‘দাদু’-র জন্য হাওড়া পৌর নিগমের নির্বাচন হচ্ছে না, রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধান রাজ্যপালকে কটাক্ষ ফিরহাদের

রাজীব মুখোপাধ্যায়, হাওড়া

উত্তর হাওড়া তৃণমূল কংগ্রেসের রাজনৈতিক কর্মী সম্মেলনে উপস্থিত হয়ে রাজ্যপাল জগদীপ ধনকরকে ‘দাদু’ বলে কটাক্ষ করেন পরিবহন মন্ত্রী ও কলকাতা পৌর নিগমের মেয়র ফিরহাদ হাকিম। তিনি রাজ্যপালকে ‘দাদু’ বলে সম্বোধন করে বলেন, ‘দাদু’-র জন্যই আটকে আছে হাওড়ার পৌর ভোট। তবে তৃণমূল বোর্ড যা কাজ করেছে তাতে নির্বাচন হলে হাঁসতে হাঁসতে জিতে যাবে। তিনি রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধান রাজ্যপালকে বিদ্রুপ করে বলেন, এখন তাকে বারবার ডাকছেন তিনি। দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুমতি নিয়ে তিনি শীগ্রই কয়েকদিনের মধ্যেই ওনার সঙ্গে কথা বলতে যাবেন। ওনার সঙ্গে দেখা করবেন বলেই দাবি করেন তিনি। তিনি আরও বলেন, এবার দেখা করতে গেলেই রাজ্যপাল হাওড়া-বালি পৃথকীকরণ বিলে সই করে দেবেন। মন্ত্রী অভিযোগ করে বলেন, উনি আটকে রেখেছেন বিলটা তবে হাওড়া পৌর নিগমের নির্বাচন খুব শিঘ্রই হবে বলে তিনি আশাবাদী।

পাশাপাশি দলীয় মঞ্চ থেকে ২০২৪-এর লোকসভা ভোটের জন্য দলীয় কর্মীদের প্রস্তুতি নেওয়ার নির্দেশ দেন। তিনি বলেন, নেতাজি স্বাধীনতা সংগ্রামে দেশের মানুষকে ‘দিল্লি চলো’ বলে ডাক দিয়েছিলেন। ঠিক তেমনই আগামী লোকসভা ভোটে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দিল্লি চলো-র ডাক দিয়ে এগিয়ে যেতে হবে। পাশাপাশি মন্ত্রী বলেন, ২০১৯-র লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি যে ১৮ টা আসনে জয়ী হয়েছিল। সেই সব আসনে তাদের হারিয়ে বাংলা থেকে শূন্য করতে হবে। সবকটি আসনে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থীকে জয়ী করে আনতে হবে। এটাই মানুষের দাবি বলে জানান মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম।

যদিও মন্ত্রীর কটাক্ষকে যথার্থ বলে দাবি করেন বিজেপির রাজ্য নেতা উমেশ রাই। তিনি বলেন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে মন্ত্রী ‘মা’ বলে সম্বোধন করেন তাহলে রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধান ওনার দাদুই হবেন। আর সেই দাদু যখন দেখেছেন নাতির ত্রুটি, তিনি তার অধিকার বলে সেই বিলে সই করেননি। এই সংকটের জন্য মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমকেই দায়ী করেন উমেশ। তিনি বলেন, এই মন্ত্রী বালিতে এসে সাধারণ মানুষকে বালিকে ফের পৃথক করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে এসেছিলেন। পরে আবার বালির উন্নয়নের দোহাই দিয়ে হাওড়া পৌর নিগমের সঙ্গে সংযুক্ত করেন মন্ত্রী ও রাজ্য সরকার। তারপরেও উন্নয়ন না হওয়াতে আবার বালিকে আলাদা করে সেই অনুযায়ী ডিলিমিটেশন করে ১৬টি ওয়ার্ডকে আলাদা করার চেষ্টা করছেন। এটা রাজ্য সরকারের ও রাজ্য প্রশাসনের ব্যর্থতা বলেই দাবি করেন বিজেপি নেতা।

তিনি একে তুঘলকি আচরনের সঙ্গেই তুলনা করেন। উল্লেখ্য, রাজ্যপালের পক্ষ থেকে বারংবার হাওড়া বালি পৃথকীকরণ বিলের প্রসঙ্গে বেশ কয়েকটি প্রশ্ন তুলে ব্যাখ্যা চাওয়া হয় রাজ্য সরকারের থেকে। সেই ব্যাখ্যা না পাওয়ার দরুন রাজ্যপাল এখনও সেই বিলে সই করেন নি বলে রাজভবন সূত্রে খবর। পাশাপাশি তিনি বারংবার বিধানসভার অধ্যক্ষের থেকে বিল সংক্রান্ত অনেক তথ্য চেয়ে পাঠিয়েও পাননি বলে সংবাদ মাধ্যমের সামনেও অভিযোগ করেন প্রকাশ্যেই। রাজ্যপাল ও শাসকদলের মধ্যে পড়ে হাওড়া পৌরনিগমের নির্বাচন এখনো অনিয়শ্চিত বলেই অনুমান রাজনৈতিক মহলের।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

17 − sixteen =