এলাহি ব্যবস্থা অটোক জেলে, খুশি প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী, তোষাখানা মামলায় গ্রেপ্তার হওয়ার পর থেকে প্রাক্তন পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের ঠাঁই হয়েছে অটোক জেল। যে ইমরান তাঁর খেলোয়াড় জীবনে সবুজ ঘাসের পিচে বল হাতে আগুন ছুটিয়েছেন, বিলাসবহুল জীবন কাটিয়েছেন, সেই ইমরানকেই জীবনের অন্ধকার দিক দর্শন করতে হয়েছে। জেলের কুঠুরিতে দিন কাটাতে হচ্ছিল ‘কাপ্তান’কে। থাকতে কষ্ট হচ্ছিল ইমরানের। যে সেলে রয়েছেন ইমরান, সেখানে রয়েছে পোকামাকড়, মাছি। প্রাণ ওষ্ঠাগত হওয়ার জোগাড় হয়েছে তাঁর। ইমরানের কাতর অনুরোধের পরে বরফ গলে। জেল কর্তৃপক্ষ বিশ্বজয়ী অধিনায়কের জন্য এলাহি আয়োজন করে। যার ফলে বেজায় খুশি হয়েছেন পিটিআই চেয়ারম্যান।
জানা গিয়েছে, রবিবার প্রাক্তন পাক প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে অটোক জেলে দেখা করতে গিয়েছিলেন পাঞ্জাব প্রদেশের আইজি (কারা) মিয়াঁ ফারুক নাজির। জেলের আধিকারিকদের বক্তব্য অনুযায়ী, ইমরানের কক্ষে রাখা ক্যামেরাগুলির অবস্থান ভালো করে খতিয়ে দেখেন মিয়াঁ। জেলের আইন মেনে ‘কাপ্তান’কে দেওয়া হয়েছে নতুন ফ্যান, বিছানা, গদি, বালিশ, চেয়ার, বাতানুকূল যন্ত্র, ইংরেজি অনুবাদ-সহ কোরানের একটি কপি, বই, সংবাদপত্র, মধু, সুগন্ধি ইত্যাদি। তবে এখানেই শেষ নয় প্রার্থনা করার জন্য মিলেছে আলাদা কক্ষ। তালিকায় রয়েছে ঝাঁ চকচকে শৌচাগার। যেখানে নতুন বেসিন থেকে শুরু করে ওয়েস্টার্ন টয়লেট সিট, নতুন তোয়ালে, টিস্যু পেপার, সাবানও রয়েছে।
এছাড়াও ইমরানকে চিকিৎসার সব সুবিধা প্রদানের জন্য রয়েছে পাঁচ সদস্যের মেডিক্যাল টিম। কারাগারের আইজির সম্মতিতে তাঁকে দেওয়া হচ্ছে বিশেষ খাবার। খাবার পরিবেশনের আগে তা ভালোভাবে পরীক্ষনিরীক্ষা করে নিচ্ছেন চিকিৎসকেরা। কয়েকদিন আগেই জেলবন্দি স্বামীকে নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন বুশরা বিবি। বিষপ্রয়োগে মেরে ফেলা হতে পারে ইমরানকে, এই আশঙ্কায় চিঠি লিখেছিলেন পাঞ্জাবের স্বরাষ্ট্রসচিবকে। ফলে প্রাক্তন পাক প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তায় কোনও ফাঁক যাতে না থাকে, তার দিকে নজর রাখছে জেল কর্তৃপক্ষ।
এক রিপোর্ট মোতাবেক, অটোক জেলের এই এলাহি আয়োজনে বেজায় খুশি প্রাক্তন পাক অধিনায়ক। পাঞ্জাব প্রদেশের আইজি মিয়াঁ ফারুক নাজিরের কাছে তিনি সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। প্রসঙ্গত, কয়েকদিন আগেই পিটিআই চেয়ারম্যান তাঁর আইনজীবীকে বলেছিলেন, জেলে থাকতে তিনি চান না। ইমরান জানিয়েছিলেন, আমাকে এখান থেকে বের করুন। আমি জেলে থাকতে চাই না। ইমরানের সঙ্গে জেলে সাক্ষাতের পর দেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর আইনজীবী জানিয়েছিলেন, এটি তৃতীয় শ্রেণির জেল। পরিষেবার মান খুব খারাপ। ইমরান খুব কষ্টে দিন কাটাচ্ছেন। সেলে মাছি ও পোকামাকড়ের উৎপাতের অভিযোগ জানিয়েছেন ইমরান।
উল্লেখ্য, তোষাখানা মামলায় গত ৫ অগস্ট পাকিস্তানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীকে তিন বছরের সাজা শুনিয়েছে জেলা ও দায়রা আদালত। এরই পাশাপাশি ১ লক্ষ টাকার জরিমানাও করা হয়েছে তাঁকে। অনাদায়ে আরও ৬ মাস জেলে থাকতে হবে। পাঁচ বছর কোনও নির্বাচনেও লড়তে পারবেন না তিনি।