২০২১-এ বিধানসভা ভোটে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি ছিল লক্ষ্মীর ভাণ্ডার। সেই বছর সেপ্টেম্বর মাস থেকে এসসি-এসটি সম্প্রদায়ের মহিলাদের জন্য মাসে এক হাজার টাকা এবং বাকিদের জন্য পাঁচশো টাকা করে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে পাঠানো শুরু করে সমাজকল্যাণ দপ্তর। এবার লোকসভা ভোট ঘোষণার অনেক আগেই মুখ্যমন্ত্রী বর্ধিত হারে ভাতার কথা ঘোষণা করেছিলেন। সেই মতো সোমবার থেকে শুরু হচ্ছে প্রতিশ্রুতির রূপায়ণ।
কোভিড-কালে মানুষের হাতে নগদ টাকার জোগান বাড়ানোর জন্য একাধিক উদ্যোগ নিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। রাজ্যের অর্থনীতির পাশাপশি এর ইতিবাচক প্রভাব পড়ে তৃণমূলের ভোটবাক্সেও। পরবর্তী সময়ে জানা যায়, উপভোক্তারা মাসে মাসে এই টাকা হাতে পেয়ে নানা ধরনের কাজে লাগাতে পেরেছেন। প্রতীচী ট্রাস্টের সাম্প্রতিক সমীক্ষা অনুযায়ী, লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের প্রায় ৭৮ শতাংশ উপভোক্তা সংসার খরচ চালাতে এই টাকা কাজে লাগিয়েছেন। প্রায় ৪২ শতাংশ উপভোক্তা টাকা খরচ করেছেন ছেলেমেয়েদের পড়াশোনার জন্য। প্রায় ৩৫.৩ শতাংশ মহিলা পোশাক, প্রসাধনী, খাওয়া-দাওয়ার মতো নিজেদের সাধপূরণ করতে খরচ করেছেন লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের টাকা। সব মিলিয়ে সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নত হয়েছে। এই আবহে গত পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগেই নানা মহল থেকে ভাতা বৃদ্ধির দাবি উঠেছিল।
রাজ্য বাজেটের ঘোষণা মত এপ্রিল মাস থেকেই রাজ্যের লক্ষ্মীর ভান্ডার প্রকল্পের উপভোক্তারা বর্ধিত হারে ভাতা পাবেন। এর জন্য যাবতীয় প্রস্তুতি ইতিমধ্যেই সম্পন্ন করা হয়েছে। ১ এপ্রিল নিয়মমাফিক ব্যাংক বন্ধ থাকায় ২ এপ্রিল থেকেই উপভোক্তাদের একাউন্টে ওই টাকা পাঠানো শুরু হবে বলে অর্থ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে। মোট ২ কোটি ১৬ লক্ষ মহিলা বর্ধিত হারে লক্ষীর ভাণ্ডারের ভাতা পাবেন। এর ফলে এই খাতে রাজ্য সরকারের প্রতি মাসে খরচ ও প্রায় দ্বিগুণ হারে বাড়তে চলেছে। মার্চ মাসে যেখানে এই ভাতার জন্য ১ হাজার ১৮৭ কোটি টাকা খরচ হয়েছিল, সেখানে এপ্রিলে বর্ধিত হারে ভাতা দিতে ২ হাজার ২২৮ কোটি খরচ হবে বলে জানা গিয়েছে।
উল্লেখ্য আর আমি আর্থিক বছরের রাজ্য বাজেটে মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব¨্যােপাধ্যায় লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্পের ভাতা বাড়ানোর কথা ঘোষণা করেন। যাঁরা এতদিন ৫০০ টাকা করে পেতেন, তাঁরা এপ্রিল মাস থেকে দ্বিগুণ হারে অর্থাৎ এক হাজার টাকা করে ভাতা পাবেন। তপশিলি জাতি ও উপজাতির মহিলাদের ভাড়া এক হাজার ১০০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১২০০ টাকা করা হয়েছে।