“অনেকদিন ধরেই জুনিয়রদের মারধর করেন” বাংলাদেশ মহিলা দলের অধিনায়ক সম্বন্ধে বিস্ফোরক মন্তব্য প্রাক্তন সতীর্থের

বাংলাদেশ মহিলা ক্রিকেটে ঝড় বয়ে গিয়েছে প্রাক্তন তারকা পেসার জাহানারা আলমের বিস্ফোরক অভিযোগে। এক সময় জাতীয় দলের অন্যতম মুখ ছিলেন তিনি। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে দল থেকে বাইরে। এবার তিনি মুখ খুলেছেন দলের অধিনায়ক নিগার সুলতানা জ্যোতির বিরুদ্ধে। জাহানারার অভিযোগ, জ্যোতি শুধু কর্তৃত্ব ফলান না, বরং নিয়মিতভাবে জুনিয়র ক্রিকেটারদের শারীরিক ও মানসিকভাবে নিপীড়ন করেন।

সিডনিতে বসবাসরত জাহানারা বাংলাদেশের এক সংবাদমাধ্যমে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, “জ্যোতি অনেক দিন ধরেই জুনিয়রদের মারধর করে। বিশ্বকাপ চলাকালীনও কয়েক জন জুনিয়র এসে কাঁদতে কাঁদতে বলেছে, ‘না আপু, আর কিছু করব না, না হলে আবার থাপ্পড় খেতে হবে।’ কেউ কেউ জানিয়েছে, আগের দিনই মার খেয়েছে।” এমনকি দুবাই সফরের সময়ও এক জুনিয়রকে নিজের রুমে ডেকে নিয়ে চড় মারার অভিযোগ করেছেন তিনি।

জাহানারার কথায়, “এক বার সিলেটে ভয়ানক গরমে ফিটনেস সেশন শেষে মেয়েরা হাঁটতেও পারছিল না। তখন দেখি, এক জুনিয়র জ্যোতির কিটব্যাগ টেনে নিয়ে যাচ্ছে। ওদের বাধ্য করা হয় এসব কাজ করতে। বহুবার শুনেছি জ্যোতিকে বলতে— ‘এই বসে আছিস কেন? যা, আমার ব্যাগ নামা।’ এমনকি ড্রেসিংরুমে জুনিয়রদের দিয়ে নিজের মাথা টেপানো ও চুলে তেল দেওয়ানোর ঘটনাও ঘটেছে।”

অভিযোগ এখানেই শেষ নয়। জাহানারা বলেন, জ্যোতি অনেক সময় ফিটনেস পরীক্ষায় অংশই নেন না, তবু বোর্ড থেকে ছাড় পান। সহকারী কোচ নাসিরুদ্দিন ফারুকের সঙ্গে আলাদা করে ব্যাটিং অনুশীলন করেন, যা তিনি ‘ব্যাকিং’-এর ফল বলেই দাবি করেন। আরও এক ধাপ এগিয়ে জাহানারা অভিযোগ করেছেন, আবাহনী ক্লাবের হয়ে খেলার সময় জ্যোতি সতীর্থ শরিফার সঙ্গে মারামারিতে জড়িয়ে তাঁকে এমনভাবে আঘাত করেন যে, পরে অস্ত্রোপচার করতে হয় শরিফাকে।

তবে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) জাহানারার এই সমস্ত অভিযোগ সম্পূর্ণ অস্বীকার করেছে। বোর্ডের দাবি, তাঁর অভিযোগগুলো ভিত্তিহীন, মনগড়া এবং বোর্ডের ভাবমূর্তি নষ্ট করার উদ্দেশ্যে করা হয়েছে। বিশ্বকাপে অংশ নেওয়ার পরপরই এমন বিতর্ক তৈরি হওয়ায় বাংলাদেশ মহিলা ক্রিকেট এখন কঠিন সময়ের মধ্যে পড়েছে। একদিকে জাহানারার প্রকাশ্যে বিস্ফোরণ, অন্যদিকে বোর্ডের ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা— ফলে দলের ভেতরের অস্থিরতা আরও প্রকট হয়ে উঠেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

five × one =