নিজস্ব প্রতিবেদন, বাঁকুড়া: স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের আবেদন নিয়ে বারবার দুয়ারে সরকার শিবিরে হাজির হয়েছিলেন বাঁকুড়ার কেঞ্জাকুড়া গ্রামের অশীতিপর বৃদ্ধা মুক্তা দত্ত। কিন্তু স্বাস্থ্যসাথী কার্ড মেলেনি। অবশেষে সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হস্তক্ষেপে মাত্র ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই মুক্তা দত্তর বাড়ি বয়ে কার্ড পৌঁছে দিলেন প্রশাসনিক আধিকারিকরা। যে সমস্যা মাত্র ২৪ ঘণ্টায় সমাধান করতে পারেন তৃণমূল নেত্রী সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়, সেই সমস্যা সমাধানে কেন বারবার ব্যর্থ প্রশাসনের দুয়ারে সরকার? তবে কী শাসকদলের হস্তক্ষেপ ছাড়া মানুষের সমস্যা সমাধানে প্রশাসন ঠুঁটো জগন্নাথ? প্রশ্ন তুলছে বিরোধীরা।
বাঁকুড়া এক নম্বর ব্লকের কেঞ্জাকুড়া গ্রামের বাসিন্দা মুক্তা দত্ত। স্বামীর মৃত্যুর পর নিঃসন্তান মুক্তা দত্ত দীর্ঘদিন ধরেই কেঞ্জাকুড়া গ্রামে বাপের বাড়িতে থাকেন। তাঁত চালিয়ে কোনওক্রমে চলে তাঁর একার সংসার। কিন্তু সম্প্রতি চোখে সমস্যা দেখা দেওয়ায় সেই তাঁতের কাজ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সমস্যায় পড়েন মুক্তা দত্ত। চোখের চিকিৎসা করানোর খরচ জোগাড় করতে পারেননি তিনি। বারবার দুয়ারে সরকার শিবিরে আবেদন জানিয়েও স্বাস্থ্যসাথী কার্ড হাতে পাননি বলে দাবি।
শেষমেশ গত বুধবার এলাকায় দলীয় কর্মসূচিতে যান তৃণমূল নেত্রী সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়। সায়ন্তিকাকে কাছে পেয়ে সমস্যার কথা বলেন মুক্তা দেবী। এরপরই শুরু হয় তোড়জোড়। তড়িঘড়ি ২৪ ঘণ্টার মধ্যে প্রশাসন মুক্তা দেবীর স্বাস্থ্যসাথী কার্ড তৈরী করে দেয়। এরপর গতকাল দুপুরে সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে খোদ বাঁকুড়া এক নম্বর ব্লকের বিডিওকে সঙ্গে নিয়ে হাজির হন মুক্তা দত্তর বাড়িতে। প্রশাসনের তরফে মুক্তা দত্তর হাতে তুলে দেওয়া হয় স্বাস্থ্যসাথী কার্ড। আর এতেই সমালোচনার ঝড় ওঠে।
বিরোধীদের দাবি, এই ঘটনাই প্রমাণ করছে প্রশাসনকে পকেটে নিয়ে ঘুরছেন তৃণমূল নেতা নেত্রীরা। বিরোধীদের আরও দাবি, সরকারি আর পাঁচটা প্রকল্পের মতোই ব্যর্থ হয়েছে দুয়ারে সরকার প্রকল্প। দুয়ারে সরকারের ব্যর্থতা মানতে নারাজ তৃণমূল নেত্রী সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়। উলটে তাঁর দাবি, এই ঘটনার সম্পূর্ণ দায় স্থানীয় বিজেপি বিধায়কের। প্রশাসনের দাবি, কোনও কারণে ওই বৃদ্ধার স্বাস্থ্যসাথী কার্ড আটকে ছিল। সমস্যার কথা শুনে দ্রুততার সঙ্গে তা সমাধান করা হয়েছে।