বৃহস্পিতবার কোচবিহারের সভা থেকে গত বিধানসভা ভোটের সময়কার শীতলকুচির প্রসঙ্গ টানলেন তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই সূত্রে বিঁধলেন সদ্য পদত্যাগী পুলিশকর্তা তথা লোকসভা ভোটে বীরভূম কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী দেবাশিস ধরকে। কোচবিহারের তৃণমূল প্রার্থী জগদীশচন্দ্র বসুনিয়ার সমর্থনে সভা থেকে বৃহস্পতিবার মমতা এ-ও অভিযোগ করেছেন, ওই পুলিশকর্তার বিষয়ে বিভাগীয় শাস্তি ছিল, ভিজিল্যান্স ছিল, রাজ্য সরকারের আপত্তি সত্ত্বেও কেন্দ্রীয় সরকার তাঁর ভিজিল্যান্সে ‘ক্লিয়ারেন্স’ দিয়েছে।
মমতা বলেছেন, ‘শীতলকুচিতে নির্বাচনের সময়ে লাইনে দাঁড়ানো পাঁচ জনকে গুলি করে মেরেছিল। ভোট চলাকালীন ছুটে এসেছিলাম। যে লোকটির নির্দেশে হয়েছিল, তাঁর বিরুদ্ধে সরকারের দু’টি ডিপি চলছে। ভিজিল্যান্স ক্লিয়ার হয়নি। কিন্তু ভারতবর্ষের সরকার তাঁকে ক্লিয়ারেন্স দিয়ে দিয়েছে! কোনও আইনকানুন কিছু মানে না।’ এর পরেই মমতা বলেন, ‘শীতলকুচিতে গুলি চালিয়ে এত মানুষ মেরেও হাতের রক্ত মোছেননি। তিনি আবার বীরভূমে গিয়ে দাঁড়িয়েছেন। আবার বলছেন, এসডিপিও ছিলেন। সো হোয়াট?’
এদিন শীতলকুচির ঘটনা ছাড়াও আরও নানাবিধ বিষয়কে তুলে ধরে অলআউট আক্রমণ করেছেন মমতা। যা নিম্নরূপ:
নিশানায় নিশীথ
নাম না করে কোচবিহারের বিজেপি প্রার্থী নিশীথ প্রামাণিককেও এদিন নিশানা করেন মমতা। বলেন, ‘আরও এক জন বাবু আছে। আমরা দল থেকে তাড়িয়ে দিয়েছিলাম। আমাদের দলে ছিল আপদ। আর এখন বিজেপিতে গিয়ে হয়েছে সম্পদ। তোমার বিরুদ্ধে কী কী অভিযোগ আছে বলে দেব? সমস্ত কেস বলে দেব?’
প্রতিপক্ষ কারা?
মমতা বুঝিয়ে দিয়েছেন, বাংলায় তাঁর দলের লড়াই শুধু বিজেপির বিরুদ্ধে নয়। তাঁর কথায়, ‘আমরা লড়ছি সিপিএম, কংগ্রেস, বিজেপি আরও অন্যান্য ছোট ছোট পার্টি, ইডি, সিবিআই, ইনকাম ট্যাক্স, এনআইএ-এর বিরুদ্ধে।’ তৃণমূলনেত্রী এ-ও স্পষ্ট করে দেন, বাংলায় বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’ নেই। ওটা সর্বভারতীয় স্তরের বিষয়। তাঁর কথায়, ‘ইন্ডিয়া নামটাও আমার দেওয়া। সবটা আমি করে দিয়েছিলাম।’
থানায় যান
বিজেপি ভয় দেখালেই থানায় ডায়েরি করার পরামর্শ দিলেন মুখ্যমন্ত্রী তথা পুলিশমন্ত্রী মমতা। তিনি বলেন, ‘কোনও থানা যদি অভিযোগ না নেয়, তবে সরাসরি আমাকে জানাবেন। আমি দেখব।’
আপনাদের ২১ টাকা চাই?
মমতা বলেন, ‘ওরা ইডির নেওয়া টাকা জনতাকে দেবে বলেছে। কত টাকা করে পাবেন বাংলার জনগণ। ২১ টাকা করে। আপনাদের কি ২১ টাকা চাই না কি বাংলাকে বাঁচানো চাই! না কি দেশ বাঁচানো চাই। মনে রাখবেন বাংলাই দেশকে বাঁচাবে। বাংলা ক্ষমতা অনেক।’
টেলি প্রম্পটারে বাংলা বলে ওরা
ভাষা নিয়ে বিজেপির নেতাদের কটাক্ষ মমতার। বলেন, ‘ওরা চার লাইন বাংলা বলে। আপনারা অবাক হয়ে ভাবেন, আরে ওরা দিল্লি থেকে এসে বাংলা বলছে! আসলে টেলিপ্রম্পটারে বাংলা বলে ওরা। আমাদের মতো নয়।’ বিজেপিকে বহিরাগত বলেও ইঙ্গিত করলেন তিনি।