বেপরোয়া মনোভাবই হয়তো এত দূর তুলে এনেছে তাঁকে। টিমের প্র্যাক্টিসে যাওয়ার সময় হাতে দামি ব্লুটুথ স্পিকার দেখা যায়। অনেক সময় দু’পায়ে দু’রকম মোজা পরে করেন প্র্যাক্টিস। রয় কানে দুলও। ব্যাটিংয়ের সেই ডোন্ট কেয়ার মনোভাব। এক ঝলক দেখলে ক্যারিবিয়ান ক্রিকেটার মনে হবে। বাংলার সেই ক্যারিবিয়ান ক্রিকেটার অভিষেক পোড়েল রঞ্জিতে করে ফেললেন প্রথম সেঞ্চুরি। বাঁ-হাতি মিডল অর্ডার ব্যাটার খাদের কিনারা থেকে তুলে ধরলেন টিমকে। টপ অর্ডার যখন ব্যর্থ, তখন অভিষেক সেঞ্চুরি করে ফেললেন। ছত্তীসগঢ়ের মতো টিমের বিরুদ্ধে কেন মন্থর ব্যাটিং করবে টিম? এই প্রশ্ন উঠে গিয়েছিল প্রথম দিনই। দ্বিতীয় দিন ইডেনে মেঘ কাটিয়ে দিলেন চন্দননগরের অভিষেক।
রঞ্জিতে দাদা-ভাই ক্রিকেটার নতুন নয়। বাংলাতেও দাদা-ভাই যুগ চলছে। ঈশান পোড়েল খেলছেন। ডানহাতি পেসারের জ্যেঠতুতো ভাই অভিষেক। ঈশানের সঙ্গে খেলেই চন্দননগর থেকে উঠে আসা। বছর দুয়েক আগে যুব বিশ্বকাপে স্ট্যান্ডবাই ছিলেন। তবে অনূর্ধ্ব ১৯ বিশ্বকাপ খেলা হয়নি। তাতেও কিন্তু কেরিয়ার গোছাতে অসুবিধা হয়নি অভিষেকের। মিডল অর্ডারে ব্যাট করার পাশাপাশি কিপিংও করেন। ঋদ্ধিমান বাংলা ছাড়ার আগে তরুণ ক্রিকেটারকেই দিয়ে গিয়েছিলেন নিজের গ্লাভস জোড়া। সেই গুরু দায়িত্ব সামলেছিলেন ভালো ভাবে। এ বার ব্যাটেও দিচ্ছেন ভরসা। প্রথম দিন ৪৭ রানে ছিলেন ক্রিজে। সঙ্গে ছিলেন দাদা অনুষ্টুপ মজুমদার। দ্বিতীয় দিন সকালে অনুষ্টুপ ৭১ করে ফিরলেও অভিষেককে থামানো যায়নি। সেঞ্চুরির করার পথে মেরেছেন ১১টা চার ও ১টা ছয়। গত বার আইপিএল খেলার সময় মহেন্দ্র সিং ধোনির টিপসও পেয়েছিলেন। যা কাজে লাগছে অভিষেকের।
অভিষেক গত মরসুমে নজরে পড়ে গিয়েছিলেন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের। চোট পাওয়া ঋষভ পন্থের বদলি হিসেবে খেলেওছিলেন আইপিএলে। কিন্তু নিজেকে সে ভাবে মেলে ধরতে পারেননি। তবে দিল্লি ক্যাপিটালসের হয়ে কিপিং করার সময় একটা অবিশ্বাস্য ক্যাচ ধরেছিলেন। যা এখনও চোখে লেগে রয়েছে আইপিএল ভক্তদের। এই অভিষেক যে নতুন করে নিজেকে তুলে ধরার প্রক্রিয়া শুরু করে দিয়েছেন, তা বোঝাই যাচ্ছে। ছত্তীসগঢ় টিম হিসেবে আহামরি নয়। তাদের বিরুদ্ধে বাংলার ব্যাটাররা কার্যত ব্যর্থ হলেও অভিষেক দেখালেন, কী ভাবে ব্যাটিং করতে হয়। সেই অর্থে আগ্রাসী ব্যাটার হলেও ধৈর্য দেখিয়েছেন সেঞ্চুরি পাওয়ার জন্য। এই ম্য়াচ থেকে বাংলার দরকার ৭ পয়েন্ট। অভিষেক প্রাথমিক ভাবে টিমকে এগিয়ে দেওয়ার কাজটা করে দিলেন।