বর্ষবরণ রাতে সঙ্গিনীকে সঙ্গে নিয়ে ভরপেট মদ্যপানের ব্যবস্থা এবং ‘কাপল নাইট’ উপভোগ করার আয়োজন করছে কয়েকটি সংস্থা। সোশ্যাল মিডিয়ায় এমন প্রচারকে ঘিরে রীতিমতো ঝড় উঠে গিয়েছে। কোথাও ৩ হাজার টাকার টিকিট, আবার কোথাও ৫ হাজার থেকে ৮ হাজার টাকা পর্যন্ত প্রবেশ মূল্য করা হয়েছে। মূলত ইংরেজবাজার এবং পুরাতন মালদার এলাকাতেই বর্ষবরণের উৎসবে মদ এবং সঙ্গিনীর নিয়ে আনন্দ করার প্রচার ঘুরপাক খাচ্ছে।
সোশ্যাল মিডিয়ায় যাকে ঘিরে একদিকে যেমন সমালোচনা ঝড় উঠেছে, অন্যদিকে উৎফুল্ল কিছু মানুষ চড়া দামে টিকিট কেটে ৩১ ডিসেম্বর রাতের এই পার্টি নাইট বুক করে ফেলেছেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচার হওয়ার বর্ষবরণ রাতের উৎসবের চাহিদা এতটাই যে ইতিমধ্যে মধ্যেই টিকিট শেষ হয়ে গিয়েছে। একইরকম ভাবে ইংরেজবাজার থেকে পুরাতন মালদার কয়েকটি হোটেল কম রেস্তোরাঁ নিউ ইয়ার পার্টির আয়োজন করা হয়েছে। যদিও ৩১ ডিসেম্বর বর্ষবরণ উৎসবের রাতে নিরাপত্তা জোরদার করতে পুলিশ ও প্রশাসন এখন থেকেই কোমর কষেছে। অবাঞ্ছিত কোথাও কোনও কিছু নজরে আসলেই আটক অথবা গ্রেপ্তার করা হতে পারে বলেও জেলা পুলিশ জানিয়ে দিয়েছে। এদিকে সোশ্যাল মিডিয়ায় হাতেগোনা কয়েকটি সংস্থা নিজেদের বর্ষবরণ উৎসবের প্রচার শুরু করে ফেলেছে। যেখানে পরিষ্কারভাবে লেখা আছে সঙ্গিনী নিয়ে প্রবেশ করতে গেলে ন্যূনতম ৩ হাজার টাকার টিকিট কাটতে হবে। এছাড়াও সর্বাধিক ৮ হাজার টাকা পর্যন্ত রয়েছে প্রবেশ মূল্য। কি হবে সেই সব পার্টি নাইটে! উল্লেখ করা হয়েছে, রাতভর উৎসব, গানের আসর এবং আনলিমিটেড ড্রিংকসের ব্যবস্থা। এর সঙ্গে নৈশ ভোজ সবমিলিয়ে জমজমাট ব্যবস্থা করতে চলেছে কয়েকটি সংস্থা। যা ইতিমধ্যে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে গিয়েছে।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, এ বছর ৩১ ডিসেম্বর বর্ষবরণের জন্য মাত্র দুটি ক্লাব ও সংস্থাকে একদিনের জন্য পানশালার পাওয়ার আবেদন করেছে। তার মধ্যে ইংরেজবাজারের একটি নামজাদা ক্লাব রয়েছে এবং পুরাতন মালদা থানার নারায়ণপুর এলাকার একটি নামী দামি রেস্তোরাঁ রয়েছে। এর বাইরে বর্ষবরণের রাতে একদিনের পানশালা চালাবার জন্য কোনওরকম আবেদন পড়েনি বলে জানিয়েছে জেলা আবগারি দপ্তর। কিন্তু অভিযোগ উঠেছে ৩১ ডিসেম্বর বর্ষবরণের রাতে একাধিক জায়গায় ড্রিংকস পার্টির আয়োজন করা হয়েছে। আর এতেই কাল ঘাম ছুটেছে জেলা পুলিশ ও প্রশাসনের। পরিস্থিতির তদারকি করতে এখন থেকেই রীতিমতো নজরদারি শুরু করেছে জেলা পুলিশের পদস্থ কর্তারা। ইংরেজবাজার শহরের সুকান্ত মোড় থেকে গাবগাছি পর্যন্ত একাধিক পানশালাযুক্ত হোটেল রেস্তোরা রয়েছে। এছাড়াও শহরের অতুল মার্কেট, কে.জে সান্যাল রোড, স্টেশন রোড সহ আরও বেশ কিছু জায়গাতে রয়েছে হোটেল, রেস্তোরাঁ এবং পানশালা। ৩১ ডিসেম্বর রাতে সেই সব জায়গায় যে বিনোদন হবে তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। কিন্তু বিনোদন করার নামে কোথাও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটতে গেলে তার দায়ভার কে নিবে, সে নিয়েও পুলিশের সামনে প্রশ্ন তুলে দিয়েছে।
যদিও এ ব্যাপারে জেলা পুলিশের কোনো কর্তারা মন্তব্য করতে চাননি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জেলা প্রশাসনের এক পদস্থ কর্তা জানিয়েছেন, বর্ষবরণের রাতের অনেক জায়গায় উৎসব চলবে। যদিও শহর জুড়ে সিসি ক্যামেরায় নজরদারি চালানো হবে। রাত বাড়তেই বাইকারদের তাণ্ডব, তারকেশ্বরে সাউন্ড অথবা গভীর রাত পর্যন্ত রেস্তোরাঁ পার্টি কোনওভাবেই বরদাস্ত করা হবে না। বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে এখন থেকে দেখতে শুরু করেছে জেলা পুলিশ ও প্রশাসনের পদস্থ কর্তারা।