নিজস্ব প্রতিবেদন, বাঁকুড়া: ‘দল মুমূর্ষু অবস্থায় রয়েছে। সঙ্কটজনক অবস্থা। প্রয়োজনে হাতে পায়ে ধরে ক্ষমা চাইব। তবু ঐক্যবদ্ধ ভাবে লড়াই করুন।’ দলের কর্মীদের সঙ্গে বৈঠকে এমন বার্তা দিয়ে বিতর্কে জড়ালেন বাঁকুড়া লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী অরূপ চক্রবর্তী। ঝুলি থেকে আসল কথাটা বলে ফেলেছেন। লড়াইয়ের আগেই হার স্বীকার করে নিচ্ছেন কটাক্ষ বিজেপি প্রার্থী সুভাষ সরকারের।
গত গ্রাম পঞ্চায়েত নির্বাচনে বাঁকুড়া জেলায় শাসকদল তৃণমূলকে গোষ্ঠীদ্ব¨েµ জর্জরিত হতে হয়েছিল বলে দাবি। আরও দাবি, বহু ক্ষেত্রে গোঁজ প্রার্থী দিয়ে আবার কোথাও সরাসরি বিরোধী দলে গিয়ে বিক্ষুব্ধরা বিপাকে ফেলেছিল তৃণমূলকে। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় সহ শীর্ষ নেতৃত্বের বারংবার হুঁশিয়ারি সত্ত্বেও সেই গোষ্ঠীদ্ব¨µ এড়াতে পারেনি তৃণমূল। পঞ্চায়েত নির্বাচনের ফল ঘোষণার পর পঞ্চায়েত গঠনের প্রয়োজনে বহু ক্ষেত্রে সেই বিক্ষুব্ধদের ঘরে ফেরাতে বাধ্য হয় তৃণমূল। এবার লোকসভা নির্বাচনের মুখে সেই বিক্ষুব্ধদের জন্য দরজা হাট করে খুলে দিল তৃণমূল। শুধু বিক্ষুব্ধদের দলে আহ্বান জানিয়ে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে ঐক্যবদ্ধ ভাবে লড়াইয়ের ডাক দিয়েছে তাই নয়, প্রয়োজনে বিক্ষুব্ধ ও অভিমানীদের পায়ে ধরে দলে ফেরানোর বার্তাও দিয়ে রাখল তৃণমূল।
বাঁকুড়া লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী তথা তৃণমূলের বাঁকুড়া সাংগঠনিক জেলার সভাপতি অরূপ চক্রবর্তী বুধবার বাঁকুড়ার তৃণমূল ভবনে ২ নম্বর ব্লকের কর্মীদের সঙ্গে বৈঠকে বলেন, ‘ঐক্যবদ্ধ ভাবে দল করতে হবে। যাঁরা তা পারবেন না, তাঁরা দয়া করে দল ছেড়ে চলে যান। দলের এই মুমূর্ষু অবস্থায় আমি দলে বিভাজন হতে দেব না। প্রয়োজনে পায়ে ধরে নেব।’ এরপরই দলের কর্মীদের প্রতি অরূপ চক্রবর্তীর বার্তা, ‘এখন একটা সঙ্কট। যুদ্ধ শুরু হচ্ছে। এই সময় কে বড় কে ছোট তা দেখার সময় নয়। মনোমালিন্য, মান অভিমান দূরে ঠেলে সকলে একসঙ্গে লড়াই করুন।’
নিজের বক্তব্যের সমর্থনে অরূপ চক্রবর্তীর দাবি, ‘গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে রাগ অভিমান করে অনেকেই বিরোধী দলে চলে গিয়েছিলেন। তাঁরা আমাদের সম্পদ। কেউ দোষ করে থাকলে তিনি পায়ে ধরে ক্ষমা চেয়ে নেবেন। কিন্তু তাঁদের ফিরিয়ে এনে ঐক্যবদ্ধ লড়াইয়ের ডাক দেওয়া হয়েছে।’ অরূপ চক্রবর্তীর এই মন্তব্যে হাতে অস্ত্র পেয়েছে বিজেপি। বাঁকুড়া লোকসভার বিজেপি প্রার্থী সুভাষ সরকারের কটাক্ষ, অরূপ চক্রবর্তী আসলে তৃণমূলের আসল অবস্থাটাই বলে ফেলেছেন। একথা বলার অর্থ লড়াইয়ের আগেই তিনি হার স্বীকার করে নিয়েছেন।