রাজীব মুখোপাধ্যায়, হাওড়া : রাজ্যে পান মশলা ও গুটখা বিক্রি নিষিদ্ধ হলেও নজরদারি নেই রাজ্য প্রশাসনের। প্রকাশ্যেই দেদার বিক্রি চলছে। নেই কোনো ধরপাকড়। এই গুটখা বিতর্কে জড়ালো হাওড়া ব্রিজ। পান বা গুটখার পিকে ঐতিহ্যবাহী হাওড়া ব্রিজের পিলার ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া নিয়ে বিতর্ক চলে আসছে বছরের পর বছর ধরে। আর সেই বিতর্কের অবসান ঘটাতে কলকাতা বন্দর কর্তৃপক্ষ হাওড়া সেতুর প্রতিটি পিলার নিচ থেকে ৬ ফুট পর্যন্ত ঘিরে ফেলেছে। কেউ যদি পান বা গুটখা খেয়ে পিক ফেলেন, তা হলে আর সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত হবে না হাওড়া সেতুর স্তম্ভগুলি। শুধু তাই নয় সেতু ধরে কলকাতার দিক থেকে হাওড়া স্টেশনের দিকে হেঁটে চললে দেখা যাবে ব্রিজের উপরে হলুদ বোর্ডে কালো কালি দিয়ে একাধিক আবেদনমূলক কথা লেখা রয়েছে। উল্লেখ রয়েছে, এই সেতু সারা ভারতবর্ষে শুধু নয়, বিশ্বে আর দ্বিতীয় নেই। ঝুলন্ত এই সেতুকে নাগরিক এবং পথচলতি মানুষকে রক্ষা করার আহ্বান জানানো হয়েছে।
লেখা রয়েছে দুই পারকে মিলিয়ে এই সেতু, দুই পারের সৌন্দর্য রক্ষার দায় সকলেরই। প্রতিটি পিলারকে রক্ষার জন্য বিশেষ ঢাকনা লাগানো হয়েছে। তার উপরে থুথু, পিক না ফেলার আবেদন করা হয়েছে। প্রশ্ন উঠছে, কে সেই আবেদন শুনবে ? না শুনলেই বা কে পদক্ষেপ নেবে ? হাওড়া সেতুতে উঠলেই পথচারীদের দু’ধারে হাঁটা পথে দু’পা এগোলেই বোঝা যায় হুঁশ ফেরেনি মানুষের বিন্দুমাত্র। ঐতিহ্যবাহী রবীন্দ্র সেতুর পিলার রক্ষা করতে যে টিন বা মোটা আস্তরণ দিয়ে ঘিরে ফেলা হয়েছে, তার উপরেই যথেচ্ছ পানের বা গুটখার পিক ফেলেছে পথচলতি মানুষ। তারফলে ক্রমশ ক্ষয়ে যাচ্ছে সেই মোটা আস্তরণ। দু’দিকে সিসিটিভি এবং পুলিশ থাকলেও এবিষয় কারোর নজরদারি নেই বিন্দুমাত্র। তাই সেতুর উপর দু’দিকে গঙ্গার ধার লাগোয়া লোহার রেলিং ভর্তি পিক। পিক-এর জন্য অল্পবিস্তর লোহাগুলিতে ক্ষতি হচ্ছে।
সম্প্রতি, এক আইএএস আধিকারিক গুটখার বিজ্ঞাপন করা একাধিক অভিনেতাকে কটাক্ষ করে টুইট করেছেন এই রবীন্দ্র সেতুর পুরনো পান, গুটখার পিকের ফলে ক্ষতি হওয়া পিলারের ছবি দিয়ে। পোর্ট ট্রাস্টকেও কটাক্ষ করেছেন হাওড়া ব্রিজের নিচের দিকে লাল রং করা নিয়ে। তিনি টুইটে দাবি করেন, পিক ফেললে বোঝা যাতে না যায়, তাই এই লাল রং করা হয়েছে। এই টুইট নিয়ে নেট-নাগরিকদের মধ্যে যখন বিতর্ক, তখন ‘একদিন’ সংবাদ পত্র তুলে আনল হাওড়া সেতুর বর্তমান চিত্র। এই প্রসঙ্গে কলকাতা বন্দরের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক সঞ্জয় মুখোপাধ্যায় জানিয়েছেন, এই সমস্যার নিষ্পত্তি ২০১৪ সালেই হয়ে গিয়েছে। পান, গুটখার পিকের হাত থেকে পিলার বাঁচাতে ক্যাপিং সিস্টেম করে দেওয়া হয়। ২০২১ সালে সেটিকে আবার পরিবর্তন করা হয়েছে। গুটকা বা পানের পিক থেকে ব্রিজকে অনেক আগেই সুরক্ষিত করা হয়েছে।