নতুন প্রজন্ম মোবাইলে আসক্ত। পাঠ্য বই ঠাড়া অন্য বই তারা উল্টে-পাল্টে তেমন দেখে না। এমন অভিযোগ যতই থাক কলকাতা বইমেলা যেন আবেগের নাম।
নতুন বইয়ের গন্ধ, একসঙ্গে এতগুলো স্টলে এত রকম বই দেখতে পাওয়ার মধ্যে যেন ভীষণ একটা আনন্দ আছে। বইমেলা শুধু বই কেনা নয়, বই দেখাও বটে।
কিন্তু সেই বইমেলা কি ওঁরা ব্রাত্য? এমনই অভিযোগ শারীরিক ভাবে অসমর্থ বইপ্রেমীদের। ওঁদের কেউ জন্ম থেকেই বিশেষভাবে সক্ষম। কেউ আবার বয়সের ভারে, কেউ আবার অসুস্থতায় হাঁটাচলার শক্তি হারিয়েছেন। কিন্তু বইয়ের প্রতি অনুরাগ তো তাতে কমেনি। কমেনি বইমেলা ঘোরার ইচ্ছে, একেবারে নিজের মতো করে।
বিশেষভাবে সক্ষম এই মানুষজনদেরই প্রশ্ন, বইমেলা সত্যি কি তাঁদেরও? অভিযোগ, শৌচাগার থেকে শুরু করে বইমেলার অধিকাংশ স্টলেই প্রবেশের ক্ষেত্রে বাধা রয়েছে বিশেষভাবে সক্ষমদের। কেন?
সমাজকর্মী তথা প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের অধ্যাপিকা প্রিয়াঙ্কা দে জানান, তাঁকে হুইল চেয়ারে চলাচল করতে হয়। কলেজে পড়ান। কিন্তু চেষ্টা করেও বহু স্টলে ঢুকতেই পারেন না। তাঁর অভিযোগ, কিছু ক্ষেত্রে বড় বড় বইয়ের স্টলে র্যাম্প তৈরি করা হয়েছে। র্যাম্পের পরেই কোলাপসিবল গেটের নিচের অংশ পেরিয়ে যাওয়াটা সমস্যাজনক হয়ে ওঠে। প্রিয়াঙ্কাদেবীর কথায়, তিনি গিল্ডকে বলেছেন। আশ্বাস মিললেও কাজ হয়নি। অভিযোগ আরও এক বিশেষভাবে সক্ষম অধ্যাপতেক গলাতেও। তাঁর আক্ষেপ, প্রতিবন্ধকতা নিয়ে লিটল ম্যাগাজিন প্যাভিলিয়নেঢোকাই সম্ভব নয়। কারণ, সেখানেও র্যাম্প নেই। এমনকী বইমেলার ‘গিল্ড’ অফিসেও র্যাম্প নেই বলেই দাবি অনেকের।
যদিও বিশেষভাবে সক্ষমদের জন্য খানিকটা সমস্যা থাকলেও বহু ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলেই পালটা দাবি করেছেন ‘পাবলিশারস অ্যান্ড বুক সেলারস গিল্ড’ সভাপতি ত্রিদিব চট্টোপাধ্যায়। তাঁর দাবি, ‘আমি তো দেখছি না কোথাও র্যাম্প নেই! বহু বড় স্টলে ব্যবস্থা রয়েছে। ছোট বইয়ের স্টলে তো র্যাম্পের ব্যবস্থা করা কঠিন। শৌচালয় নিয়ে একটা সমস্যা ছিল। সেটাও মিটেছে। যাঁরা অভিযোগ করছেন, আর একবার দেখে নিন। আসুন বইমেলায়, অসুবিধা হবে না।’