কলকাতা: শিক্ষক নিয়োগ থেকে গ্রুপ সি, দুর্নীতির চেহারা দেখে বিস্মিত হাই কোর্ট। এসএসসির সুপারিশপত্র ছাড়াই ‘গ্রুপ সি’-তে চাকরি করছেন শুনে অবাক হয়ে যান বিচারপতি। শুক্রবার কলকাতা হাইকোর্ট ৮৪২ জন গ্রুপ সি কর্মীর চাকরি বাতিলের নির্দেশ দিয়েছিল। এমনকী তাঁরা যেন শনিবার থেকে স্কুলে ঢুকতে না পারে তাও নিশ্চিত করতে বলা হয়েছিল। সেই নির্দেশের পরই তৎপর হয় স্কুল সার্ভিস কমিশন। বিজ্ঞপ্তি দিয়ে প্রথম দফায় ৫৭ জনের চাকরি বাতিল করা হয়েছে।
হাইকোর্ট যে ৮৪২ জনের চাকরি বাতিল করেছে তাঁদের মধ্যেই ছিলেন ৫৭ জন। এই ৫৭ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, কমিশনের সুপারিশ ছাড়াই চাকরি পেয়েছিলেন তাঁরা। শুক্রবার বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসে মামলার শুনানির সময় বিষয়টি সামনে আসে। এ কথা জানার পর কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় বিস্ময় প্রকাশ করেন। ওই চাকরিজীবীদের সুপারিশপত্র ঠিক কে দিয়েছেন, তা নিয়ে মন্তব্যের পর শনিবার দুপুর ১২টার মধ্যে ৮৪২ জনের মধ্যে তালিকা প্রকাশ করার কথা বলেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। সেই মতো গ্রুপ সি-র ৮৪২ জন চাকরিপ্রার্থীর মধ্যে ৫৭ জনের তালিকা প্রকাশ করে চাকরি বাতিলের কথা জানানো হয়। শনিবার এই মর্মে বিজ্ঞপ্তি জারি করে স্কুল সার্ভিস কমিশন বা এসএসসি।
৫৭ জনকে এসএসসি সুপারিশপত্রই দেয়নি বলে জানায়। যার প্রেক্ষিতে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় নির্দেশ দেন, যে হেতু এসএসসি সুপারিশপত্র দেয়নি, তাই ওই ৫৭ জনের চাকরি কলকাতা হাই কোর্ট বাতিল করেছে, এই মর্মে বিজ্ঞপ্তি দিক এসএসসি। এর পরেই এসএসসি নিজেদের ওয়েবসাইটে ওই ৫৭ জনের চাকরি বাতিল নিয়ে বিজ্ঞপ্তি দিল তারা। ই ৫৭ জন কারা, তাঁদের নাম কী, রোল নম্বর কী ছিল। এখন তাঁরা কোন স্কুলে কর্মরত রয়েছেন, তার তথ্য তালিকায় প্রকাশ করা হয়েছে। ওই ৫৭ জনের কাছে কমিশনের সুপারিশপত্র নেই। অথচ নিয়োগপত্র রয়েছে!
২০১৬ সালের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় গ্রুপ সি-তে চাকরি পেয়েছিলেন ২০৩৭ জন। আর এবার গ্রুপ সি তে কর্মরত ৮৪২ জনের চাকরি বাতিল করা হয়েছে। মূলত ওএমআর শিট বিকৃত করার অভিযোগেই এই নির্দেশ দেন বিচারপতি। আর এই ইস্যুতেই স্পষ্ট করা হল, ‘চাকরিচ্যুতদের কেউ স্কুলে ঢুকতে পারবেন না , স্কুলের জিনিসেও হাত দিতে পারবেন না।’ গ্রুপ সি-তে নিযুক্ত ৪১.৩৩ শতাংশের চাকরিই বাতিল করল হাইকোর্ট।