হাওড়া : সম্প্রতি রাজ্যে কয়লা, বালি ও জমি চুরির ঘটনা প্রকাশ্যে এলে তা নিয়ে রাজনৈতিক বিতর্ক চরমে উঠেছে। এরই মধ্যে আরেকটি চুরির ঘটনা প্রকাশ্যে এলো। আস্ত জলাশয় বুজিয়ে তার উপরে তৈরি হচ্ছে আবাসন। অভিযোগ উঠেছে, স্থানীয় বিএলআরও অফিসের বিরুদ্ধে। সবকিছু জানা সত্ত্বেও এখনো কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি সরকারি অফিস থেকে। এই বিষয়ে লিখিত অভিযোগ জমা করা হয় ভূমি কর্মাদক্ষ মজিজুর রহমান-এর তরফ থেকে। তবু এখনও হেলদোল নেই ভূমি সংস্কার দফতরের। স্থানীয় তৃণমূলের নেতাদের মদত দেওয়ার অভিযোগ ওঠে আসছে ওই এলাকারই তৃণমূলের অন্দর থেকে।
এই নির্মীয়মান বহুতল তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় যে বৈধ অনুমতি নেওয়ার কথা তাও নেওয়া হয়নি বলে সূত্রের খবর। স্থানীয় বাসিন্দারা অভিযোগ করেন, এখানে জলাভূমি ছিল। বৃষ্টিতে এখানে জল দাঁড়িয়ে যায়। সেই জল নামতে অনেকদিন সময় লাগে। অভিযোগ উঠেছে যে রাস্তা দিয়ে এম্বুলেন্স ঢুকতে পারে না, সেরকম রাস্তার ধারে কিভাবে চারতলা বাড়ি তৈরি হতে পারে! এই বিষয়ে সাঁকরাইল পঞ্চায়েত সমিতির ভূমি কর্মাদক্ষ মজিজুর রহমান মোল্লা জানান, তার কাছে ওই জমি সংক্রান্ত একটি অভিযোগপত্র আসে। তার ভিত্তিতে বিএলআরও অফিসে তিনি জমির তথ্য অনুসন্ধান করে দেখেন ওই জমি জলাভূমি হিসাবেই চিহ্নিত রয়েছে। যেহেতু জমির শ্রেনী পরিবর্তন হয়নি তাই ওই বাড়ি নির্মাণের প্ল্যান পাশ হবে না। তিনি বলেন, আরগড়ি ও জঙ্গলপুর মৌজাতে বৃষ্টিতে জল জমার সমস্যা তৈরি হচ্ছে। তাতে এভাবে জলাভূমি বুঝিয়ে দিলে সমস্যা আরও বাড়বে। তিনি আরও দাবি করেন, স্থানীয় তৃণমূলের কিছু কর্মী এই ধরণের কাজের পেছনে মদত দিয়ে পার্টির বদনাম করছে। এই বিষয়ে আইন মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে তিনি জানান।
বাড়ি নির্মাণ করা ব্যক্তিকে ফোন করে বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি বিষয়টি এড়িয়ে গিয়েছেন বলে দাবি করেন মজিজুর রহমান মোল্লা। স্থানীয় বাসিন্দারাও একই অভিযোগ করেছেন এই নির্মীয়মান বহুতল নিয়ে। স্থানীয় বাসিন্দা বিশ্বজিৎ মান্না বলেন, ওই জমিতে জলাশয় ছিল। অনেক বছর আগে তার দাদু ওখানে চাষের কাজ করতো। জমিটি অনেকদিন আগে বিক্রি হয়েছিল। প্রথমে দোতলা বাড়ি তৈরির কথা থাকলেও ক্রমেই তা তিনতলা ও পরে চারতলা বাড়ি তৈরি হয়। রাস্তা এখানে এতটাই শুরু যে এম্বুলেন্স ঢুকতে পারে না। এতে শাসকদলের নাম না করলেও তিনি স্পষ্ট বলেন, এই ঘটনার পেছনে উপরতলার লোকেদের হাত আছে। এই বেআইনি নির্মাণে অভিযুক্ত অমলেশ পাত্রকে ফোন করা হলে তিনি পরে যোগাযোগ করবেন বলে আর ফোন করেন নি। তবে এইভাবে বেআইনি উপায়ে বহুতল নির্মাণের ক্ষেত্রে প্রশাসনিকস্তরে কি ব্যবস্থা নেওয়া হয় তার দিকেই তাকিয়ে আছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।