ধ্বংস হয়ে গিয়েছে।
তবে এই মন্দির নিয়ে রয়েছে আর একটি গল্পকথাও। যেহেতু মন্দিরের পাথর তার চারপাশের এলাকায় নেই, তারওপর পাথরের অদ্ভূত ভারসাম্যে এই মন্দির নির্মিত, তাই অনেকে মনে করেন এর পিছনে রয়েছে অলৌকিক কিছু। কথিত আছে, এই মন্দিরটি ভূতেরা মিলে এক রাতের মধ্যে তৈরি করেছিল। যদিও, মন্দিরটি তৈরি করতে করতে সকাল হয়ে যাওয়ার কারণে অসম্পূর্ণ অবস্থায় থেকে যায় এটি। যে কারণে, এই মন্দিরটিকে ভূতের মন্দিরও বলা হয়। মন্দিরটির দিকে তাকালে মনে হবে যে, সত্যিই মন্দিরটি অসম্পূর্ণ রয়েছে। যদিও, ওই কাহিনির মধ্যে ঠিক কতটা সত্যতা রয়েছে তার কোনো সঠিক প্রমাণ মেলেনি।