রাজ্য সরকারের সহযোগিতায় মালদায় শুটকি মাছের প্রক্রিয়াকরণের কাজে ব্যাপক সাফল্য মিলছে মাছ ব্যবসায়ীদের। ইংরেজবাজার ব্লকের কাজিগ্রাম গ্রাম পঞ্চায়েতের সাটটারি এলাকায় গত কয়েক বছর ধরে চলছে শুটকি মাছ প্রস্তুতিকরণ এবং প্যাকেটজাত করার কাজ। মালদা থেকে এই শুটকি মাছ উত্তর-পূর্ব ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে রপ্তানি হয়ে থাকে। আর সেই শুটকি মাছের প্রক্রিয়াকরণের ক্ষেত্রে ব্যাপক সাফল্য মিলতে শুরু করেছে মালদার মাছ ব্যবসায়ী থেকে চাষীদের।
উল্লেখ্য, উত্তর- পূর্ব ভারতের সিকিম , নাগাল্যান্ড মণিপুর, মিজোরাম, আসাম রাজ্যগুলিতে এই শুটকি মাছ জনপ্রিয়। পশ্চিমবঙ্গের দার্জিলিং তরাই ডুয়ার্স অঞ্চলের বাসিন্দাদের মধ্যেও শুটকি মাছের চাহিদা রয়েছে। পাহাড়ি এলাকায় শুটকি মাছের চাহিদা থাকলেও মাছের পর্যাপ্ত যোগানের অভাবে তেমনভাবে শুটকি তৈরি হয় না। তাই শুটকি মাছের জন্য পাহাড়ের বাসিন্দাদের নির্ভর করতে হয় সামুদ্রিক মাছের ওপর। সমুদ্রে পর্যাপ্ত পরিমাণে মাছ পাওয়া যায়। সেই মাছ দিয়ে শুটকি তৈরি করে রপ্তানি করা হয় পাহাড়ি অঞ্চলে। এতদিন রাজ্যের অন্যান্য প্রান্ত থেকে শুটকি মাছ পাহাড়ে পাঠানো হতো। কয়েক বছর ধরে মালদা জেলার কিছু ব্যবসায়ী নতুন উদ্যোগ নিয়ে শুটকি মাছ প্রস্তুতিকরণের কাজ শুরু করেছেন। রাজ্যের সমুদ্র তীরবর্তী অঞ্চল থেকে মাছ নিয়ে এসেছে সেগুলিকে শুটকি তৈরি করা হয় মালদায়।
শুটকি প্রস্তুতকারকেরা জানিয়েছেন, মূলত দীঘা, পারদ্বীপ থেকে সামুদ্রিক মাছ গুলি নিয়ে আনা হয়। সেখান থেকেই মাছে লবণ দিয়ে মালদায় নিয়ে আসা হয় মাছ। সাটটারি গ্রামের তৈরি করা হয়েছে শুটকি প্রস্তুত করার হাব। রাজ্য সরকারের সহযোগিতায় এবং ব্যবসায়ীদের উদ্যোগে তৈরি করা হয়েছে এই প্রক্রিয়াকরণ ব্যবস্থা।
শুটকি মাছ প্রক্রিয়াকরণ কাজের সঙ্গে যুক্ত মাছ ব্যবসায়ীদের বক্তব্য, প্রথমে মাছ গুলিকে ভালো করে জলে পরিষ্কার করা হয়। তারপর খোলা আকাশে রোদে শুকাতে দেওয়া হয়। গ্রামের কয়েক একর জমি জুড়ে তৈরি করা হয়েছে মাছ শুকানোর বিশেষ মাচা। বাঁশ দিয়ে তৈরি করা হয়েছে এই মাচা। মাচার উপর শুকোতে দেওয়া হয় মাছ। প্রায় এক সপ্তাহ সময় লাগে মাছের শুটকি তৈরি করতে। শুকনো মাছের কানকো, আঁশ সহ পরিষ্কার করা হয় সুন্দর ভাবে। তারপর সেগুলি গাড়িতে করে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।
মালদা জেলা পরিষদের সভাধিপতি রফিকুল হোসেন জানিয়েছেন, শুটকি মাছ প্রক্রিয়াকরণ কাজে মালদায় অনেক সাফল্য মিলেছে। এই কাজের সঙ্গে এখন অনেক চাষিরা নিজেদের কর্মসংস্থান তৈরি করেছেন। এক্ষেত্রে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে সব রকম ভাবে সহযোগিতা করা হচ্ছে।