তৃণমূল তুষ্টিকরণের রাজনীতির মাধ্যমে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করছে দাবি বিজেপির
রাজীব মুখোপাধ্যায়, হাওড়া
‘রাম’-এর নামকে বদনাম করে সাম্প্রদায়িক উস্কানি দিচ্ছে বিজেপি। রামনবমীর পরবর্তী হিংসার বাতাবরণ নিয়ে বিজেপিকে দায়ী করলেন রাজ্যের সমবায় মন্ত্রী অরুপ রায়। তিনি বিজেপির বিরুদ্ধে সাম্প্রদায়িক রাজনীতি করার অভিযোগ করেন। পাশাপাশি তিনি দাবি করেন, ওই দিন পূর্ব পরিকল্পিতভাবে সাম্প্রদায়িক উস্কানি দেওয়ার কাজ করা হয়েছে। তিনি বলেন, রাজ্যে এখন রমজান মাস চলছে। মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষ সকাল থেকে সারাদিন না খেয়ে থাকেন।
এই নিদারুণ গরমে না খেয়ে তারা রোজা পালন করছেন। তার মধ্যে পূর্ব পরিকল্পনা মাফিক উদেশ্যপ্রণোদিতভাবে তাদের উপরে যে তান্ডব হয়েছে তা হাওড়ার মানুষ ভালোভাবে নেবে না বলেই দাবি করেন তিনি। সেই ঘটনা থেকে মানুষের দৃষ্টি ঘুরিয়ে দেওয়ার জন্য তারপরে রাস্তা অবরোধ করা হয়েছে। এরপর পুলিশের উপরে আক্রমন করেছে ও তাদের উপরে ইঁট বৃষ্টি করা হয়েছে। এই ঘটনা বাংলার মানুষ মেনে নেবে না ও রাজ্য সরকার কড়া হাতে মোকাবিলা করবে। তিনি দাবি করেন, হিংসা দিয়ে কোনো সমাধান সম্ভব নয়।
তিনি আরও বলেন, একসময় বামপন্থী সরকারের বিরুদ্ধে তারা আন্দোলন করেছেন। তবে তারা হিংসার পথে না গিয়ে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করে কমিউনিস্ট সরকারকে হারিয়েছিলেন। বিজেপি ক্ষমতা দখল করতে না পেরে বাংলার মানুষের থেকে প্রত্যাখ্যাত হয়ে রাজ্য জুড়ে একটা অশান্তি ও গন্ডগোলের বাতাবরণ তৈরি করতে চাইছে। তবে রাজ্য সরকার এর মোকাবিলা করবে। বিজেপি রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলা করতে না পেরে সাম্প্রদায়িক হিংসা ছড়ানোর চক্রান্ত করছে বলে মন্ত্রী অভিযোগ করেন।
মন্ত্রী বলেন, পশ্চিমবঙ্গে ধর্মের নামে রাজনীতি হয় না। বিজেপিকে কটাক্ষ করে তিনি বলেন, ‘রাম কা নাম বদনাম না করো’ বিজেপি রামের নামকে বদনাম করছে। যদিও মন্ত্রীর দাবিকে উড়িয়ে দিয়ে বিজেপির রাজ্য নেতা উমেশ রাই দাবি করেন, অতীতে বহু বছর এই রাজ্যে মুসলিম ও হিন্দুদের পরব একইসঙ্গে হয়েছে। এই রাজ্যের মানুষ স্বাক্ষী আছে হোলি ও রামজান, মহরম, দুর্গা মায়ের মূর্তি বিসর্জন একইসঙ্গে পালনের। কখনও কোনো সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট হয়নি আগে। কিন্তু তৃণমূল কংগ্রেসের মুসলিম তুষ্টিকরণের রাজনীতির জন্যই আজ মুসলিমরা হিন্দুদের শোভাযাত্রায় ইঁট ছুঁড়ছে। তিনি বলেন, রামনবমীর শোভাযাত্রায় বিজেপি ছিল না। হাওড়ার সনাতন ধর্মের বিশ্বাসীরা রামনবমীর শোভাযাত্রায় ছিল।
সেই শোভাযাত্রায় কোনো রাজনৈতিক রং ছিল না। তিনি দাবি করে বলেন, ওই শোভাযাত্রায় সনাতন ধর্মে বিশ্বাসী অনেক তৃণমূল সমর্থকরা ছিলেন। ওইদিনের শোভাযাত্রায় বিজেপি মুসলিমদের উদ্যেশ্যে ইঁট ছুঁড়েছে, মন্ত্রীর এই দাবি-কে নস্যাৎ করে উমেশ রাই বলেন, কয়েকশো ভিডিও রয়েছে, তাতে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে কারা ইঁট ছুঁড়েছে। তিনি অভিযোগ করে বলেন, এই কাণ্ডে হওয়া এফআইআর-এ যাদের নাম রয়েছে তাদেরকে এখনো গ্রেফতার করেনি হাওড়া সিটি পুলিশ। পুলিশের অনুমতি নিয়ে সেদিন রামনবমীর শোভাযাত্রা বের করা হয়েছিল। শোভাযাত্রায় থাকা মানুষদের সুরক্ষা দেওয়ার দায়িত্ব ছিল পুলিশের। তারা তাদের কর্তব্যে ব্যর্থ হয়েছে। উমেশ রাই মন্ত্রীকে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, হিন্দুরা একত্রিত হচ্ছে। আগামীদিনে হিন্দুরা এবং রাজ্যের অন্যান্য মানুষ তৃণমূলের মুসলিম তুষ্টিকরণের যোগ্য জবাব শাসকদল-কে দেবে।