অসুস্থ হলেই এসএসকেএম!
রাজ্যের সরকারি হাসপাতালে এমন হাই প্রোফাইল রোগীর সংখ্যা কত? জানতে চাইল হাইকোর্ট। এ ব্যাপারে রিপোর্ট চেয়ে পাঠিয়েছে হইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টি এস শিবজ্ঞানমের ডিভিশন বেঞ্চ। বিভিন্ন মামলায় অভিযুক্ত চিকিৎসাধীন প্রভাবশালীদের স্বাস্থ্যের বর্তমান কী অবস্থা এবং তাঁদের সুস্থ হতে কতদিন সময় লাগবে, তাও হলফনামা আকারে এসএসকেএমের ডিরেক্টরকে জানানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
সম্প্রতি নিয়োগ দুর্নীতি সংক্রান্ত একাধিক মামলায় হাই কোর্টে এসএসকেএমের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলে ইডি। পরে এই এসএসকেএম হাসপাতাল নিয়ে জোড়া জনস্বার্থ মামলাও দায়ের হয়। মামলাকারীর দাবি, বিভিন্ন দুর্নীতিতে যুক্ত থাকা ব্যক্তিদের আশ্রয়স্থল হয়ে দাঁড়িয়েছে এসএসকেএম হাসপাতাল।
সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবার শুনানির সময় জেল হেপাজত থেকে প্রভাবশালীদের এসএসকেএম হাসপাতালে এনে চিকিৎসা প্রসঙ্গে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘কাউকে গ্রেপ্তার করার পরেই তাঁর স্বাস্থ্য পরীক্ষা হয়। তিনি সুস্থ হলে তাঁকে সঙ্গে সঙ্গে জেলে পাঠানো হয়। শরীর খারাপ হলে জেলের হাসপাতালে পাঠানো হয়, আরও শরীর খারাপ হলে বড় হাসপাতালে পাঠানো হয়। তিন চার দিন পরেই জেল কর্তৃপক্ষ চিকিৎসকদের কাছ থেকে রিপোর্ট চেয়ে পাঠায়। সুস্থ হলে আবার জেলে ফেরত পাঠানো হয়।’ প্রধান বিচারপতির মন্তব্য, এসএসকেএম হাসপাতাল প্রভাবশালী অভিযুক্তদের আশ্রয়স্থল হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে বলে যে অভিযোগ উঠেছে, তা সত্যি হলে সেই অভিযোগ গুরুতর।
বৃহস্পতিবার এসএসকেএম হাসপাতালে বিভিন্ন মামলায় গ্রেপ্তার প্রভাবশালী অভিযুক্তদের চিকিৎসা পদ্ধতি নিয়ে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্যও করেন প্রধান বিচারপতি। প্রধান বিচারপতি জানতে চান, কেন শিশুদের জন্য বরাদ্দ বেডে রাখা হয়েছিল সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রকে? হালকা মেজাজে কার্যত ব্যঙ্গ করেই তিনি বলেন, এসএসকেএম হাসপাতালে প্রভাবশালীদের রাখার জন্যই আলাদা ওয়ার্ড তৈরি করা হোক। এই সব মন্তব্য রাজ্যের পক্ষে যথেষ্টই অস্বস্তিকর। অভিযোগ, সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র সহ কেন্দ্রীয় সংস্থার হাতে গ্রেপ্তার হওয়া একাধিক অভিযুক্তর আশ্রয়স্থল হয়ে দাঁড়িয়েছে এসএসকেএম হাসপাতাল। দীর্ঘদিন ধরে এই প্রভাবশালীরা হাসপাতালের বেড দখল করে রেখেছেন। এ নিয়ে দায়ের হয়েছে জনস্বার্থ মামলা।
পাশাপাশি এদিন প্রধান বিচারপতি টি এস শিবজ্ঞানম বারবারই জানতে চান, যে প্রভাবশালী অভিযুক্তরা এসএসকেএম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন, তাঁদের সুস্থ হতে কতদিন সময় লাগবে? তিন মাস না আরও চার মাস? এর জবাবে সরকারি আইনজীবী তপন মুখোপাধ্যায় জানান, সেটা চিকিৎসকরাই বলতে পারবেন।