প্রশান্ত মহাসাগরের বুকে একটুকরো হিন্দি ভাষাভাষির দেশ!

ভারতের বাইরে কোনও দেশের সরকারি ভাষা হিন্দি! ভেবে অবাক হবেন যে কোনও ভারতীয়। তবে ওশিয়ানিয়া মহাদেশের অন্তর্গত দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরের উপর ছোট্ট দ্বীপরাষ্ট্র ফিজিতে যেন রয়েছে এক টুকরো হি¨ুস্তান।
এ দেশে সরকারি ভাষা হিসাবে স্বীকৃতি পেয়েছে হিন্দি। বর্তমানে এই দেশে তিনটি সরকারি ভাষা রয়েছে। ইংরেজি, ফিজিয়ান এবং ফিজি হিন্দি। তথ্য বলছে, এদেশের ৩৮ শতাংশই হিন্দিভাষী। দেশের অধিকাংশ মানুষ হিন্দিতে কথা বলতে স্বচ্ছন্দ। ২০২১ সালের জনগণনা অনুযায়ী, এই দ্বীপরাষ্ট্রে মোট জনসংখ্যা ৯ লক্ষ ২৫ হাজার। ফিজির বাসিন্দাদের মধ্যে অনেকেই ভারতীয় বংশোদ্ভূত। এঁরা কেউ কিন্তু প্রবাসী ভারতীয় নন। ফিজির স্থায়ী নাগরিকত্ব রয়েছে তাঁদের।১৯৫৬ থেকে ১৯৮০ সাল পর্যন্ত ভারতীয় বংশোদ্ভূতেরাই ফিজিতে সংখ্যাগরিষ্ঠ ছিলেন। পরে অবশ্য তাঁদের সংখ্যা কিছুটা কমে। এই দেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতেও ভারতীয়েরা সক্রিয়। দ্বীপটির প্রথম ভারতীয় বংশোদ্ভূত প্রধানমন্ত্রীর নাম মহেন্দ্র চৌধরি। ১৯৯৯ সালে প্রধানমন্ত্রীর চেয়ারে বসেন তিনি।
বর্তমানেও প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপটি ভারতীয় সংস্কৃতির ছোঁয়া রয়েছে। ফিজির ভারতীয় বংশোদ্ভূতদের ইতিহাস ঘাঁটলে দেখা যায়, বেশির ভাগই আওয়াধি এবং ভোজপুরি সংস্কৃতির বাহক। উত্তর ভারতের হিন্দি বলয় থেকে সে দেশে চলে গিয়েছিলেন তাঁদের পূর্বপুরুষেরা। অতীতে মূলত কাজের সন্ধানেই ফিজি দ্বীপে ভিড় করতেন ভারতীয়েরা। লখনউ, কানপুর, ফৈজাবাদ, গোরক্ষপুর, গাজিপুর, বালিয়া, সুলতানপুর, শাহবাদ, সিওয়ান থেকে দলে দলে শ্রমিক পাড়ি দিতেন ফিজিতে। তাঁদের বংশধরেরাই এখন ফিজির জনসংখ্যার একটা বড় অংশ। দক্ষিণ ভারতের তেলুগু এবং তামিলভাষী কিছু মানুষও ফিজিতে আছেন। এ ছাড়া আছেন আফগানিস্তান, নেপালের আদি বাসিন্দারা।১৮৭৯ থেকে ১৯১৬ সালের মধ্যে দক্ষিণ এশিয়া থেকে এক দল মানুষ আখের বাগানে কাজ করতে ফিজিতে চলে গিয়েছিলেন। তাঁরাই দেশটির জনসংখ্যা বৃদ্ধি করেছেন। অনেকে আর ভারতে ফেরেননি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

5 × two =