প্রয়াত পাকিস্তানের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট জেনারেল পারভেজ মুসারফ

দুবাই: প্রয়াত পাকিস্তানের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট জেনারেল পারভেজ মুসারফ । মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৯। দীর্ঘদিন ধরেই অসুস্থ ছিলেন তিনি। ভর্তি ছিলেন দুবাইয়ের হাসপাতালে।
রবিবার পাকিস্তানি সংবাদ মাধ্যম জিও নিউজের তরফে জানানো হয়, পাকিস্তানের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট তথা সেনা প্রধানের মৃত্যু হয়েছে। দুবাইয়ের আমেরিকান হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি। ১৯৪৩-এর ১১ অগস্ট অবিভক্ত ভারতের দিল্লিতে জন্ম পারভেজের। তার পর পাকিস্তানে চলে যায় তাঁর পরিবার। করাচির সেন্ট প্যাট্রিকস হাই ßুñলে পড়াশোনা। লাহোরের ফোরম্যান ক্রিশ্চিয়ান কলেজে উচ্চশিক্ষার পাঠ নিয়ে তিনি যোগ দেন পাকিস্তানের সেনাবাহিনীতে। তার পর ধাপে ধাপে সেনাপ্রধান এবং দেশের ক্ষমতা দখল। ২০০১ থেকে ২০০৮ পর্যন্ত তিনি পাকিস্তানের শাসক ছিলেন। ২০১৯-য়ে তাঁকে দেশদ্রোহিতার দোষে দোষী সাব্যস্ত করা হয়। প্রাণদণ্ড দেওয়া হয় মুশারফকে। কিন্তু পরবর্তী সময়ে মৃত্যুদণ্ড বাতিল হয়।
পরিবারের তরফে জানানো হয়েছে, দীর্ঘ অসুস্থতার কারণেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে। তাঁর দেহ পাকিস্তানে ফিরিয়ে আনা হবে কি না, সে সম্পর্কে এখনও কিছু জানা যায়নি। দীর্ঘদিন ধরেই অসুস্থ ছিলেন পারভেজ মুসারফ। ২০১৬ সাল থেকে দুবাইয়ে চিকিৎসা চলছিল তাঁর। তবে শেষ সময়ে তিনি দেশে ফিরে আসতে চেয়েছিলেন। জীবনের শেষ দিনগুলি পাকিস্তানেই কাটাতে চান বলে ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন। তাঁর পরিবারের তরফেও দেশে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করা হয়েছিল, কিন্তু শারীরিক অসুস্থতার কারণেই মুসারফকে পাকিস্তানে ফিরিয়ে আনা সম্ভব হয়নি।
সাফল্য ও বিতর্কে মোড়া ছিল পারভেজ মুসারফের জীবন। ১৯৯৯ সাল থেকে ২০০৮ সাল অবধি পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট ছিলেন তিনি। তাঁর নির্দেশেই কাশ্মীর দখলের চেষ্টা করে পাকিস্তান সেনা, যার জেরে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে ফের একবার যুদ্ধ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছিল। তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ তাঁকে ক্ষমতা থেকে সরানোর চেষ্টা করলে তিনি নিজেই আগেভাগে নওয়াজ শরিফকে প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে সরিয়ে দেন।
পাকিস্তানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী বেনজির ভুট্টোর হত্যাকাণ্ডের মামলায় অন্যতম অভিযুক্ত ছিলেন মুসারফ। দেশ বিরোধী কার্যকলাপ, বিশ্বাসঘাতকতা ও সংবিধান রদ করার অভিযোগে তাঁকে ২০১৯ সালে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। কিন্তু পরে সেই মৃত্যুদণ্ডের সাজা রদ করে দেওয়া হয়। দীর্ঘদিন ধরেই অসুস্থ ছিলেন পারভেজ মুসারফ। উল্লেখ্য, অ্যামাইলোডোসিস এমন একটি বিরল রোগে আক্রান্ত হয়েছিলেন মুশারফ, যাতে শরীরের বিভিন্ন অঙ্গে অস্বাভাবিক হারে প্রোটিন জমা হতে থাকে এবং শরীরের স্বাভাবিক কার্যকলাপে বাধা সৃষ্টি করে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

nineteen − 1 =